Thank you for trying Sticky AMP!!

পাহাড়ে শিশুরা হামের কবলে

‘বাদ যাবে না একটি শিশু’—টিকাদান কর্মসূচির এ স্লোগানখচিত পোস্টারে যখন সভ্য নগর আত্মতুষ্টিতে রয়েছে, তখন দেশের পাহাড়ি অঞ্চলে হামে আক্রান্ত শিশুর মৃত্যুগোঙানি শোনা যাচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা টিকাদান নিয়ে ফি বছর প্রশস্তিবাক্য উচ্চারণ করলেও শিশু সুরক্ষায় ওই অঞ্চল যে কতখানি পিছিয়ে আছে, তা আবারও সামনে এসেছে।

সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে দেখা যাচ্ছে, রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নে মারাত্মক হামে আক্রান্ত হয়েছে শতাধিক শিশু। এদের মধ্যে মুমূর্ষু অবস্থায় ৮ থেকে ১২ বছর বয়সী পাঁচ শিশুকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে গত বুধবার হেলিকপ্টারে করে চট্টগ্রামে নেওয়া হয়েছে। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত সাজেকে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে অন্তত সাত শিশু মারা গেছে। এ গ্রামগুলো যেহেতু শহর থেকে বহুদূরে এবং দীর্ঘ পায়ে হাঁটা পথে সেখানে যেতে হয়, সে কারণে আক্রান্ত শিশুরা সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছে না।

পরিতাপের বিষয়, শুধু সময়মতো টিকা পায়নি বলে পাহাড়ের এই শিশুদের এমন পরিণতি বরণ করতে হচ্ছে। সময়মতো টিকা না পাওয়ার জন্য এই শিশুরা বা তাদের অভিভাবকদের দায়ী করা যাচ্ছে না, কারণ এ ক্ষেত্রে সরকারের স্বাস্থ্যকর্মীদের অগ্রণী ভূমিকা রাখার কথা।

এর আগে ২০১৭ সালে সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ত্রিপুরা গ্রামের ৯ শিশু মারা যাওয়ার পর চিকিৎসা কর্মকর্তারা বলেছিলেন, তারা ‘অজ্ঞাত’ রোগে মারা গেছে। পরে তদন্ত করে নিশ্চিত জানা গিয়েছিল তারা সবাই হামে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। চলতি মাসের শুরুর দিকে বান্দরবানের লামায় ম্রো জনগোষ্ঠীর শিশুরা হামে আক্রান্ত হওয়ার পর আবার সেই ‘অজানা’ বা ‘অজ্ঞাত’ রোগের অজুহাত সামনে আনা হচ্ছিল। সর্বশেষ সাজেকের ঘটনাকে আর সেদিকে নেওয়া সম্ভব হয়নি।

আশার কথা, এ বিষয়ে সেনাবাহিনী হাত লাগিয়েছে। এসব শিশু এখন বিনা চিকিৎসায় মরবে না—অন্তত এ আশাটুকু এখন করা যাচ্ছে।

কিন্তু কয়েকটি প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। সেগুলো হলো, এত দিন এ জনপদ কেমন করে টিকা কর্মসূচির বাইরে ছিল? পাহাড়ি শিশুদের সংখ্যা খুবই কম এবং সরকারের কাছে পর্যাপ্ত টিকা থাকার পরও কার গাফিলতিতে শিশুরা এমন প্রাণঘাতী রোগে আক্রান্ত হচ্ছে? জবাবগুলো এখনই খোঁজা দরকার।