Thank you for trying Sticky AMP!!

শিশু উন্নয়নকেন্দ্রে আত্মহত্যার চেষ্টা

সম্পাদকীয়

সাজার স্বীকৃতির অর্থ অপরাধীর অধিকারকে খর্ব করা নয়। বরং সাজা এক অর্থে তার অধিকারের ক্ষেত্রকে সুরক্ষা দেয়। অপরাধী যদি শিশু হয়, তাহলে তার সাজার সময়কে অধিক স্পর্শকাতর হিসেবে বিবেচনায় নেওয়া এবং তার শারীরিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা বিধেয়। এই দায় রাষ্ট্র নিয়োজিত কর্তৃপক্ষের।

যশোর শিশু উন্নয়নকেন্দ্রকে ঘিরে গত এক বছরে যেসব খবর প্রকাশ পেয়েছে, তাতে দেশের বিভিন্ন শিশু উন্নয়নকেন্দ্রে আটক থাকা শিশু-কিশোর অপরাধীর সুরক্ষার বিষয়ে কর্তৃপক্ষ কতটুকু দায়িত্ব পালন করছে, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। দেখা যাচ্ছে, যশোর শিশু উন্নয়নকেন্দ্রে গত এক বছরে অন্তত আটজন শিশু-কিশোর আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছে। সর্বশেষ গত শনিবার সেখানে বন্দী থাকা এক কিশোর গুঁড়া সাবান খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। এর আগে কেউ গলায় ফাঁস লাগিয়ে, কেউ অন্যভাবে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। বাস্তবতা হলো, প্রকৃতপক্ষে এ ধরনের যত ঘটনা ঘটে, তার খুব কমই সংবাদমাধ্যমে আসে। সেদিক থেকে দেখলে এই প্রবণতা খুবই উদ্বেগজনক।

যশোর শিশু উন্নয়নকেন্দ্রের শিশুরা আত্মহত্যায় ঝুঁকছে কেন প্রশ্নে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সেখানে বিভিন্ন ধরনের অপরাধের মামলায় আদালতের মাধ্যমে শিশুদের পাঠানো হয়। অনেকের পরিবারের সদস্যরা তাদের সঙ্গে ঠিকমতো যোগাযোগ রাখেন না। মামলায় জামিনও হয় না। এসব কারণে হতাশাগ্রস্ত হয়ে একসময় তারা আত্মহত্যার দিকে ঝুঁকে পড়ে। তবে উন্নয়নকেন্দ্রে যাঁরা শিশুদের দেখভালে নিয়োজিত আছেন, তাঁরা তাদের শারীরিক কিংবা মানসিক নির্যাতন করেন কি না, সে বিষয়টিও নৈর্ব্যক্তিক ও নির্মোহ তদন্তের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া উচিত।

আত্মহত্যার প্রবণতা থেকে ফিরিয়ে রাখতে মনস্তত্ত্ববিদদের দিয়ে কাউন্সেলিং করানো একটি বিজ্ঞানসম্মত পন্থা। সেখানকার শিশুদের যথাযথ কাউন্সেলিং করানো হচ্ছে কি না, সেটি তলিয়ে দেখা জরুরি। এর বাইরে কোন কোন শিশুর মধ্যে এ ধরনের প্রবণতা দেখা দিচ্ছে, তা দ্রুত খতিয়ে দেখে সার্বক্ষণিকভাবে তাদের গতিবিধির ওপর নজর রাখা দরকার।

যশোরের শিশু উন্নয়নকেন্দ্রের এসব ঘটনা দেশের অন্যান্য স্থানের শিশু উন্নয়নকেন্দ্রগুলোর জন্য সতর্কবার্তা দেয়। অন্য কেন্দ্রগুলোকেও এ বিষয়ে সতর্ক থাকা জরুরি।