Thank you for trying Sticky AMP!!

সম্পাদকীয়

বালু উত্তোলন বন্ধ নিশ্চিত করতে হবে

অবাধে বালু উত্তোলনকারীরা দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছেন। কোনো ধরনের আইনের তোয়াক্কাই করছেন না তাঁরা। স্থানীয় ও রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছেন প্রশাসনকেও। এতে নদী ও খাল হুমকির মুখে পড়ছে। সেই সঙ্গে বাঁধ ও সেতুও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে।

আর কৃষকের ক্ষতির বিষয়টি তো বলার অপেক্ষা রাখে না। যেমনটি আমরা দেখতে পাচ্ছি শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায়। অবাধে বালু উত্তোলনের কারণে সেখানে ভোগাই নদ রক্ষা বাঁধ ও সেতু হুমকির মুখে পড়েছে। এতে আসন্ন বোরো মৌসুমে ১০ হাজার একর জমির আবাদ হুমকির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা।

প্রথম আলোয় প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ১৯৯৬ সালে উপজেলার যোগানিয়া ও মরিচপুরান ইউনিয়নের মাঝে জামিরাকান্দা এলাকায় ভোগাই নদের ওপর ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০০ মিটার দীর্ঘ রাবার ড্যাম ও সেতু নির্মাণ করা হয়। এই ড্যামের পানি ১১টি খালের মাধ্যমে পৌরসভাসহ উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের প্রায় ১০ হাজার একর জমিতে সেচ দিতে ব্যবহার করা হয়।

কয়েক বছর ধরে রাবার ড্যামের ভাটিতে ইটের দেয়ালের কাছ থেকে বালু উত্তোলন করায় দেয়ালের কিছু অংশ ভেঙে গেছে। এতে ড্যাম ও সেতুটি ঝুঁকিতে রয়েছে। সামনে বোরো মৌসুমের আগেই পানি ধরে রাখার জন্য রাবারটি হাওয়া দিয়ে ফোলানো হবে।

এতে পানির চাপে দেয়াল ভেঙে বাঁধ ও সেতু ধসে যেতে পারে বলে আশঙ্কা এলাকাবাসীর। এ অবস্থায় ড্যাম ও সেতু রক্ষায় বালু উত্তোলন বন্ধ করতেই হবে। যদিও বারবার বলার পরও বালু তোলা বন্ধ করা যায়নি। বালুর ব্যবসার জন্য এভাবে একটি বাঁধ ও সেতুকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের গাফিলতি রয়েছে বলে স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়।

রাবার ড্যাম নির্মাণের পর থেকে নির্বাচিত কমিটির মাধ্যমে এর রক্ষণাবেক্ষণ পরিচালিত হয়ে আসছিল। কিন্তু ২০১৪ সালের পর থেকে এটি দেখভালের কোনো কমিটি নেই। রাবার ড্যামটি দেখাশোনার দায়িত্ব এক ব্যক্তিকে দেওয়া হলেও দীর্ঘদিন বেতন-ভাতা পান না তিনি। উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা জানিয়েছেন, শিগগির একটি নির্বাচিত পরিচালনা কমিটি গঠন ও ক্ষতিগ্রস্ত জায়গাগুলো সংস্কারে উদ্যোগ নেওয়া হবে।

বাঁধ ও সেতু রক্ষা করতে হলে সবার আগে বালু উত্তোলন বন্ধ করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।

এরপর দ্রুত সংস্কারকাজ শুরু করতে হবে। আসন্ন বোরো মৌসুমে কৃষকদের ফসল আবাদ যেন কোনোভাবে বাধাগ্রস্ত না হয়, সংশ্লিষ্ট সবাইকে তা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিতে হবে।