Thank you for trying Sticky AMP!!

সরকারি স্কুলে শিক্ষক-সংকট

কোনো বেসরকারি বিদ্যালয়কে সরকারি করার ক্ষেত্রে যে বিষয়টি বিবেচনা করা হয়, সেটি হলো প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার মানোন্নয়ন। সরকারি হলে অধিকতর যোগ্য ও দক্ষ শিক্ষক পাওয়া যাবে, তাঁদের কাছ থেকে শিক্ষার্থীরা মানসম্মত শিক্ষাও পাবেন। বেসরকারি বিদ্যালয় অনেক সময় আর্থিক অসচ্ছলতার জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষক নিয়োগ দিতে পারে না। ফলে শিক্ষা বা পাঠদান কার্যক্রম ব্যাহত হয়।

কিন্তু শনিবার প্রথম আলোর নবম পৃষ্ঠায় কুমিল্লা সংস্করণে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার বেগম আমেনা সুলতান সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের যে চিত্র উঠে এসেছে, তা উদ্বেগজনক বললেও কম বলা হয়। যেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৪০০ শিক্ষার্থী আছে, সেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চলছে মাত্র ১০ জন শিক্ষক দিয়ে। অনেক বছর ধরে সেখানে প্রধান শিক্ষক নেই, বিদ্যালয়টি চলছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে। কিন্তু তিনি এখন এতটাই ভারাক্রান্ত যে শিক্ষার্থীদের পাঠদান চালানোও কঠিন হয়ে পড়েছে।

প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, শিক্ষক–সংকটের কারণে ২০১৬ সাল থেকে মানবিক শাখায় ভর্তি বন্ধ আছে। অর্থাৎ বিদ্যালয়টি চলছে মানবিক শাখা ছাড়াই। তদুপরি ২০১৭ সালের ৩ ডিসেম্বর প্রধান শিক্ষক, আট বছর আগে গণিতের শিক্ষক, ছয় বছর আগে হিসাবরক্ষণ ও জীববিজ্ঞানের শিক্ষক, পাঁচ বছর আগে কৃষিবিজ্ঞানের শিক্ষক, ১০ বছর আগে কৃষিবিজ্ঞানের শিক্ষক অন্যত্র বদলি হয়ে চলে যান। কিন্তু অদ্যাবধি এসব পদে কাউকে পদায়ন করা হয়নি। ২০১০ সালের প্রথম দিকে ইংরেজি বিভাগের দুজন শিক্ষক চলে গেলেও আট বছর পর একজন পদায়ন হয়েছেন। বাংলা বিভাগের তিনজন শিক্ষকের মধ্যে গত নভেম্বরে একজন বদলি হলেও তঁার শূন্যস্থানে কেউ আসেননি। এ ছাড়া বিদ্যালয়ে গার্হস্থ্য অর্থনীতি, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি, কর্ম ও জীবনমুখী শিক্ষা গ্রন্থাগার ও তথ্যবিজ্ঞান, শারীরিক শিক্ষা, হিন্দু ধর্ম শিক্ষা বিষয়ে শিক্ষক পদ সৃষ্টিই করা হয়নি। অথচ এসব বিষয়ে শিক্ষার্থী আছে। তাদের পাঠদান করা হচ্ছে অন্যান্য বিষয়ের শিক্ষক দিয়ে। যেখানে কোনো বিভাগেই প্রয়োজনীয় শিক্ষক নেই সেখানে অন্য বিভাগে গিয়ে তাঁরা পড়াবেন কীভাবে?

শুধু শিক্ষক–সংকট নয়, বিদ্যালয়টিতে প্রয়োজনীয় কর্মচারীও নেই। অনেক সময় শিক্ষকদেরই দাপ্তরিক কাজ করতে হয়। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন, প্রতি মাসেই শিক্ষকদের শূন্য পদের তালিকা কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়। কিন্তু কোনো প্রতিকার হয়নি। কেন শূন্য পদগুলোতে সময়মতো শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ করা হয়নি, সেই প্রশ্নের জবাব মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরকে (মাউশি) দিতে হবে।

শুধু ওই একটি নয়, অধিকাংশ সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়েই শিক্ষকের স্বল্পতা আছে, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। অবিলম্বে বেগম আমেনা সুলতান সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের শূন্য পদগুলোর পূরণ করে শিক্ষার্থীদের পাঠদান নির্বিঘ্ন করা হোক।