Thank you for trying Sticky AMP!!

জাফলংয়ে পাথর ও বালু তোলা

মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে একই স্থানে দুটি মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হলো। একটি অবৈধ পাথর ও বালু ব্যবসা বন্ধের দাবিতে। স্থানীয় পরিবেশবাদীরা ৭ জুলাই জাফলংয়ে এ মানববন্ধন করেন। সেই মানববন্ধন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীবিশেষের বিরুদ্ধে ছিল না। ছিল দেশের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র জাফলংয়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রক্ষার দাবিতে। ২০১৫ সালে জাফলংকে পরিবেশ ও প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করে পাথর ও বালু উত্তোলন বন্ধ রাখা হয়।

কিন্তু এরপরও পাথর ও বালু উত্তোলন পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। সম্প্রতি জাফলং সেতুর নিচ দিয়ে অবৈধভাবে বালু-পাথর তোলা হচ্ছিল। এ প্রেক্ষাপটে ১ জুলাই প্রথম আলোয় ‘দেখউকা কারবার, কী মধু’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন ছাপা হলে স্থানীয় প্রশাসন ইসিএর কমিটির সঙ্গে বৈঠক করে বালু ও পাথর উত্তোলন পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়।

এর প্রতিবাদে বালু ও পাথর উত্তোলনে নিয়োজিত ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের একাংশ সেই সেতুর ওপরই মানববন্ধন করেন। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দুবার। তাঁদের দাবি, পাথর ও বালু উত্তোলন বন্ধ থাকায় শ্রমিকেরা বেকার হয়ে পড়েছেন। অতএব আবার সেখানে বালু-পাথর উত্তোলনের অনুমতি দিতে হবে। স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, বালু ও পাথর ব্যবসায়ীরাই তাঁদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য শ্রমিকদের উসকে দিয়েছেন। এখানে শ্রমিকদের কাজ করার বিকল্প ব্যবস্থা আছে।

জাফলংকে গোয়াইনঘাট উপজেলা সদরের সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপনে জাফলং সেতু নির্মাণ করা হয়। ২০১৮ সালের ১৫ এপ্রিল জাফলং সেতু চালু হয়। ফলে জাফলং থেকে গোয়াইনঘাট উপজেলা সদরে যাতায়াতে প্রায় ১৮ কিলোমিটার দূরত্ব কমে যায়। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এখানে প্রচুর পর্যটক আসেন।

প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নয়, উচ্চ আদালতের নির্দেশনায় জাফলংয়ে বালু ও পাথর উত্তোলন বন্ধ আছে। অতএব স্থানীয় প্রশাসনের কিছু করণীয় নেই। তারা আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করেছে মাত্র।

জাফলংকে যেহেতু পরিবেশ ও প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা করা হয়েছে, সেহেতু সেখানকার পরিবেশের ক্ষতি হয়, এমন কিছু করা চলবে না। পর্যটন এলাকার বাইরে প্রাকৃতিক উপায়ে পাথর তোলা ও ভাঙা যেতে পারে। আইনে বলা আছে, আবাসিক এলাকা ও মহাসড়কের ৫০০ মিটারের মধ্যে পাথর ভাঙা নিষিদ্ধ।

পর্যটনকেন্দ্র জাফলংয়ের প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংস করে পাথর উত্তোলন ও ভাঙা বন্ধ করা হোক।