Thank you for trying Sticky AMP!!

সম্পাদকীয়

দ্রুত সংস্কার করে শিক্ষার্থীবান্ধব করা হোক

চট্টগ্রাম দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর, যাকে দেশের বাণিজ্যিক রাজধানীও বলা হয়। এ শহরে ৭০ লাখের মতো মানুষের বসবাস। বিপুল এই জনগোষ্ঠীর জন্য সরকারি উচ্চবিদ্যালয় আছে মাত্র ১০টি। এর মধ্যে মাত্র ২টি প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠা বাংলাদেশ আমলে, ১৯৭৪ ও ২০০৬ সালে।

জাতীয়করণও করা হয় মাত্র ২টি প্রতিষ্ঠান, ১৯৭৪ ও ২০১৭ সালে। গত ৫০ বছরে চট্টগ্রাম শহরে সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে অর্জন বলতে এতটুকুই। ৭০ লাখ মানুষের বিচারে মাত্র ১০টি উচ্চবিদ্যালয় কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এর মধ্যে মাত্র ৪টি প্রতিষ্ঠানে ছাত্রাবাস আছে, যেগুলো এখন ভুতুড়ে বাড়িতে পরিণত হয়েছে।

সর্বজনীন শিক্ষা অবশ্যই নাগরিকের অধিকার। কিন্তু সেই ব্যবস্থার গুণগত মান কতটা ধরে রাখতে পেরেছি আমরা। সন্তানের শিক্ষার খরচ জোগাতে অভিভাবকদের আয়ের বড় একটি অংশই চলে যাচ্ছে। শহরের বাইরে উপজেলাগুলোর অনেক অভিভাবক সন্তানকে উন্নত শিক্ষায় শিক্ষিত করতে তাদের আবাসিক স্কুলে ভর্তি করান। এ জন্য শহরে অনেক আবাসিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও গড়ে উঠেছে।

অথচ সরকারি প্রতিষ্ঠানে সেই সুযোগ থাকলেও সন্তানদের ছাত্রাবাসে রেখে সেসব স্কুলে পড়ানো সম্ভব নয়। সেসব ছাত্রাবাস জরাজীর্ণ হতে হতে এমন অবস্থা হয়েছে, সেগুলো এখন পরিত্যক্ত এবং বসবাসের অনুপযোগী। কোনোটির পলেস্তারা খসে পড়েছে, ভেঙে গেছে দেয়াল। কোনোটি পানিতে ডুবে আছে, ভেতরে তৈরি হয়েছে জলাশয়।

ছাত্রাবাস থাকা প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে বাকলিয়া সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, নাসিরাবাদ সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল ও চট্টগ্রাম সরকারি মুসলিম উচ্চবিদ্যালয়। চারটি ছাত্রাবাসের কোনোটিতেই এখন শিক্ষার্থী নেই। চারটি বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৯ হাজার ৩০০। শিক্ষক আছেন দুই শতাধিক। তাঁদের মধ্যে অনেকেই পার্বত্য চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা। ফলে সেসব শিক্ষার্থী ছাত্রাবাসে থাকার সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অথচ কয়েক দশক আগে এসব ছাত্রাবাস ছাত্র-শিক্ষকে পরিপূর্ণ থাকত।

প্রথম আলোর একাধিক প্রতিবেদনে জানা যায়, দেশে নানা জায়গায় সরকারি স্কুল-কলেজে ছাত্রাবাস নির্মাণ হওয়ার পর সেগুলো পড়ে আছে। অন্যদিকে চট্টগ্রামের এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রাবাস থাকা সত্ত্বেও সেগুলোর কোনো সংস্কার নেই। জেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর নির্মাণ, মেরামত, সংস্কার কার্যক্রমের তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব জেলা প্রশাসকের।

এ বিষয়ে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের বক্তব্য হচ্ছে ছাত্রাবাসের গুরুত্ব বর্তমানেও আছে। শিক্ষকেরা ছাত্রাবাস পরিচালনা করতে অনীহা প্রকাশ করেন। ইতিমধ্যে তিনটি বিদ্যালয় পরিদর্শন করা হয়েছে। সব কটি বিদ্যালয় পরিদর্শন শেষে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হবে।

আমরা আশা করছি, ছাত্রাবাসগুলো দ্রুত সংস্কার করা হবে। প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার সুষ্ঠু মান রক্ষার্থে ছাত্রাবাসগুলোর পরিবেশ ফিরিয়ে আনা জরুরি। এত বড় শহরে সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ছাত্রাবাস এভাবে পরিত্যক্ত থাকতে পারে না।