Thank you for trying Sticky AMP!!

সত্য প্রকাশের কারণে মামলা

এ দেশে কত কিছুই ঘটে। সরকারি দলের লোকজনের অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ খবর ছাপানো হলে সাংবাদিককে মামলা খেতে হয়! ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে ভর্তুকির কলের লাঙল কেনায় অনিয়ম–সংক্রান্ত খবর প্রথম আলোয় প্রকাশের পর কৃষিমন্ত্রী জাতীয় সংসদে একাধিকবার বিবৃতি দিয়েছেন। এটি নজিরবিহীন। তাঁর দাবি, কৃষি মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটি খবরের সত্যতা খুঁজে পায়নি।
অথচ প্রথম আলো দ্বিতীয় দফা অনুসন্ধান করে দেখেছে ঘটনা সত্য এবং এক কৃষকের কলের লাঙল কীভাবে জালিয়াতি করে অন্যের বলে চালিয়ে দেওয়া হয়েছে, ছবি ছাপিয়ে সেটাও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর পরপরই ঝিনাইদহে প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক আজাদ রহমানসহ দুজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মালিকের পক্ষ থেকে ‘চাঁদাবাজি’র মামলা আসলে ভয় দেখিয়ে সাংবাদিকদের মুখ বন্ধ করার অপচেষ্টা মাত্র।
শেষকালে চাঁদাবাজির মামলা!ক্ষমতাসীন দলের কিছু নেতা-কর্মী ভর্তুকির লাঙল কেনার নামে যে টাকার নয়ছয় করেছেন, তা দিবালোকের মতো স্পষ্ট। কোনো সংবাদপত্র দুর্নীতি-অনিয়মের বস্তুনিষ্ঠ খবর প্রকাশ করলে ওই সব অসংগতি দূর করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করাই সরকারের কর্তব্য হয়ে দাঁড়ায়। অথচ সরকার উঠেপড়ে লেগেছে সত্যকে ধামাচাপা দিতে।
এ কথা সত্য যে কৃষিতে দেশ অনেক এগিয়েছে এবং এর পেছনে সরকারের কৃষিবান্ধব কর্মসূচিরও ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু এসব কর্মসূচিতে দলীয় নেতা–কর্মীরা অন্যায্যভাবে ভাগ বসাবেন এবং প্রকৃত কৃষকেরা বঞ্চিত হবেন, সেটি কোনোভাবে কাম্য হতে পারে না।
খবর প্রকাশের ৪০ দিন পর ‘চাঁদাবাজি’র মামলার উদ্দেশ্য সাংবাদিককে হয়রানি করা। ঝিনাইদহের সাংবাদিক সমাজসহ জেলা প্রেসক্লাব ও পাঁচটি উপজেলার সাংবাদিকেরা প্রতিবাদ সভা করে জিডি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। আমরাও অবিলম্বে আজাদ রহমানের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাই। একই সঙ্গে বলতে চাই, মামলা-হুমকি দিয়ে কাউকে হয়রানি করা গেলেও সত্য আড়াল করা যায় না। সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হোক।