Thank you for trying Sticky AMP!!

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবাদ

সিনেটের মূল কাজ উপাচার্য প্যানেল ও বাজেট পাস করানো। সুতরাং, ছাত্র সংসদের পাঁচ প্রতিনিধির প্রশ্নটিকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে সিনেটের কার্যক্রম চলা, বাজেট পাস করা, উপাচার্যের প্যানেল নির্বাচন এবং এ প্রক্রিয়ায় উপাচার্যরা যেভাবে মেয়াদ পূরণ করছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। এটা নৈতিকতার সঙ্গে মোটেও সংগতিপূর্ণ নয়। গত সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট নির্বাচনকালে একদল ছাত্র মুখে কালো কাপড় বেঁধে প্রতিবাদ করতে গেলে তাঁরা ভোটদানে ব্যস্ত শিক্ষকদের সহানুভূতি অর্জন করতেও বিফল হন। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় স্বায়ত্তশাসনসহ সিনেটে শিক্ষক নির্বাচনব্যবস্থা মূলত ছাত্রদেরই আন্দোলনের ফসল। স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে ছাত্ররা সিনেটে তাঁদের আইনস্বীকৃত অধিকার আদায় করতে গিয়ে ‘ধাক্কাধাক্কির’ কবলে পড়েছেন।

গত ৪ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর চ্যান্সেলর রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে ডাকসুর নির্বাচন না হলে ‘ভবিষ্যতে নেতৃত্বে শূন্যতা সৃষ্টির’ বিষয়ে সতর্ক করেন। কিন্তু আমরা বিস্মিত যে সরকার বা বিশ্ববিদ্যালয় কারও দৃষ্টিভঙ্গিতেই কোনো পরিবর্তন নেই। উপরন্তু হাইকোর্ট বিভাগ ১৯ মার্চ ডাকসু নির্বাচন করতে নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিয়ে কেন আদেশ জারি করা হবে না মর্মে রুল জারি করলেও সরকার এখনো এর উত্তর দেয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও এ ব্যাপারে নীরব থাকছে। আর সোমবার ছাত্রদের তরফে ছাত্র সংসদবিহীন সিনেটের বৈধতার প্রশ্ন তুললে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বলেছেন, ‘তারা ছাত্র সংসদের দাবি তুলতে পারে, তবে সিনেট-সম্পর্কিত তাদের মন্তব্য বেআইনি ও বেমানান।’

সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের এমন মনোভাব অগ্রহণযোগ্য। সিনেট ও শিক্ষক সমিতির মতো হরেক রকম নির্বাচন ক্যাম্পাসে হয়, অথচ ছাত্র সংসদের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন দলে বিভক্ত শিক্ষকদের মধ্যে আশ্চর্য রকম ঐক্য দেখা যায়। বিরোধপূর্ণ জাতীয় রাজনীতিতেও আমরা দুর্ভাগ্যজনকভাবে একই ঐক্য লক্ষ করি। এত আন্দোলনের মধ্য দিয়ে নব্বইয়ের পর গণতন্ত্রের নতুন যাত্রা শুরু হলো অথচ এরপর সব সরকারই বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদ নির্বাচন দেওয়া থেকে বিরত থেকেছে।

আমরা আশা করব, এ বিষয়ে রাষ্ট্রপতির মন্তব্য এবং হাইকোর্টের রুল বিবেচনায় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাত্র সংসদ নির্বাচনে উদ্যোগী হবে।