Thank you for trying Sticky AMP!!

ঢাকার স্থগিত নির্বাচন

সরকারকে সন্দেহ করার কারণ অনেক, কিন্তু সেই ক্ষেত্রে যাদের ভারসাম্য রাখার কথা, তাদের প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকার বিষয়টি খুবই দুর্ভাগ্যজনক। রাজনৈতিক সরকারগুলোর কোনো উদ্দেশ্যমূলক তৎপরতার বিরুদ্ধে জনস্বার্থ সুরক্ষা দিতে স্বাধীন প্রাতিষ্ঠানিক প্রহরা কার্যত কতটা ভঙ্গুর, ঢাকার নির্বাচন স্থগিত হওয়ার মধ্য দিয়ে তা আবারও পরিষ্কার হলো। অথচ ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব অবিশ্বাসযোগ্যভাবে দাবি করছেন যে তাঁরা আইনি দিকগুলো খতিয়ে দেখে সন্তুষ্ট ছিলেন। কিন্তু নির্বাচন নিয়ে রিট করার খবর জেনেও সংবিধানের ১২৫ (গ) অনুচ্ছেদে স্বীকৃত ‘যুক্তিসঙ্গত নোটিশ ও শুনানি’ নিশ্চিত করতে আমরা তাদের কোনো আগ্রহ দেখিনি। এমনকি হাইকোর্টের আদেশ তাৎক্ষণিক স্থগিত করতে সিএমপি (সিভিল মিসসিলিনিয়াস পিটিশন) করা থেকেও তারা বিরত থেকেছে। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীলদের যোগ্যতা ও কর্মদক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠাই স্বাভাবিক।

যে প্রক্রিয়ায় নির্বাচনটি স্থগিত হলো, তাতে শুধু যে ঢাকার নির্বাচনে অনিশ্চয়তা তৈরি হলো তা-ই নয়, নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা, বিশ্বাসযোগ্যতা এমনকি নিজেদের সরকারি দলের স্বার্থের বাইরে রাখার সামর্থ্যের দিকটিও যথেষ্ট প্রশ্নবিদ্ধ হলো। এটা পরিহাসের যে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ উভয়ে ইসিকে বিশ্বাসযোগ্যভাবে আসামির কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। একদিকে বিএনপির মহাসচিবের মুখে আমরা শুনতে পাই, সীমানা নির্ধারণ না করে তফসিল ঘোষণা আইনসংগত নয়। অন্যদিকে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ‘ওই কাজ ইসির’, যদিও কাজটা তাঁর। আর সীমানা নির্ধারণ একটি চলমান প্রক্রিয়া।

লক্ষণীয়, সরকার ও ইসির মধ্যে কোনো বাদানুবাদ নেই। সংবিধান বলছে তফসিল ঘোষণার পরে ইসিকে ‘যুক্তিসংগত নোটিশ ও শুনানির সুযোগ’ না দিয়ে আদালত কোনো আদেশ দেবেন না। কিন্তু ইসির আইনজীবী প্যানেলের যে কনিষ্ঠ সদস্য হাইকোর্টের শুনানিতে ইসির অগোচরে ‘হঠাৎ’ অংশ নিয়েছিলেন, তিনিও স্বীকার করেছেন, ‘অনধিক পঁাচ মিনিট’ তিনি শুনানিতে বক্তব্য রেখেছিলেন। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল দাবি করেছেন, রিটকারী ইসিকে যে ‘দরখাস্তের কপি’ দিয়েছিলেন, সেটাই হলো আদালতের দেওয়া ‘যুক্তিসঙ্গত নোটিশ’, যদিও ইসি তারও প্রাপ্তিস্বীকার করেনি। এটা সত্য হলে এই প্রক্রিয়াটির সাংবিধানিক শুদ্ধতা প্রশ্নের ঊর্ধ্বে থাকে না।

রংপুরে সিটি নির্বাচনের জন্য আমরা ইসিকে ধন্যবাদ দিয়েছি, কিন্তু এ ক্ষেত্রে তিরস্কার তাদের প্রাপ্য, যদিও এটা আরেকবার মনে করিয়ে দিল যে নির্বাহী বিভাগই কার্যত সবকিছুর নিয়ন্ত্রক। ‘সবকিছুতেই সরকারের যোগসাজশের’ যে সন্দেহ, তা দূর করতে রুলগুলোর দ্রুত উত্তর দিতে সরকার ও ইসির যৌথ বিশ্বস্ত পদক্ষেপ প্রত্যাশিত।