Thank you for trying Sticky AMP!!

হালদায় ভাসছে পোড়া তেল

দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র হালদা নদী। শুধু তা–ই নয়, প্রায় ৮১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই নদী দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র বলে মনে করা হয়। পরিবেশগত দিক ছাড়া অর্থনৈতিকভাবে এ নদীর বিপুল অবদান আছে। এ কারণে হালদার জীববৈচিত্র্য রক্ষায় নানা উদ্যোগও নিয়ে থাকে সরকার। এরপরেও নানা অসাধু মহলের কর্মকাণ্ডে নদীটির পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে। এর মধ্যে হালদায় বর্জ্য ও পোড়া তেল ফেলা হয়েছে। কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে এ তেল।

প্রথম আলোর প্রতিবেদনে জানা যাচ্ছে, গত সোমবার দুপুরে জোয়ারের সময় থেকে সন্ধ্যায় ভাটা পর্যন্ত রাউজান ও চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন অংশে এ তেল দেখা যায়। জোয়ার কমে যাওয়ার পর নদীপাড়ের ভাঙন রোদে বসানো ব্লকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে বর্জ্য আর পোড়া তেল। অনেক বাসিন্দাকে পাড়ের তেল সরিয়ে নদীর পানি ব্যবহার করতে দেখা যায়। হালদা নদী বিশেষজ্ঞ থেকে স্থানীয় বাসিন্দা সবাই বলছেন, এ রকম তেল মাঝেমধ্যেই আসে। এগুলো বিভিন্ন কলকারখানার বর্জ্য। আবার অনেক সময় বড় জাহাজ থেকে তেল সরাসরি কর্ণফুলী নদীতে ফেলা হয়। সেটা জোয়ারের মাধ্যমে হালদা নদীকেও দূষিত করে ফেলে। যা মাছ, ডলফিনসহ অন্যান্য জীববৈচিত্র্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।

নৌ পুলিশ জানাচ্ছে, হালদা নদীতে আসা এ পোড়ার ঘটনা ডকইয়ার্ডের হতে পারে। তারা মাঝেমধ্যে কর্ণফুলী নদীতে পোড়া তেল ছেড়ে দেয়, যা বেআইনি। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রথম আলোর প্রতিবেদকও জানাচ্ছেন, বর্জ্য ও তেল অপসারণের নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া থাকলেও সেগুলো অনেক সময় অনুসরণ করে না জাহাজগুলো। পরিবেশ অধিদপ্তর তাদের মাঝেমধ্যে জরিমানা করলেও সেটি আসলে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নয়। যার কারণে এমনটা ঘটেই চলেছে।

হালদা নদীর আটটি পয়েন্টে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। নদীটির নিরাপত্তার জন্য মোতায়েন করা পুলিশের একটি ইউনিট এই ক্যামেরাগুলোর মাধ্যমে নজরদারি চালিয়ে থাকে। তবে সেটি নদীর মাত্র ছয় কিলোমিটার এলাকা কাভার করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, নদীর প্রজনন ক্ষেত্রের অন্তত ১৫ কিলোমিটার এলাকা সিসি টিভির আওতায় আনতে হবে। তাহলে এর সুফল পাওয়া পুরোপুরি সম্ভব। নদী থেকে অবৈধভাবে বালু তোলা, ডলফিনের মৃত্যু রোধ, কলকারখানার বর্জ্য ফেলা রোধ করা সম্ভব হবে। পরিবেশ অধিদপ্তরসহ স্থানীয় প্রশাসনের কাছে জোরালো দাবি থাকবে, হালদা নদীতে কলকারখানা ও জাহাজের বর্জ্য তেল ফেলার বিষয়টির ওপর কঠোর নজরদারি চালানো হোক। দায়ীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিন। জরিমানার মতো লঘু দণ্ড দিয়ে তাদের কোনোভাবে ছাড় দেওয়া যাবে না।