Thank you for trying Sticky AMP!!

সম্পাদকীয়

একতারপুরবাসীর ভোগান্তি ঘুচবে কবে

কোটি টাকা খরচ করে সড়ক ছাড়াই বানানো হয়েছে সেতু। দিনের পর দিন কোনো ব্যবহার নেই। আমাদের সংবাদমাধ্যমগুলোতে পরিচিত ও নিয়মিত খবরগুলোর একটি এটি। অথচ অনেক এলাকায় মানুষকে ভোগান্তির শিকার হতে হয় একটি সেতু বা কালভার্টের অভাবে।

জনপ্রতিনিধিদের পেছনে ঘুরতে ঘুরতে হয়রান হন। তাঁদের আশ্বাসে একটি সেতুর জন্য তীর্থের কাক হয়ে অপেক্ষা করতে করতে নিজেরাই নেমে যান কিছু একটি করতে। স্বেচ্ছাশ্রমে ও গণচাঁদা তুলে বানিয়ে ফেলেন সাঁকো। প্রত্যন্ত অঞ্চলে অনেক অবহেলিত এলাকায় এমন দৃশ্য নতুন নয়।

সেই সাঁকো ঘিরেই তৈরি হয় যাবতীয় ব্যস্ততা। গতি আসে মানুষের জীবনে। নানা স্বপ্নপূরণের অবলম্বন হয়ে ওঠে সাঁকোটি। সেই সাঁকোই যখন ভেঙে যায়, এর চেয়ে বেদনার আর কিছু হতে পারে না। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের একতারপুর এলাকার বাসিন্দারা এমন দুর্ভাগ্যের শিকার হয়েছেন।

সেখানকার রায়গ্রাম ও মালিয়াট ইউনিয়নের ভেতর দিয়ে বয়ে গেছে চিত্রা নদী। কিন্তু সেতু না থাকায় শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বাজারে যেতে হতো অনেক দূর হেঁটে।

সরকারি কর্তৃপক্ষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে ব্যর্থ হয়ে ভগ্নহৃদয়ে নিজেদের সমস্যা নিজেরাই সমাধান করতে নেমে গেলেন এলাকার কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গত বছর ২৫ দিনের প্রচেষ্টায় বানিয়ে ফেললেন একটি সাঁকো। এলাকাবাসী তাঁদের বাঁশ, গাছ ও অর্থ দিয়ে সহায়তা দেন।

কিন্তু গত শুক্রবার রাতে চিত্রার তীব্র স্রোতে ভেসে যায় তাঁদের সেই স্বপ্নের সাঁকো। বন্ধ হয়ে যায় সাঁকো দিয়ে চলাচলও। কপালের লিখন যায় না খণ্ডন—এমন প্রবাদবাক্য সত্যি করেই যেন ফিরে এল পুরোনো দুর্ভোগ।

স্থানীয় শিক্ষার্থীদের সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নাহিদ হাসান বলেন, ‘ভেসে গেছে আমাদের স্বপ্নের সাঁকোটি। এলাকার মানুষের কষ্ট আবারও বেড়ে গেছে। আমরা এখন কী করব, ভেবে পাচ্ছি না।’ নদীর ধারে একতারপুর গ্রামে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। পাশেই বাজার ও একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়। নদীর অপর পাশে রয়েছে একটি দাখিল মাদ্রাসা।

এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কয়েক শ ছেলেমেয়ে পড়ালেখা করে। অন্তত অর্ধশত ছেলেমেয়ে নদী পার হয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যায়। বর্তমানে শিক্ষার্থীদের চলাচল বন্ধ রয়েছে। ক্লাসেও যেতে পারছে না তারা।

এ বিষয়ে এলজিইডির ঝিনাইদহ কার্যালয়ের নির্বাহী মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘এলাকার মানুষের প্রয়োজনে সেখানে সেতু বা বেইলি সেতু নির্মাণ করা সম্ভব।’ এখন সেই সম্ভব কাজটি বাস্তবায়িত হোক, আমরা চাই।