Thank you for trying Sticky AMP!!

মতলব মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়

শিক্ষকেরা ক্লাসে ভালোভাবে পড়ান না, তাই শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে বা কোচিং সেন্টারে গিয়ে পড়তে হয়। কোচিং ক্লাস না করলে বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের রোষানলে পড়তে হয় শিক্ষার্থীদের। পরীক্ষায় নম্বর কম দেন বা ফেল করিয়ে দেন শিক্ষকেরা। আবার ক্লাসে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি থাকার কারণে শিক্ষকেরা না পড়িয়ে একগাদা বাড়ির কাজ দিয়ে দেন। এই চিত্র এখন বাংলাদেশের বেশির ভাগ বিদ্যালয়ের। কিন্তু এর ব্যতিক্রম হচ্ছে চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার মতলব মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এই বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা ক্লাসেই পড়া আদায় করেন। পড়া বুঝতে না পারলে ক্লাসেই তা বুঝিয়ে দেন। দিনের পড়া দিনেই শেষ করেন।

রোববার প্রথম আলোয় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, মতলব মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা নিবিড় পরিবেশে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করান। এ বিদ্যালয়ে সাপ্তাহিক ও মাসিক পরীক্ষা ছাড়াও প্রায়ই বিশেষ পরীক্ষা ও ক্লাস নেওয়া হয়। ফলে চূড়ান্ত পরীক্ষায় শিক্ষার্থীরা ভালো ফল করছে। পাঠদানের এ রকম সুন্দর একটি ব্যবস্থা চালু করার জন্য আমরা মতলব মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ সব শিক্ষককে ধন্যবাদ জানাই। কেননা, আমাদের দেশে বর্তমানে বেশির ভাগ বিদ্যালয়ে ক্লাসে পাঠদানের বিষয়টি অনুপস্থিত। অধিকাংশ বিদ্যালয় এখন হয়ে উঠেছে কোচিংয়ের ফাঁদ। উদ্দেশ্য খুব পরিষ্কার, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিয়ে ব্যবসা করা। অনেক বছর ধরেই এ রকমটা চলে আসছে। সরকার বিভিন্ন সময় কোচিং ব্যবসার বিরুদ্ধে নানা পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেছে। কিন্তু বাস্তবে এসবের কোনো প্রয়োগ ঘটেনি।

পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশে শিক্ষার্থীরা বই নিয়ে বাড়িতে যায় না। এর কয়েক ধরনের উপকারিতা রয়েছে। প্রথমত, শিক্ষার্থীরা কোনো ধরনের চাপে থাকে না, ফলে তাদের মন থাকে সতেজ। পরীক্ষার কোনো দুশ্চিন্তায় তারা ভোগে না। এ সময়টিতে তারা অনেক প্রয়োজনীয় সামাজিক দক্ষতা অর্জন করতে পারে। পরিবার ও বন্ধুদের অনেক বেশি সময় দিতে পারে। পাঠ্যবইয়ের বাইরে অনেক কিছু পড়তে পারে, যা তার জ্ঞানের দিগন্তকে প্রসারিত করে। কিন্তু এ কথা কবে বুঝবেন আমাদের শিক্ষাসংশ্লিষ্ট লোকজন? কবে আমাদের দেশে সব বিদ্যালয়ে এ ব্যবস্থা চালু হবে? তবে মনে হয়, এ দিন বেশি দূরে নয়। মতলব মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় যেহেতু এ রকম উদ্যোগ নিয়েছে, তাহলে আমরা আশা করতেই পারি যে এমন দিন আসবে, যখন আমাদের দেশের শিক্ষার্থীরা তাদের পাঠ্যবই স্কুলেই রেখে দেবে। বাড়িতে নিয়ে যাবে না।

শিক্ষার্থীরা ক্লাসের বই ক্লাসেই রেখে যাবে, বাসায় নেবে না—এ বিষয়টি শুধু আইন করে করা সম্ভব হবে না। এ বিষয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষাসংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক হতে হবে।