Thank you for trying Sticky AMP!!

দ্বিগুণ ভাড়া, দ্বিগুণ যাত্রী

ঈদুল আজহার আগে যখন গণপরিবহন তথা বাস-মিনিবাস চালু করা হয়, তখন বেশ কিছু শর্ত আরোপ করা হয়েছিল বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে। এর মধ্যে ছিল করোনার সংক্রমণ থেকে রেহাই পেতে প্রত্যেক যাত্রী ও পরিবহনকর্মীর মাস্ক ও স্যানিটাইজার ব্যবহার বাধ্যতামূলক। বাস-মিনিবাসে এক সিট খালি রেখে যাত্রী বসানো। সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে বিআরটিএ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। 

এসব সিদ্ধান্তের আগে যাত্রীকল্যাণ সমিতিসহ বিভিন্ন মহল থেকে বাসভাড়া না বাড়ানোর দাবি জানানো হয়েছিল। তখন মালিকদের বক্তব্য ছিল, আসন অর্ধেক করার পর ভাড়া না বাড়ালে তাঁদের লোকসান গুনতে হবে। এই প্রেক্ষাপটে সরকার শর্ত সাপেক্ষে বাসভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়। 

ঈদের ছুটিতে দেখা গেল, বাসমালিকেরা ভাড়া বাড়ালেও যাত্রী পরিবহন করছেন আগের মতোই। বাসে কোনো আসন খালি রাখা হচ্ছে না। কোনো কোনো পরিবহন সংস্থা বাস ভাড়া শতভাগ বাড়িয়েছে। এর ফলে মালিকেরা দুভাবে লাভবান হয়েছেন। যাত্রী নিয়েছেন দ্বিগুণ আর ভাড়াও নিয়েছেন বেশি। অন্যদিকে বেশি ভাড়া দিয়েও যাত্রীদের চলাচল করতে হচ্ছে স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্য দিয়ে। গত মঙ্গলবার প্রথম আলোয় চট্টগ্রামের সড়ক পরিবহন নিয়ে যে খবর ছাপা হয়েছে তাতে দেখা যায়, প্রতিটি বাসে দ্বিগুণ ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে আসনও দ্বিগুণ। এ নিয়ে যাত্রীরা প্রতিবাদ করেও কোনো প্রতিকার পাননি, ক্ষেত্রবিশেষে নাজেহালও হচ্ছেন। 

এ চিত্র কেবল চট্টগ্রামের নয়, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের গণপরিবহনেই এ নৈরাজ্য চলছে। রাজধানী ঢাকার চিত্র আরও ভয়ংকর। সাপ্তাহিক ছুটির দিন ছাড়া বাস-মিনিবাসে ভিড় লেগেই থাকে। যাত্রী বেশি ও গণপরিবহন কম থাকায় যাত্রীরা নিয়তই ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। একই সঙ্গে বাড়তি ভাড়াও তাঁদের গুনতে হচ্ছে।

 পরিবহন সংস্থাগুলো যাত্রীদের কাছ থেকে বেশি ভাড়া নিলে অবশ্যই আসন খালি রাখতে হবে। আবার নির্ধারিত আসনের চেয়ে বেশি যাত্রী বহন করলে আগের নিয়মেই ভাড়া নিতে হবে। এটা কার্যকর করার দায়িত্ব বিআরটিএর। কিন্তু তারা বাসভাড়া বাড়িয়ে কিছু নির্দেশনা দিয়েই যেন তাদের দায়িত্ব সেরেছে। ফলে গণপরিবহনের ক্ষেত্রে বিশৃঙ্খল অবস্থা বিরাজ করছে আর ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা। বিআরটিএ পরিবহনমালিক ও শ্রমিকদের প্রতি তাদের দায়িত্ব আছে, যাত্রীসাধারণের প্রতি কি তাদের কোনো দায় নেই? 

যাত্রী অধিকার রক্ষা ও গণপরিবহনের ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আমরা মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।