Thank you for trying Sticky AMP!!

ঠিকাদারপ্রেমী চসিক

সম্পাদকীয়

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন এক অদ্ভুত যুক্তি দিয়েছেন। নির্মাণসামগ্রীর দাম বেড়েছে, এই অজুহাতে অন্য প্রকল্প থেকে ঠিকাদারকে আট কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। তিনি এখন মেয়র পদে নেই। ফলে টাকার বোঝা এসে পড়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) ওপর। রোববার প্রথম আলোর খবর থেকে এ তথ্য জানা যায়।

তবে চসিকের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের দায়িত্বহীনতার এটাই একমাত্র উদাহরণ নয়। ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ পোর্ট কানেক্টিং রোডের কাজ পেয়েছিল মেসার্স রানা বিল্ডার্স ও মেসার্স রানা বিল্ডার্স-সালেহ আহমদ নামের দুটি প্রতিষ্ঠান। তারা এই শর্তে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে কাজ করেছে যে সিটি করপোরেশনের বিলের চেক সরাসরি ব্যাংকের হিসাবে জমা দেওয়া হবে। অথচ সিটি করপোরেশনের একশ্রেণির কর্মকর্তার যোগসাজশে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দুটি চেক নিজেদের নামে নিয়ে গেছে। ব্যাংক বারবার চিঠি দিয়েও চসিকের কাছ থেকে কোনো জবাব পায়নি। অন্যদিকে ঠিকাদারও লাপাত্তা।

ঠিকাদার মাইনুদ্দিনকে কাজ দেওয়া হয়েছিল মহেশ খালের দুই পাশে বাঁধ ও সড়ক নির্মাণের। প্রকল্পটি ছিল জাইকার অর্থায়নে। ব্যয় বরাদ্দ ছিল ৪১ কোটি টাকা। নির্মাণসামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়ায় দয়াপরবশ হয়ে সাবেক মেয়র সেই ঠিকাদারকে সিটি করপোরেশনের নিজস্ব তহবিল থেকে আট কোটি টাকা দিয়েছেন। ঠিকাদার কাজ শেষ করতে পারেননি। কাজ শেষ না করলে জাইকা বিলও দেবে না। ফলে সিটি করপোরেশনের তহবিল থেকে আট কোটি টাকা গচ্চা গেল।

সাবেক সিটি মেয়র নির্মাণসামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়ার কথা বলেছেন। কিন্তু তিনি বলেননি কোনো ঠিকাদারই সময়মতো কাজ শেষ করতে পারেন না বা করেন না। ঠিকাদার মইনুদ্দিনের কাজ শেষ করার কথা ছিল ২০১৯ সালের জুনে। এখন ২০২১ সালের এপ্রিল মাস। প্রায় দুই বছর বেশি সময় নিয়েছেন। তারপরও প্রকল্পের কাজ ৩০ শতাংশ বাকি।

ঠিকাদারদের অভ্যাসই হলো সময়মতো কাজ শেষ না করা। কেননা, সময়মতো কাজ শেষ করলে নানা অজুহাতে বিল বাড়িয়ে নেওয়া যায় না। আর এ ক্ষেত্রে দরদি হাত বাড়িয়ে দেন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অসাধু কর্মকর্তারা।

দুই প্রকল্পে যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৩৩ কোটি টাকা অডিট আপত্তি এসেছে, তা গুরুতর। চসিকের বর্তমান মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, কোনো অনিয়মকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। এটি নিছক কথার কথা নয়, সত্যি সত্যি তিনি চসিকে শুদ্ধি অভিযান চালাবেন, ভবিষ্যতেই তার প্রমাণ পাওয়া যাবে। আমরা আশা করব, মেয়র তদন্তপূর্বক দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবেন।