Thank you for trying Sticky AMP!!

বঙ্গবন্ধু প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে বহাল থাকার নৈতিক বৈধতা হারিয়েছেন খোন্দকার নাসির উদ্দিন। শিক্ষার্থীদের ওপর ভাড়াটে গুন্ডাদের হামলার ঘটনার নিন্দা জানাতেও ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের একমাত্র দাবি হচ্ছে উপাচার্যের বিদায়। 

শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগতদের সন্ত্রাসী হামলার বিষয়ে উপাচার্যের নির্লিপ্ত প্রতিক্রিয়া নিন্দনীয়। তিনি বলেছেন, কে বা কারা হামলা করেছে, তা আমার জানা নেই। এ প্রসঙ্গে তিনি দাবি করেছিলেন যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ক্যাম্পাসে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। কিন্তু গোপালগঞ্জের ডেপুটি কমিশনারের (ডিসি) বক্তব্য বিশ্লেষণ করলে এটা পরিষ্কার যে তিনি পুরো অসত্য তথ্য দিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতি তাঁর বিদ্বেষপ্রসূত মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। ডিসি বলেছেন, উপাচার্যই তাঁকে ১৪৪ ধারা জারি করতে অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু তিনি তা করেননি। কারণ, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি।’ কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বহিরাগতদের দ্বারা নির্মম হামলার শিকার হয়েছেন এবং জেলা প্রশাসন তাঁদের রক্ষায় যেমন ব্যবস্থা নেয়নি, তেমনি হামলাকারীদের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ নেয়নি। সব থেকে পরিহাস হলো, গোপালগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব যে স্থানীয় জেলা প্রশাসনের, সেটা তাদের তরফে কেউ স্বীকার পর্যন্ত করছে না। 

ছাত্রদের ওপর হামলার প্রতিবাদে একজন সহকারী প্রক্টর যে প্রতিবাদী ভূমিকা রাখতে পেরেছেন, সেটা ইতিবাচক। শিক্ষকদের পক্ষ থেকে অন্তত একটি কণ্ঠস্বর গর্জে উঠেছে। পদত্যাগ তো আমাদের সমাজ থেকে প্রায় উঠেই গেছে। সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আমরা মনে করি, পদত্যাগী সহকারী প্রক্টর একজন দায়িত্বশীল প্রত্যক্ষদর্শী। তাঁর সাক্ষ্যমূল্য গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেছেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের নির্দেশে’ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা হয়েছে। আমরা আশা করব, তঁার ওই দাবি খতিয়ে দেখা হবে। আমরা ঐতিহ্যগতভাবে ক্যাম্পাসের হিংসাশ্রয়ী রাজনীতি ও ঘটনাবলির সঙ্গে পরিচিত। ক্যাম্পাসের বিবদমান পরিচিত গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে বহিরাগত ব্যবহারের অভিযোগও আছে। কিন্তু গোপালগঞ্জের ছাত্রদের প্রতিপক্ষ ছাত্ররা নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ কী—ফেসবুকে এক ছাত্রীর দেওয়া এমন একটি স্ট্যাটাসের পরে তাঁকে বহিষ্কারের মতো অবাক ঘটনা ঘটল। এর কেন্দ্রবিন্দুতে মূলত উপাচার্য। এ বিষয়ে প্রকাশ হওয়া একটি অডিও টেপে উপাচার্যের যে কথিত মন্তব্য সংবাদমাধ্যমে বেরিয়েছে, তা লজ্জাজনক। এটা গুরুতর অসদাচরণের পর্যায়ে পড়ে। 

গোপালগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্যকে নিয়ে বিতর্ক দেখার বিষয়টিকে খুব বিচ্ছিন্নভাবে দেখার সুযোগ নেই। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ প্রক্রিয়ার ধসকেই সামনে এনেছেন এই উপাচার্য ও তাঁর কর্মকাণ্ড। তিনি স্বেচ্ছায় নিজ পদ থেকে দ্রুত সরে গেলেই সম্ভবত বিষয়টি সবার জন্য স্বস্তির বিষয় হবে।