Thank you for trying Sticky AMP!!

বুয়েটের ‘অক্সিজেট’

যুদ্ধকালই বটে। চলছে মৃত্যুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ। শ্বাসবায়ু চালু রাখার যুদ্ধ। করোনায় আক্রান্ত মানুষকে শ্বাসকষ্ট থেকে বাঁচাতে অক্সিজেনের অভাব প্রকট হয়ে উঠছে। অক্সিজেন না পেয়ে বহু রোগীর মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে।

এ সময় বিপুল আশাজাগানিয়া উদ্ভাবন সামনে এনেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) একদল শিক্ষক-শিক্ষার্থী। তাঁরা ‘অক্সিজেট’ নামের এমন একটি যন্ত্র উদ্ভাবন করেছেন, যা সাধারণ যন্ত্রের চেয়ে অন্তত চার গুণ বেশি অক্সিজেন সরবরাহে সক্ষম। একই সঙ্গে এর খরচও বিস্ময়কর রকম কম। আরও আনন্দের খবর, প্রাথমিক ধাপের কয়েকটি পরীক্ষা শেষে যন্ত্রটির উৎপাদন ও ব্যবহারের জন্য ‘সীমিত’ অনুমোদন দিয়েছে সরকারের ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর (ডিজিডিএ)। প্রাথমিকভাবে যন্ত্রটির ২০০ ইউনিট উৎপাদন করে তা ব্যবহার করা যাবে।

হাসপাতালগুলোর সাধারণ শয্যায় রোগীকে প্রতি মিনিটে সর্বোচ্চ ১৫ লিটার পর্যন্ত অক্সিজেন দেওয়া যায়। তার বেশি অক্সিজেনের দরকার হলে ‘হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলা’ লাগে। কিংবা রোগীকে আইসিইউতে নিতে হয়। এ ক্ষেত্রে অক্সিজেটের মাধ্যমে সাধারণ শয্যায় রেখেই রোগীকে ৬০ লিটার পর্যন্ত উচ্চ মাত্রার অক্সিজেন দেওয়া যায়।

ডিজিডিএ বলছে, স্বল্পসংখ্যক অক্সিজেটের (২০০ ইউনিট) সীমিত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে সুনিয়ন্ত্রিতভাবে ব্যবহারের জন্য। এটি অনেকটা ট্রায়ালের অংশ। অক্সিজেট যে রোগীদের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে, তাঁদের প্রত্যেকের তথ্য রাখা হবে। এতে রোগীর উপকার হচ্ছে কি না, কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হচ্ছে কি না কিংবা কোনো ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে কি না, তা দেখা হবে। এরপর যন্ত্রটির অনুমোদন দেওয়ার বিষয়ে বিবেচনা করা হবে।

উচ্চ মাত্রায় অক্সিজেন দেওয়ার জন্য বাজারে যেসব সিপ্যাপ ডিভাইস আছে, সেগুলোর দাম এক লাখ টাকা বা তার চেয়ে বেশি। হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলার দাম চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা। অন্যদিকে অক্সিজেটের পুরো সেটআপ মিলিয়ে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকার মতো খরচ পড়ে। এটি সহজে যেকোনো জায়গায় বহনযোগ্য। এ যন্ত্র বিদ্যুৎ ছাড়াই কাজ করে।

হাসপাতালগুলোয় অক্সিজেটের ব্যবহার শুরু হলে আইসিইউ–সেবার জন্য রোগীদের চাপ কমবে।

যন্ত্রটি ডিজিডিএর অনুমোদন পাওয়ার পথে কিছু জটিলতা তৈরি হয়েছিল। এর অনুমোদনের জন্য উচ্চ আদালতকে বিষয়টিকে প্রধানমন্ত্রীর নজরে আনার পরামর্শ পর্যন্ত দিতে হয়েছে। এ অবস্থায় আশঙ্কা হয়, যেহেতু বিদ্যমান অক্সিজেন সরবরাহযন্ত্রের তুলনায় অক্সিজেটের দাম অনেক কম এবং এর সক্ষমতা অনেক বেশি, সেহেতু সংশ্লিষ্ট কোনো কোনো মহল নিজেদের স্বার্থে এটির বাজারে আসার পথে প্রতিবন্ধকতার চেষ্টা করতে পারে। সরকারকে এই দিক মাথায় রেখে যথাযথ পরীক্ষা–নিরীক্ষা সাপেক্ষে যত দ্রুত সম্ভব অক্সিজেটের ব্যাপক ব্যবহার নিশ্চিতের উদ্যোগ নিতে হবে।