Thank you for trying Sticky AMP!!

সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধের প্রয়াস

সাংবাদিক শফিকুল ইসলামকে কারাগারে পাঠানোর কয়েক দিনের মাথায় কথিত গুজব ছড়ানোর অভিযোগে লেখক, সাংবাদিক, কার্টুনিস্টসহ আরও ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের এবং ৪ জনকে গ্রেপ্তারের ঘটনা নিন্দনীয়।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গুজব ছড়ানো, নেতাদের কার্টুন আঁকা, সরকারবিরোধী প্রচারণা চালানোর দায়ে ১১ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন স্থানে ত্রাণ বিতরণে দুর্নীতির খবর প্রকাশ করার কারণে ছয়জন সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন আর্টিকেল-১৯-এর তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৬ মে পর্যন্ত ১০০ ব্যক্তির বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ২২ জনই সাংবাদিক। এসব মামলার উদ্দেশ্য যে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করা, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। ২০১৮ সালে যখন আইনটি পাস হয়, তখন বলা হয়েছিল এটি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হবে না। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এর যথেচ্ছ অপব্যবহার চলছে। ফলে বাংলাদেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা আরও সংকুচিত হয়ে পড়েছে।

গুজব ছড়ানোর দায়ে চারজনকে যে কায়দায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাতে নাগরিকদের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। মামলা দায়েরের আগেই কাউকে আটক করে তঁার বাড়িতে খবর পাঠানো কিংবা কাউকে জিজ্ঞাসাবাদের নামে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে সরকার জনগণকে কী বার্তা দিতে চায়? সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে, সেগুলো মামুলি ও যুক্তিহীন। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সরকারের সমালোচনা রাষ্ট্রবিরোধী কাজ বলে গণ্য হয় না। কোনো সাংসদের কাঁচা ধান কাটার ছবি ফেসবুকে প্রকাশ করা কিংবা কোনো নেতার কার্টুন আঁকা ফৌজদারি অপরাধ হতে পারে না।

আর গুজবের যথাযথ প্রতিকার হলো সঠিক তথ্য। করোনা মহামারির এই সংকটে যখন সঠিক তথ্যপ্রবাহের প্রয়োজনীয়তা বেড়েছে, তখন তা রোধ করতে সাংবাদিক ও সচেতন নাগরিকদের বিরুদ্ধে কালাকানুনের অপপ্রয়োগের বাড়তি উদ্যম লক্ষ করা যাচ্ছে। এমনকি করোনায় সংক্রান্ত বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্ন করার অধিকারও লঙ্ঘন করা হচ্ছে। এসব কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার করে যাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাঁদের মুক্তি দেওয়া হোক। নাগরিক অধিকার ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রতিকূল এই কালাকানুন অবশ্যই বাতিল করা প্রয়োজন।