Thank you for trying Sticky AMP!!

প্রতিবন্ধীদের ভাতায়ও হাত

বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী—এই তিন শ্রেণির মানুষ আমাদের সমাজে বহু আগে থেকেই উপেক্ষিত, অবহেলিত এবং অনেক সময়ই ‘পরাশ্রয়ী’। এখানে রাষ্ট্র যেহেতু তাঁদের ভরণপোষণের দায় নেয় না এবং তাঁরা নিজেরাও অধিকাংশ ক্ষেত্রে উপার্জনক্ষম থাকেন না, সেহেতু এই মানুষগুলোকে, বিশেষত হতদরিদ্র পরিবারভুক্ত মানুষগুলোকে যে দুর্গতির মধ্য দিয়ে জীবন কাটাতে হয়, তা তাঁরা ছাড়া অন্যদের পক্ষে সর্বাংশে উপলব্ধি করাও সম্ভব হয় না। 

রাষ্ট্র বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধীদের দায়িত্ব না নিলেও বর্তমান সরকার একটি ভালো কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এই শ্রেণির নাগরিকদের সবাইকে দেওয়া সম্ভব না হলেও একটি অংশকে ভাতা দেওয়া হচ্ছে। সেই ভাতার অর্থের পরিমাণ অতি সামান্য। তবে এর প্রতীকী গুরুত্ব আছে। 

দেশে ভাতাপ্রাপ্ত বয়স্ক ও বিধবারা মাসে ৫০০ টাকা এবং প্রতিবন্ধীরা মাসে ৭০০ টাকা করে পেয়ে থাকেন। একজন উপার্জনক্ষম মানুষের কাছে এই টাকা হয়তো তেমন কিছুই নয়। কিন্তু বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধীদের কাছে তা এক মূল্যবান অবলম্বন। 

অতি দুঃখের বিষয়, এই তুচ্ছ পরিমাণের অর্থ থেকেও ভাতা প্রদানসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ‘বখরা’ নিতে দেখা যায়। এই সামান্য অর্থেও যাঁরা ‘ভাগ বসান’, তাঁদের বিশেষায়িত করার উপযুক্ত বিশেষণ ব্যাকরণগ্রন্থে আছে কি না সন্দেহ। বাস্তবতা হলো, কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা খুব কম নয়। 

প্রথম আলোর প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, সম্প্রতি নড়াইলে বয়স্ক, বিধবা এবং প্রতিবন্ধী ভাতাপ্রাপ্ত নতুন ভাতাভোগীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সদর উপজেলার ভদ্রবিলা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) ভবনে ওই ইউনিয়নের ১৩৪ জন নতুন ভাতাভোগীর বই সরবরাহ করার সময় প্রত্যেকের কাছ থেকে ২০০ টাকা করে নেওয়া হয়। এই টাকা নিয়েছেন ওই ইউপির উদ্যোক্তা (কম্পিউটার অপারেটর) জিন্নাহ বিশ্বাস। জিন্নাহ বিশ্বাস বলেছেন, উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের ওই ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইউনিয়ন সমাজকর্মী বিভূতিভূষণ চক্রবর্তীর নির্দেশে তিনি টাকা নিয়েছেন। অবশ্য বিভূতিভূষণ চক্রবর্তী বলেছেন, তিনি কোনো টাকা নেননি। 

উদ্বেগের বিষয় হলো, এই অনিয়ম যে শুধু নড়াইলেই হচ্ছে, তা ভাবার সুযোগ খুবই কম। দেশের অন্য সব এলাকায় খোঁজ নিলে হয়তো একই চিত্র পাওয়া যাবে। তার মানে হাতেগোনা অল্প কয়েক ব্যক্তির কারণে সরকারের একটি মহান উদ্যোগ ব্যাহত হচ্ছে। অতি অসহায় মানুষগুলো তাঁদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এই বঞ্চনা রোধ করতেই হবে। অনিয়মে জড়িতদের সাজার আওতায় আনতেই হবে।