Thank you for trying Sticky AMP!!

দুই ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকার-সমর্থক ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের ১০টি গ্রুপ আছে বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর এসেছে। আবার এসব গ্রুপের নেপথ্যে চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের কোনো না কোনো প্রভাবশালী নেতা আছেন বলে জানা গেছে। তাঁরা সম্ভবত এক ছাত্রলীগের মধ্যে শত ফুল ফোটার নীতিতে বিশ্বাসী। কিন্তু সেই শত ফুলের বিকাশ যখন সাধারণ শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন বিপন্ন করে, তখন আমরা উদ্বিগ্ন না হয়ে পারি না।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরও জানা গেছে, গত শনিবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের যে দুই গ্রুপ সংঘাতে লিপ্ত হয়েছে, তারা শিক্ষা উপমন্ত্রীর অনুসারী। এদের এক গ্রুপ ‘বিজয়’ এবং অন্য গ্রুপ ‘চুজ ফ্রেন্ডস উইথ ফেয়ার’ (সিএফডব্লিউএফ)। উপমন্ত্রী দুই গ্রুপকে এক হয়ে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। আর তারা সেই পরামর্শ প্রতিপালন করতে গিয়ে প্রথমে কথা-কাটাকাটি, পরে মারামারিতে লিপ্ত হয়। যাতে পাঁচজন শিক্ষার্থী আহত হওয়া ছাড়াও এক দিনের জন্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শাটল ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল।

ছাত্রলীগে এ রকম ‘ঐক্যের মহড়া’ অব্যাহত আছে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও। একই দিন নোয়াখালী প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়েও ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যকার সংঘর্ষে একটি হলের প্রাধ্যক্ষসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন। ছাত্রলীগের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মীর সামনে একজন কনিষ্ঠ কর্মীর সিগারেট খাওয়া নিয়ে বিরোধের উৎপত্তি, যা শেষ পর্যন্ত বড় সংঘর্ষে রূপ নেয়। ছাত্রলীগের কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র ছাত্রদলের প্রতিটি কক্ষ, বেসিন ভাঙচুর করেছে। ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ হল বন্ধ ঘোষণা করে এবং ছাত্রদের হল ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। ওই হলে ছয় শতাধিক শিক্ষার্থী থাকলেও বেশির ভাগের বৈধ কাগজপত্র ছিল না। তাঁরা ছাত্রলীগের ‘বড় ভাইয়ের’ অনুমতি নিয়ে থাকতেন।

নোয়াখালী প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে ঘিরে যে দুটি গ্রুপ তৈরি হয়েছে, তাদের নানা আবদার পূরণ করতেন সাবেক উপাচার্য। নতুন উপাচার্য এসে সবকিছু নিয়মনীতি অনুযায়ী চলার ঘোষণা দেওয়ার পর ছাত্রলীগের দুই গ্রুপ নিজেদের শক্তি প্রদর্শনের সুযোগ খুঁজতে থাকে। শনিবার রাতের সংঘর্ষ ছিল তারই মহড়ামাত্র। এর মাধ্যমে তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বুঝিয়ে দিতে চায় যে প্রশাসনকে ছাত্রলীগের আবদার মেনে চলতে হবে।

কিন্তু ছাত্রলীগের শক্তি প্রদর্শন বা মহড়ার কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীরা কেন দুর্ভোগ পোহাবেন? কেনই-বা তাঁরা হলের বাইরে থাকবেন? 

সংঘর্ষের কারণ অনুসন্ধানে নোয়াখালী প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সাত সদস্যের কমিটি গঠন করলেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নির্বিকার। এর আগেও সেখানে ছাত্রলীগের সংঘর্ষে একাধিক শিক্ষার্থী মারা গেলেও তার বিচার হয়নি। যাঁরা আবাসিক হলে ভাঙচুর চালিয়েছেন, শিক্ষকদের ক্যাম্পাসে আসার পথ রুদ্ধ করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।