Thank you for trying Sticky AMP!!

তুরাগের জমি দখলের খেলা

বাংলাদেশে যে অভূতপূর্ব কায়দায় এবং বিস্তৃত পরিসরে জায়গা দখল চলছে, তার মর্মান্তিক শিকার নদ-নদীগুলো। ঢাকার নদ-নদী এর প্রবল শিকার। টঙ্গীর তুরাগ নদের অবস্থা এই দিক থেকে শোচনীয়। টঙ্গী থেকে আশুলিয়া হয়ে গাবতলী-আমিনবাজারে এসব দখল, নদীর জায়গার অবৈধ ও অপব্যবহারের আকছার নজির দেখা যায়। এরই সর্বশেষ দৃষ্টান্ত হলো টঙ্গী সেতুর পশ্চিম পাড়ে কিছু এলাকা। সেখানে দিব্যি বিরাট মাছের আড়ত ও বাজার বসেছে, নিয়মিত সেই জায়গার ভাড়া তোলা হচ্ছে। আর কাজটা করছেন স্থানীয় এক নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর।

নদের জায়গা উদ্ধারে সাড়ে ছয় মাস আগে টঙ্গী সেতুর পশ্চিম পাশে মাছের আড়ত উচ্ছেদ করা হয়েছিল। সেবার বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ প্রায় ৭০০ অবৈধ দোকান ভেঙে প্রায় তিন একর জায়গা উদ্ধার করে। সেবারের মতো এবারও সেখানে সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলরের অনুসারীরা আবার মাছের আড়ত বসান। তবে এবারের কৌশলটি হলো অস্থায়ী কাঠামো তৈরি করে দৈনিক ভিত্তিতে ভাড়া দেওয়া। প্রথম আলোর শনিবারের সংশ্লিষ্ট খবর থেকে জানা যায়, তুরাগের জায়গা দখল করে যে শত শত দোকান তোলা হয়েছে। প্রতিটি দোকান থেকে দৈনিক ২০০ থেকে ৫০০ টাকা ভাড়া তোলা হয়।

 কাউন্সিলরের অনুসারীরাই মূলত সেখানে দোকান বসান এবং কাউন্সিলরের লোকেরাই তঁাদের থেকে ভাড়া তোলেন। আগেরবার ৭০০টি দোকান উচ্ছেদ করা হয়। আর এবার দোকান বসেছে আগের চেয়েও বেশি।

 দেখা যায়, উচ্ছেদ ও পুনঃপ্রতিষ্ঠার খেলায় একসময় নদের জায়গা আরও ছোট হয়, কিছু জমি বেহাত হয়ে যায়। গত ডিসেম্বরে যদি নদের জায়গা উদ্ধার করা হলোই, তাহলে সাড়ে ছয় মাসেও কেন জায়গাটি স্থায়ী ও মুক্তভাবে সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া হলো না?

ঢাকার চারপাশের নদ-নদীর তীরে স্থায়ী সীমানা খুঁটি বসানো, জেটি নির্মাণসহ আনুষঙ্গিক কাজের জন্য ৮৪৮ কোটি টাকার একটি প্রকল্প চলমান আছে। এর আগে নদীতীরের সৌন্দর্যবর্ধনের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছিল। ঢাকা যেখানে বসবাসের অযোগ্য নগরীতে পরিণত হয়েছে, ঢাকার জীবন যেখানে জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি; সেখানে নদীই হতে পারে সজীবতা ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশের চাবিকাঠি। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তো দূরের কথা, বর্তমানের বাসিন্দাদের জন্যই ঢাকা ও এর আশপাশের শহরগুলোর পরিবেশ অসহনীয় হয়ে উঠছে। দখলদারি থেকে নদের জায়গা উদ্ধার করে নৌপরিবহন এবং স্বাস্থ্যকর বিনোদনের পরিসর বাড়ানো তাই জরুরি।