Thank you for trying Sticky AMP!!

নামকাওয়াস্তে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

এ বছর উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থী ভর্তি নিয়ে রীতিমতো যুদ্ধ হয়েছে। প্রতিযোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় মেধাবী শিক্ষার্থীদের অনেকেই প্রার্থিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারেনি। এটি আমাদের শিক্ষাঙ্গনের একটি চিত্র। বিপরীত চিত্র হলো, ১৩৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোনো শিক্ষার্থী আবেদনই করেনি। খুবই কম শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য আবেদন করেছে, এ রকম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১ হাজার ৩০০।
এমপিওভুক্ত হোক আর না হোক এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থী ছাড়াই কীভাবে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে আসছে? তাদের তদারক করার দায়িত্ব যাঁদের, তাঁরাই বা কী করছেন?
প্রথম আলোর অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনোটি সাইনবোর্ডসর্বস্ব, কোনোটি চলছে তিন কক্ষের ভাড়া বাসায়, কোনোটি বা আছে পানির নিচে। তারপরও রাজনৈতিক প্রভাব–প্রতিপত্তি কিংবা মামার জোরে তাদের অনুমোদন পেতে কোনো সমস্যা হয়নি। শিক্ষামন্ত্রীও বলেছেন, ‘এখন এগুলো সম্পর্কে তথ্য পাওয়া গেল। প্রতিষ্ঠানগুলো পরিদর্শন করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ তাঁর এই বক্তব্য কেবল কথার কথা হবে না বলেই আমাদের প্রত্যাশা।
আইন অনুযায়ী, একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনুমোদন পেতে অনেকগুলো শর্ত পূরণ করতে হয়। সেখানে প্রয়োজনীয় শিক্ষার্থী, শিক্ষক আছে কি না, সেসবও পরখ করা হয়। সেসব শর্ত পূরণ না করেই এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনুমোদন পেল কীভাবে? তাহলে কি কাজির গরু কেতাবে আছে গোয়ালে নেই অবস্থায়ই কর্তাব্যক্তিরা একের পর এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনুমোদন করে গেছেন? এর আগেও দেখা গেছে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিয়েও পাস করতে পারে না। পাসের হার শূন্য। তার পরও রহস্যজনক কারণে কর্তৃপক্ষ নামমাত্র কাগুজে সতর্ক করে দিয়েই দায়িত্ব শেষ করেছে। এতে সংশ্লিষ্টদের কোনো ক্ষতি না হলেও ফি বছর খেসারত দিতে হচ্ছে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শিক্ষার্থীকে।
যে শিক্ষা জাতির ভবিষ্যৎ নির্মাণ করে, সেই শিক্ষা নিয়ে এ ধরনের জোচ্চুরি বা ফাঁকিবাজি চলতে পারে না। যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষার ন্যূনতম মান নিশ্চিত করতে পারে না, সেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অনুমোদন বাতিলের পাশাপাশি অনুমোদনকারীদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হোক। দায়ী সবাইকে শাস্তি ও জবাবদিহির আওতায় আনা হোক। সবাইকে জবাবদিহির আওতায় আনতে না পারলে শিক্ষার এই অবনতি এবং শিক্ষার্থীদের অব্যাহত বঞ্চনা ঠেকানো যাবে না।