Thank you for trying Sticky AMP!!

এর ফলাফল নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক

মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে ১৯৯২ সালে দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত শরণার্থী প্রত্যাবাসন চুক্তিটি অনুসরণ করতে চেয়েছে এবং সেভাবেই বর্তমানটি হয়েছে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, এর খুঁটিনাটি, ত্রুটি-বিচ্যুতি, এটা-ওটা নেই, কেন নেই, কী হবে—এসব কথা বলে তো কোনো লাভ নেই। গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হলো, রোহিঙ্গাদের তারা ফেরত নিতে চেয়েছে।

রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর বিষয়টি অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু অতীতে নেওয়া এ ধরনের উদ্যোগ যেহেতু ফল দেয়নি, তাই একই ধরনের বর্তমান সমঝোতা কতটুকু কাজে দেবে, সেই প্রশ্ন খুবই স্বাভাবিক। মূল সমস্যাটি মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নীতি, যাতে তাদের নাগরিকত্বের স্বীকৃতি নেই এবং তাদের প্রতি বৈষম্য। সেই নীতির ধারাবাহিকতাতেই গত কয়েক দশকে নানা সময়ে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা বাংলাদেশে এসেছে এবং এবারের রোহিঙ্গা সংকট এতটা বিপর্যয়কর আকার ধারণ করেছে।

শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনে যেকোনো সমঝোতা বা উদ্যোগের পাশাপাশি মিয়ানমার যাতে রোহিঙ্গা প্রশ্নে তার অবস্থান পরিবর্তন করে, তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে জোর দিতে হবে। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের নাগরিকত্বের বিষয়টির সুরাহা ছাড়া সেখানে তাদের নিরাপদ অবস্থান আশা করা যায় না। সামনে আবারও একই ঘটনা ঘটতে পারে। অন্যদিকে সমঝোতা অনুযায়ী দুই মাসের মধ্যে শরণার্থী প্রত্যাবাসন শুরুর কথা বলা হলেও কবে তা শেষ হবে, তার কোনো সময়সীমা নেই।

এবারের শরণার্থী সংকটের শুরু থেকেই মিয়ানমার ক্রমাগত আরাকানে রোহিঙ্গাদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে। মিয়ানমারে তরফ থেকে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার কোনো উদ্যোগ থাকলে আট লাখ শরণার্থীকে দেশ ছাড়তে হতো না। শেষ পর্যন্ত এই ঘটনায় মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বেড়েছে এবং বলা যায়, সে কারণেই দেশটি শরণার্থীদের ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশের সঙ্গে একটি সমঝোতা সই করেছে। বর্তমান সমঝোতায় মিয়ানমার লাভবান হবে। তাদের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ কমাতে এবং সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা ও সেনা কর্মকর্তাদের বিচার এড়াতে দ্বিপক্ষীয় সমঝোতাকে তারা ঢাল হিসেবে ব্যবহার করবে। কিন্তু শরণার্থীদের চাপ থেকে বাংলাদেশ সহজেই মুক্ত হবে, এমন আশা তো করা যাচ্ছে না।

মিয়ানমারকে তার নাগরিকদের যেমন ফিরিয়ে নিতে হবে, তেমনি তাদের নিরাপত্তাও নিশ্চিত করতে হবে। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর যে গণহত্যা ও বর্বরতা চালানো হয়েছে, এর বিচারের দাবিতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সোচ্চার থাকতে হবে।