Thank you for trying Sticky AMP!!

সম্পাদকীয়

এতিম–প্রতিবন্ধী মেয়েদের প্রতি কেন অবহেলা

এতিম ও প্রতিবন্ধী মেয়েরা নানাভাবে অবহেলার শিকার হয়। তাদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কারিগরি প্রশিক্ষণকেন্দ্রগুলো কতটা সহায়ক ভূমিকা রাখছে, তা নিয়ে আমাদের সন্দিহান হতে হয়। কারণ, কর্তৃপক্ষের সুনজর না থাকায় এসব প্রতিষ্ঠানকে নানাভাবে ধুঁকতে হয়।

যেমন মৌলভীবাজারের এতিম ও প্রতিবন্ধী মেয়েদের কারিগরি প্রশিক্ষণকেন্দ্রের অধিকাংশ পদই শূন্য। বলতে গেলে সেখান থেকে কোনো সুফলই পাচ্ছে না এতিম, দুস্থ ও প্রতিবন্ধী মেয়েরা। তাহলে এই প্রশিক্ষণকেন্দ্র কেন চালু রাখা হয়েছে, এমন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

প্রশিক্ষণকেন্দ্রের লক্ষ্য হচ্ছে এতিম ও প্রতিবন্ধী দুস্থ মেয়ে, অপেক্ষাকৃত অসচ্ছল, মেধাবী ও দুস্থ পরিবারের সদস্য এবং সরকারি শিশু পরিবার থেকে আসা শিক্ষার্থীদের সম্পূর্ণ বিনা খরচে আবাসিক ব্যবস্থায় থাকা-খাওয়াসহ প্রশিক্ষণ প্রদান।

এ ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণার্থীদের বয়স ১৫ থেকে ২৫ এবং ন্যূনতম অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ হওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে দেখলে বিষয়টি দারুণ সম্ভাবনার জায়গা হয়ে ওঠার কথা ছিল। স্থানীয়ভাবে পিছিয়ে পড়া ও প্রতিবন্ধীদের স্বাবলম্বী করে তোলার সুযোগ থাকলেও সেটি সম্ভব হচ্ছে না প্রশিক্ষণকেন্দ্রটির পক্ষে।

প্রতিষ্ঠানটিতে বিভিন্ন পর্যায়ে পদ আছে ১৫টি, এর মধ্যে ১১টি পদই শূন্য দীর্ঘদিন ধরে। দায়িত্বরত বাকি চারজনের মধ্যে দুজন আবার অন্যত্র প্রেষণে আছেন। এই জনবল–সংকটে প্রশিক্ষণকেন্দ্রের অনুমোদিত ছয়টি বিষয়ের মধ্যে মাত্র দুটি বিষয়ে কার্যক্রম চালু আছে। প্রশিক্ষক না থাকায় কেন্দ্রটি চালুর সময় থেকেই যন্ত্রপাতি পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে। সংকট রয়েছে সেলাই মেশিন ও কম্পিউটারের।

আরও বড় বিষয় হচ্ছে, সম্পূর্ণ বিনা খরচে আবাসিক ব্যবস্থায় থাকা-খাওয়াসহ প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়, অথচ তা নিয়ে কোনো প্রচার–প্রচারণাই নেই। যাঁদের জন্য এ প্রতিষ্ঠান, তাদের অনেকে জানেনই না এমন সুযোগ–সুবিধা নিয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠান আছে। ফলে শিক্ষার্থীর আসন প্রায় সেশনেই অসম্পূর্ণ থাকে। তার মানে প্রতিষ্ঠানটিকে কার্যকর করে তুলতে বাস্তবসম্মত উদ্যোগের যথেষ্ট অভাব রয়েছে।

মৌলভীবাজার জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘অনেক দিন ধরে পদগুলো খালি। আমি তো চিল্লাচিল্লি করি। বিভাগীয় সমন্বয় সভায় আলোচনা করি। টেলিফোনে বলি।’

আমরা জানতে চাই, বিভাগীয় ও কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে প্রশিক্ষণকেন্দ্রটির পদগুলো পূরণে বাধা কোথায়? এটি কি শুধু প্রতিষ্ঠানের প্রতি অবহেলা; এতিম, দুস্থ ও প্রতিবন্ধী মেয়েদের প্রতিও কি নয়? আমরা আশা করব, সমাজসেবা অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এ ব্যাপারে দ্রুত বোধোদয় হবে।