Thank you for trying Sticky AMP!!

পাইকপাড়ার আদর্শ গ্রামের জমি

১৯৯৭ সালে খুলনার পাইকপাড়ায় আদর্শ গ্রাম গড়ে তোলা হয়েছিল ভূমিহীন মানুষের আশ্রয় ও জীবিকার জন্য। সরকার সেখানে ৬৩ জন ভূমিহীনকে ঘর নির্মাণের জন্য জনপ্রতি ৫ শতাংশ এবং জীবিকা নির্বাহের জন্য ৯৫ শতাংশ খাসজমি বরাদ্দ দেয়। দুই দশকের ব্যবধানে সেই জমির বরাদ্দ পাওয়া ব্যক্তিদের অনেকের চাষের জমি হাতছাড়া হয়ে গেছে।

প্রথম আলোর খবর থেকে জানা যায়, আদর্শ গ্রামের বাসিন্দা আবুল কাশেম গাজী তাঁর বরাদ্দপ্রাপ্ত চাষের জমি ইজারা দিয়েছিলেন নুরুল ইসলাম নামের এক প্রভাবশালী ব্যক্তির কাছে। এই প্রভাবশালী ব্যক্তি প্রথম কয়েক বছর আবুল কাশেমকে কিছু টাকা দিলেও পরে তা বন্ধ করে দেন। এখন ইজারাদারই মালিক সেজে বসেছেন আর আবুল কাশেম জমি উদ্ধারের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। আবুল কাশেম স্থানীয় সাংসদের কাছে প্রতিকার চাইলে তিনি পাইকপাড়ার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) ব্যবস্থা নিতে বলেন। এরপর ওসির নির্দেশনা অনুযায়ী আবুল কাশেম জমি দখল নিতে গেলে নুরুল ইসলাম ও তাঁর ভাই আপেল খাঁ তাঁকে মারধর করেন। এ নিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে সালিসের উদ্যোগ নেওয়া হলেও লাভ হয়নি। ইজারাদার কিছুই মানতে চান না।

আবুল কাশেম ও নুরুল ইসলামের এ ঘটনা রবীন্দ্রনাথের ‘দুই বিঘা জমি’ কবিতার কথা মনে করিয়ে দেয়। ‘রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙালের
ধন চুরি।’ ইজারাদার নুরুল ইসলাম খাঁ ও তাঁর ভাই আপেল খাঁ জমির দাগ নম্বর ভুল—এই অজুহাত দেখিয়ে আবুল কাশেমের জমি দখল করে নিয়েছেন। কারও জমির দাগ নম্বর ভুল হলে তো ইজারাদার মালিক হয়ে যেতে পারেন না। সরকারের দায়িত্ব ভুল শুধরে আবুল কাশেমকে নতুন করে দলিল করে দেওয়া।

কেবল আবুল কাশেম নন, প্রভাবশালীরা আরও অন্তত ১৫ জন ভূমিহীনের জমি দখলে রেখেছেন। ভূমিহীনেরা যতবার জমি দখল করতে যান, তাঁরা বাধা দেন। পাইকগাছার সহকারী কমিশনার ভূমি জানিয়েছেন, নকশা অনুযায়ী আবুল কাশেমের জমি ঠিকই আছে। দাগ নম্বর ভুল হওয়ার কারণে তিনি বঞ্চিত হতে পারেন না। সংশোধন করে জমি তাঁকে বুঝিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

আমরা আশা করব, এই প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করে আবুল কাশেমের বরাদ্দ জমি বুঝিয়ে দেওয়া হবে। একই সঙ্গে যে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা অন্যায়ভাবে এই জমি জবরদখল করে রেখেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হোক।