Thank you for trying Sticky AMP!!

শৈলকুপায় খেলার মাঠ দখল

ঝিনাইদহের শৈলকুপার গাড়াগঞ্জ বাজারসংলগ্ন মহেশপুর খেলার মাঠটি একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্মাণসামগ্রীসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম ফেলে রেখে যেভাবে দখল করে রেখেছে, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার প্রথম আলোয় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, মহেশপুর খেলার মাঠটি স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী আর স্থানীয় শিশু-কিশোরদের একমাত্র খেলার মাঠ। মাঠটি সরকারের খাস খতিয়ানভুক্ত। এই মাঠে প্রতিবছর ফুটবল টুর্নামেন্ট হয়ে থাকে। পাশাপাশি স্কুল পর্যায়ে প্রতিযোগিতামূলক খেলাধুলাও হয়। তা ছাড়া এলাকার লোকজনও এখানে অবসর সময় কাটাতে আসে। সাত-আট মাস ধরে এই খেলার মাঠে নির্মাণসামগ্রী রাখছে মোল্লা এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এতে করে দৈনন্দিন খেলাধুলা যেমন বন্ধ রয়েছে, তেমনি ওই সব টুর্নামেন্ট বা প্রতিযোগিতাও অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। লোকজনও অবসর সময় কাটাতে মাঠটিতে আসতে পারছে না। এতে সবাই ক্ষুব্ধ হলেও কারও কিছু বলার সাহস নেই। কারণ, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির মালিক শামীম হোসেন মোল্লা খুবই প্রভাবশালী। তিনি শৈলকুপা উপজেলা যুবলীগের সভাপতি। পাশাপাশি আবার শৈলকুপা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করছেন।

প্রশ্ন হচ্ছে কেউ প্রভাবশালী হলেই কি তিনি যা খুশি তাই করতে পারেন? আস্ত একটি খেলার মাঠ তিনি কোন বিবেচনায় এভাবে দখলে রাখতে পারেন? এটা একেবারেই অবৈধ। এ ব্যাপারে শামীম মোল্লার বক্তব্য হচ্ছে ওই মাঠ আসলে কোনো খেলার মাঠ নয়। এটা পশুহাট হিসেবে পরিচিত। স্থানীয় লোকজন মাঝেমধ্যে খেলাধুলা করে। আর ওই স্থানে মালামাল স্থায়ীভাবে রাখা হয়নি। দুটি রাস্তার কাজ চলছে। সেই কাজের নির্মাণসামগ্রী ওই মাঠে রাখা হয়েছে।

বোঝাই যাচ্ছে, নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য শামীম মোল্লা খেলার মাঠকে পশুর হাট বলছেন। এটা খুবই দুঃখজনক। একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমরা তাঁর কাছ থেকে দায়িত্বশীল আচরণ আশা করি। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, তিনি তাঁর ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন। অবশ্য শামীম মোল্লা একা নন। দেশজুড়েই চলছে আর্থিকভাবে আর রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালীদের রাজত্ব। তাঁরা নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে যা খুশি তাই করছেন। আর অন্যের ঘরবাড়ি, জমি দখল করছেন, পাহাড় কাটছেন, বন কাটছেন, মাটি কাটছেন, অন্যায্যভাবে আরও নানা সুবিধা নিচ্ছেন। কিন্তু কেউ তাঁদের বিরুদ্ধে কিছু বলার সাহস পান না।

আমরা মনে করি, শামীম মোল্লার মতো ব্যক্তিদের কোনো রাজনৈতিক দলে স্থান দেওয়া উচিত নয়। ক্ষমতাসীন দলের জন্য এটা বেশি প্রযোজ্য; কারণ, তাঁদের অন্যায় অপকর্মের জন্য দল ও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়। শৈলকুপার স্থানীয় প্রশাসনকে অবিলম্বে এই খেলার মাঠ দখলমুক্ত করতে উদ্যোগ নিতে হবে। প্রভাবশালী বলে শামীম মোল্লাকে এ ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।