Thank you for trying Sticky AMP!!

অফিসের সামনে ঘুষের রেট টাঙিয়ে দিন!

দেশের সর্বত্র দুর্নীতির ছড়াছড়ি। আর দুর্নীতি মানে ঘুষ ও অবৈধভাবে অর্থের লেনদেন। সেবার নামে সরকারি কর্মকর্তারা এসবের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন। গুটিকয়েক জায়গা ছাড়া সর্বত্র নীতি–নৈতিকতা বিসর্জনই দেখি। পকেট ভারী করার নেশায় মেতে উঠেছেন আমাদের সেবক নামের কর্মকর্তাদের অনেকে। ঘুষের বিষয়টি রীতিমতো মহামারি পর্যায়ে চলে গিয়েছে। সেখানে সেবকেরা এখন শোষকে পরিণত হয়েছে।

সরকারি অফিসগুলোতে এমন ব্যবহার করা হয়, মনে হয় যেন সাধারণ মানুষ এ দেশের সম্মানিত নাগরিক নয় বরং চাকর। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় পড়াশোনা করা, জনগণের টাকায় বেতন পাওয়া এসব কর্মকর্তা তাদের দায়িত্ব কতটা নীতির সঙ্গে পালন করেন, তা নিয়ে আমরা সন্দিহান।

অসাধু সরকারি চাকরিজীবী ভুলেই গেছেন তাদের চালক জনগণ। এক ফাইল সরাতে লেগে যায় মাসের পর মাস। একটি জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের কাজ সারতে লেগে যায় এক মাসেরও বেশি সময়। গুনতে হয় সরকার নির্ধারিত ফি’র অতিরিক্ত অর্থ। যেটাকে ঘুষ না বলে এখন ‘সম্মানী’ বলা হয়! সম্পূর্ণ ঘরে বসে জন্ম নিবন্ধন বাংলা থেকে ইংরেজিতে ট্রান্সলেট করার আবেদন করেও সরকার নির্ধারিত ফি’র বাইরে গিয়ে স্থানীয় অফিসে ডিজিটাল সেন্টার ফি নামে গুনতে হচ্ছে আরো ১৩০ টাকা। এরপরেও কাজের নেই কোনো অগ্রগতি।

ঘুষ বা অতিরিক্ত অর্থ এখন সমাজে নিয়মে পরিণত হয়েছে। এটা ওপেন সিক্রেট বিষয়। সবাই জানে এ রকম দিতে হয়, কিন্তু এটা যে ঘুষ তা কেউ বলে না। অসৎ মানুষের সংখ্যা এতটাই বেড়ে গেছে যে, সৎ মানুষগুলোর টিকে থাকাও যেন কষ্টকর।

এ রকম ঘুষখোর, দুর্নীতিবাজদের উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘এত রক্ত দেওয়ার পরে যে স্বাধীনতা এনেছি, চরিত্রের পরিবর্তন অনেকের হয় নাই। এখনও ঘুষখোর, দুর্নীতিবাজ, চোরাকারবারি, মুনাফাখোরি বাংলার দুঃখী মানুষের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। দীর্ঘ তিন বছর পর্যন্ত আমি এদের অনুরোধ করেছি, আবেদন করেছি, হুমকি দিয়েছি, চোরে নাহি শোনে ধর্মের কাহিনী।’

এমন কোনো সরকারি অফিস নেই যেখানে ঘুষের কারবার হয় না। এমনকি ঘুষ নিয়ে দর কষাকষিও করতে দেখা যায় অনেক অসাধু কর্মকর্তাকে। এমন দর-কষাকষি না করে ঘুষের রেটের তালিকা অফিসের সামনে টাঙিয়ে দিলে সাধারণ জনগণের ভোগান্তি অনেকাংশে লাঘব হবে বলে মনে করি। এটি বেশ স্বস্তিদায়কও!

আবু মো. ফজলে রোহান
চৌদ্দগ্রাম, কুমিল্লা
ই-মেইল: amfrohan@gmail.com