Thank you for trying Sticky AMP!!

সোনারগাঁর ২৬ সংগঠন

কোভিড–১৯ মহামারির শুরু থেকে প্রায় চার মাস ধরে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। শিক্ষার্থীরা কীভাবে এই সময়টার সদ্ব্যবহার করতে পারে, সে বিষয়ে পত্রপত্রিকায় নানা ধরনের পরামর্শমূলক লেখা পত্র প্রকাশিত হয়েছে। বিশেষত প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার ক্ষতি লাঘবের জন্য অনলাইনে পাঠ্যসূচির পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার নানা কৌশল বা কারিগরি পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং হচ্ছে। শিক্ষার্থীর জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যেহেতু শিক্ষাই, তাই করোনা মহামারির ফলে উদ্ভূত বিচ্ছিন্নতা ও অবরুদ্ধ পরিস্থিতির নেতিবাচক প্রভাব থেকে শিক্ষাকে যতটা সম্ভব রক্ষা করার চেষ্টাই সবচেয়ে বড় অগ্রাধিকার হওয়া উচিত—এতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে এ দেশের শিক্ষিত তরুণ-যুবসমাজ বিভিন্ন জাতীয় দুর্যোগের সময় শিক্ষাঙ্গনের গণ্ডি থেকে বেরিয়ে বিপন্ন মানবতার পাশে দাঁড়ায়। এটা আমাদের এক পুরোনো ঐতিহ্য। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তা কিছুটা সংকুচিত হয়ে এসেছে বটে, কিন্তু দেশের অনেক এলাকায় এখনো তা আছে।

তেমনই উৎসাহব্যঞ্জক খবর পাওয়া গেল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থেকে। করোনা শুরু হওয়ার পর সেখানকার কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সংগঠিতভাবে বিপন্ন মানুষকে সহযোগিতা করে আসছেন। ২৬টি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের হয়ে তাঁরা অবরুদ্ধ দরিদ্র মানুষের বাড়ি বাড়ি রাতের খাবার পৌঁছে দিয়েছেন; ঈদুল ফিতরের সময় দরিদ্র পরিবারগুলোর শিশুদের মধ্যে নতুন জামা বিতরণ করেছেন। সর্বশেষ গত শনিবার তাঁরা সোনারগাঁ উপজেলার মেঘনা নদীর বুকে জেগে ওঠা চরে গাছ লাগিয়েছেন। নুনেরটেক নামের ওই চর জেগে উঠেছে প্রায় ৭০ বছর আগে। চরের মাটিতে বালুর আধিক্য রয়েছে বলে সেটিকে ঘিরে বালুচোরদের উপদ্রব লেগে রয়েছে বহু বছর ধরে। তারা সেখান থেকে বালু তুলে নিয়ে যায়, ফলে চরটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ছাড়া চরটিতে অবৈধ ভূমি দখলকারীদের তৎপরতাও বেশ। সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইদুল ইসলাম সম্প্রতি ওই চরে বৃক্ষরোপণের উদ্যোগ নেন। তাঁর উদ্দেশ্য বালুচোর ও অবৈধ ভূমি দখলকারীদের হাত থেকে চরটিকে রক্ষা করা। তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে সোনারগাঁর ২৬টি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রায় ৩০০ কর্মী সেদিন ওই চরে ৭৫০টি গাছের চারা রোপণ করেছেন। গাছগুলো বেড়ে উঠলে বালুর চরটি নিশ্চয়ই সবুজ হয়ে উঠবে আর বালুচোরদের উপদ্রবও হয়তো কিছুটা কমবে, যদি প্রশাসন গাছগুলোর দিকে সযত্ন দৃষ্টি রাখে।

সোনারগাঁর এই তরুণ-যুবকদের স্বেচ্ছাসেবী মন ও কর্মোদ্যম, মানুষের জন্য ভালোবাসা, বিপদ-আপদে তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর এমন দৃষ্টান্ত সারা দেশের সব অঞ্চলের যুবসমাজের কাছেই প্রত্যাশিত।