Thank you for trying Sticky AMP!!

বিধ্বংসী অবকাঠামো

আরও উদ্বেগের বিষয় হলো, আমাদের উন্নয়ননীতিতে অনেক সময় স্থানীয় বিশেষজ্ঞদের মতামতকে গুরুত্ব না দিয়ে দাতাগোষ্ঠীর ব্যবস্থাপত্রকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। ষাটের দশকে ক্রুগ মিশনের সুপারিশ অনুযায়ী বাঁধ নির্মাণ কিংবা আশির দশকে ফ্লাড অ্যাকশন প্ল্যান সে রকমই দুটি উদাহরণ। পরে ফ্লাড অ্যাকশন প্ল্যান বাতিল হলেও ক্ষতি যা হওয়ার হয়ে গেছে। ওই সব উদ্যোগের কুফল ভোগ করা সত্ত্বেও দেশের নদী-খাল ও জলাভূমিগুলোর আন্তসম্পর্ক প্রতিষ্ঠার কোনো উদ্যোগ না নেওয়া দুর্ভাগ্যজনক। উন্নত জীবনধারণের জন্য শিল্প-কারখানার প্রয়োজন আছে। কিন্তু সেই উন্নয়নের নামে কোনোভাবেই প্রকৃতিকে ধ্বংস করে নয়। প্রকৃতিকে বাঁচিয়ে উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে হবে।

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ ভুল বলেননি যে প্রকৃতিবিরোধী উন্নয়ন করে আমরা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ পানিনিষ্কাশনব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছি। তবে এই দায় শুধু বাংলাদেশের নয়। গঙ্গা, মেঘনা ও ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার অন্তর্ভুক্ত প্রতিটি দেশই এ জন্য দায়ী। অধিক ফসল উৎপাদন করতে গিয়ে তারা নদীকেই ধ্বংস করেছে। বিশেষজ্ঞরা উন্নয়নের ক্ষেত্রে স্থানীয় জ্ঞান ব্যবহারের তাগিদ দিয়েছেন। নির্বিচারে প্রকৃতি ধ্বংস করার পরিণাম কী হতে পারে, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন অঞ্চলে পাহাড়ধসই তার প্রমাণ।

এ প্রসঙ্গে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ সুন্দরবন রক্ষার বিষয়টিও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের এমন কোনো উন্নয়ন পরিকল্পনা নেওয়া যাবে না, যাতে সুন্দরবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু উন্নয়নের অনেক ফেরিওয়ালা সেটি মানতে চান না।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের পরিবেশবিষয়ক সংগঠন বাংলাদেশ এনভায়রনমেন্টাল নেটওয়ার্ক (বেন) আয়োজিত এই সম্মেলনে সরকারের নীতিনির্ধারকদের কেউ ছিলেন না। ফলে এসব সদুপদেশ তাদের কানে পৌঁছাবে কি না, সে বিষয়ে সন্দেহ আছে।

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের বসতির কারণে আমাদের উপদ্রুত পরিবেশ ও প্রকৃতি মারাত্মক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়েছে। সরকার বা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে তেমন উদ্বেগ পরিলক্ষিত হচ্ছে না। দ্রুত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো সম্ভব না হলে বিকল্প আবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। কোনোভাবে নয়নাভিরাম কক্সবাজারের প্রাকৃতিক ব্যবস্থা ধ্বংস করতে দেওয়া যাবে না।