Thank you for trying Sticky AMP!!

প্লাস্টিকসামগ্রীর পুনর্ব্যবহার

প্লাস্টিকের তৈরি সামগ্রী আমাদের পরিবেশের কতটা ক্ষতি করে চলেছে এবং এসবের পুনর্ব্যবহার কতটা জরুরি, সে ব্যাপারে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে বিডি 

ক্লিন নামের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি যে উদ্যোগ নিয়েছে, তা নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য। বিডি ক্লিন মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজধানীর বনানীর বিটিসিএল খেলার মাঠে ও মহাখালীর টিঅ্যান্ডটি মাঠে প্লাস্টিকের বিভিন্ন বোতল ও বোতলের মুখ দিয়ে বাংলাদেশের মানচিত্র, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি, জাতীয় স্মৃতিসৌধ, খেলনা, গয়না, ঘর সাজানোর সামগ্রীসহ নানা কিছু বানিয়ে তা প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করে।

বিডি ক্লিনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই প্রদর্শনীর মূল লক্ষ্য প্লাস্টিকসামগ্রী ব্যবহারের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে সবাইকে সচেতন করা এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় এর রিসাইক্লিং বা পুনর্ব্যবহারকে উৎসাহিত করা।

প্লাস্টিকের তৈরি বোতলসহ অন্যান্য সামগ্রী আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার অপরিহার্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্থায়িত্ব, কম খরচ এবং বিভিন্ন আকার ও এর সহজলভ্যতার কারণে প্লাস্টিক ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। বিশেষ করে ওয়ান টাইম বোতল, কাপ, প্লেট, চামচ, স্ট্র ইত্যাদির ব্যবহার বেড়েই চলেছে। এসব প্লাস্টিকসামগ্রী অনেক ক্ষেত্রেই যথাযথ মানসম্মত নয়। এসব ব্যবহারের স্বাস্থ্যগত সমস্যার ঝুঁকি রয়েছে।

অন্যদিকে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাব থাকায় তারা ব্যবহার করা প্লাস্টিকের সামগ্রী যেখানে-সেখানে ফেলে দিচ্ছে। যেহেতু প্লাস্টিকের সামগ্রী মাটিতে মিশে যায় না, তাই ক্রমে তা বর্জ্য হিসেবে জমা হচ্ছে লোকালয়ে, নদী ও সাগরে। ক্লোরিনযুক্ত প্লাস্টিক বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ নির্গত করে, যা ভূগর্ভস্থ ও ভূপৃষ্ঠীয় পানির সঙ্গে মিশে যায়। আর এভাবেই পানি গ্রহণে তা খাদ্যচক্রে ঢোকার মাধ্যমেও প্রতিনিয়ত আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। প্লাস্টিকসামগ্রী পুড়িয়ে ফেললে আরও বিপদ—হাইড্রোকার্বন হয়ে বাতাসে মিশে তা বাড়িয়ে দিচ্ছে দূষণের মাত্রা।

 এর পরিপ্রেক্ষিতে বিডি ক্লিনের প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি নানা শিল্পকর্ম প্রদর্শনীর এ আয়োজন সময়োপযোগী। অন্যান্য সংগঠন বিডি ক্লিনকে অনুসরণ করতে পারে। তবে এ ব্যাপারে সরকারকে সবার আগে এগিয়ে আসতে হবে। এখন দেশে ফেলে দেওয়া প্লাস্টিকের বোতল ও সামগ্রী কুচি কুচি করে ওই কুচি বিদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। এসব বোতলকুচি দিয়ে আমদানিকারক দেশের কারখানায় নানা পণ্য তৈরি করা হয়। এই বোতলকুচি রপ্তানিকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্লাস্টিক রিসাইক্লিং কারখানা গড়ে উঠেছে। এসব কারখানায় বহু মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। আমরা মনে করি, পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য রক্ষার স্বার্থে এ ধরনের শিল্পের বিকাশে সরকারের এগিয়ে আসা উচিত।