Thank you for trying Sticky AMP!!

পদ্মায় 'কাঠামোগত হত্যাকাণ্ড'

ভবনের ভিত দুর্বল হলে ভবন ধসে পড়ে, সরকারি ব্যবস্থাপনায় ধস নামলে মানুষ মারা যায়। মুন্সিগঞ্জে পদ্মায় লঞ্চ ডুবে ১২৫ জনেরও বেশি যাত্রী নিখোঁজ অথবা নিহত হওয়া এর বর্তমান নজির। এসব মৃত্যু নিছক দুর্ঘটনা নয়, এগুলো ‘কাঠামোগত হত্যাকাণ্ড’।
লঞ্চটির মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল কর্তৃপক্ষ দেখেও দেখেনি। মাওয়া ও কাওড়াকান্দি দুই ঘাটেই সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের পরিদর্শক ছিলেন।তাঁরা বাধা দেননি। ৮৫ জন বহনক্ষম ছোট লঞ্চটিতে ৩০০-এর বেশি যাত্রী ওঠানো হলো, কেউ বাধা দিল না! অবহেলা ও দুর্নীতির মূল্য জীবনের দামে শোধ করতে হচ্ছে যাদের, তারা সবাই সাধারণ মানুষ। শেষ গাফিলতি দেখা গেল উদ্ধারকাজে।মানুষকে উদ্ধার করেছে মাওয়া ঘাটের বেসরকারি স্পিডবোটগুলো। সরকারি উদ্ধার আয়োজন শুরু হয়েছে সব শেষ হয়ে যাওয়ার পর। এত সব অবহেলার ফল শতাধিক মানুষের মৃত্যু। তাঁদের মধ্যে নৌপরিবহনমন্ত্রীর নিকটাত্মীয়ও আছেন।
সরকারি প্রতিষ্ঠানের অবহেলা আর ব্যবসায়ীদের লাগামছাড়া মুনাফার গ্রাসে চলে যাচ্ছে শত শত প্রাণ। অথচ শাস্তি হতে দেখা যায় না। দায়মুক্তির সংস্কৃতির কারণেই সড়কে ও নৌপথে একের পর এক অঘটন ঘটে চলেছে। কিছুদিন আগে দক্ষিণ কোরিয়ায় ফেরি ডুবে স্কুলছাত্রীদের মৃত্যুর দায় নিয়ে দেশটির প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছিলেন। অথচ পদ্মায় যখন লঞ্চটি ডোবে, তখন বাংলাদেশের নৌপরিবহনমন্ত্রী পোশাকশিল্পের মালিকদের হয়ে দেনদরবার করছিলেন। নিজ মন্ত্রণালয়ের চেয়ে তাঁকে প্রায়ই অন্য মন্ত্রণালয়ের কাজেই ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়। এ রকম ‘খণ্ডকালীন’ মন্ত্রীকে দিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় চলতে পারে না।
ঈদের আগে মন্ত্রী মহোদয় নৌপথে যাত্রীদের পূর্ণ নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। শতাধিক মানুষের মৃত্যুর পাশাপাশি গত সোমবার পদ্মার জলে তাঁর সেই প্রতিশ্রুতিও ডুবে গেছে। অতএব, এই ব্যর্থতার দায় নিয়ে মন্ত্রীর উচিত পদত্যাগ করা।