Thank you for trying Sticky AMP!!

আ.লীগের নতুন কমিটিতে তরুণদের জায়গা হয়নি, এখন শূন্য পদে চোখ

>৮১ সদস্যের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের ৩৯টি পদ এখনো শূন্য। বাদ পড়া নেতারাও আশায়।

আওয়ামী লীগের নতুন কমিটির এখন পর্যন্ত ঘোষিত তালিকায় তরুণদের জায়গা হয়নি। শূন্য পদগুলোতে তরুণ নেতাদের কতজন স্থান পান, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতারা ইতিমধ্যেই পদ পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। এ ছাড়া সম্পাদক–মণ্ডলী থেকে বাদ পড়া নেতাদের কেউ কেউ শূন্য পদে ফিরে আসছেন কি না, সেটাও আলোচনায় আছে।

গত শনিবার আওয়ামী লীগের ৮১ সদস্যের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের ৪২টি পদে নেতা নির্বাচন করা হয়েছে। এখনো সম্পাদকমণ্ডলীর ১০টি, কোষাধ্যক্ষ ও নির্বাহী কমিটির ২৮টি পদ শূন্য আছে। অর্থাৎ আরও ৩৯টি পদ পূরণ করতে হবে। নতুন কমিটিতে এখন পর্যন্ত শাজাহান খান ও মেহের আফরোজ প্রথমবার স্থান পেয়েছেন। অবশ্য তাঁরা দুজনই মন্ত্রিসভায় ছিলেন এবং একাধিকবার সাংসদ হয়েছেন। সেই অর্থে তাঁরা নতুন বা তরুণ নন।

আজ সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সভার পর পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হতে পারে। গঠনতন্ত্র অনুসারে, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্যের পদগুলো সভাপতিমণ্ডলীর পরামর্শে সভাপতি পূরণ করবেন।

২০১৬ সালের কমিটিতে বেশ কিছু তরুণ নেতা সম্পাদকমণ্ডলীতে স্থান পেয়েছিলেন। এর মধ্যে সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী বাদ পড়েছেন। শুধু বিপ্লব বড়ুয়া পদোন্নতি পেয়ে উপদপ্তর থেকে দপ্তর সম্পাদক হয়েছেন। বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন স্বপদেই আছেন। সাবেক ছাত্রলীগ নেত্রী মারুফা আক্তার নির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। এবারও সদস্য হিসেবেই থাকবেন বলে নেতারা মনে করছেন।

গত শনিবার অর্থ, শিল্প ও বাণিজ্য, শ্রম, ধর্ম এবং তথ্য ও গবেষণা—এই পাঁচটি বিষয়ভিত্তিক সম্পাদকের পদ ঘোষণা করা হয়নি। অর্থাৎ আগে যাঁরা এসব পদে ছিলেন, তাঁদের আর ফিরে আসার সম্ভাবনা কম।

অর্থ সম্পাদকের পদে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ও ধর্মবিষয়ক সম্পাদক পদে ধর্মমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেছেন। এখন পর্যন্ত বিষয়ভিত্তিক সম্পাদকদের যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে কোনো মন্ত্রী–প্রতিমন্ত্রীর স্থান হয়নি। ফলে এ দুটি সম্পাদকের পদেও কোনো মন্ত্রী স্থান পাবেন না বলে দলীয় নেতারা মনে করছেন। এর বাইরে তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, শ্রমবিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান এবং শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক আবদুস সাত্তারও দীর্ঘদিন একই পদে ছিলেন। বিদায়ী কমিটির উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম এবং নির্বাহী সদস্য রিয়াজুল কবির কাওছারের সম্পাদকমণ্ডলীতে আসার সম্ভাবনা রয়েছে বলে দলের নেতারা মনে করছেন। এ ছাড়া পাঁচটি বিষয়ভিত্তিক সম্পাদক, তিনটি সাংগঠনিক সম্পাদক এবং উপদপ্তর ও উপপ্রচার সম্পাদকের পদ পেতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতারা দৌড়ঝাঁপ করছেন। 

এর মধ্যে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাবেক নেতারা নিজেদের ‘অবদানের’ কথা প্রচার শুরু করেছেন। বিশেষ করে এক–এগারোর সময় কার কী ভূমিকা ছিল, সেসব ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। কোষাধ্যক্ষ পদে এইচ এন আশিকুর রহমান চার মেয়াদে দায়িত্বে ছিলেন। এই পদে তরুণ আসার সম্ভাবনা কম বলে মনে করছেন নেতারা। অভিজ্ঞ নেতা কিংবা পেশাজীবী কাউকে এ পদে আনা হতে পারে।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্যদের ২৮টি পদের মধ্যে আগের কমিটিতেই দুটি পদ শূন্য ছিল। এবার সেই কমিটি থেকে তিনজনের পদোন্নতি হয়েছে। ফলে পাঁচজন নতুনকে নেওয়ার সুযোগ আছে। ২০১৬ সালে ১২ জন নির্বাহী সদস্য প্রথমবার গঠিত কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান পান। বাকিদের একটা বড় অংশই গুরুত্বপূর্ণ সাংসদ।

আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, এবার কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বাদ পড়া নেতাদের মধ্যে গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন। ফলে তাঁদের দলের কোনো পর্যায়েই না রাখা হলে সেটা বড় ঘটনাই হবে। তাই কেউ কেউ মনে করছেন, এই নেতাদের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য করা হতে পারে। এ ছাড়া আগের কমিটির তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন এবং সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহউদ্দিন সিরাজ সাংসদ নন। কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বাদ পড়ার পর তাঁদের আর কোনো সাংগঠনিক বা সরকারি দায়িত্ব থাকছে না। ফলে তাঁদের নির্বাহী সদস্য পদে রেখে দেওয়া হতে পারে।

আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জেলা পর্যায়ের কিছু ত্যাগী ও প্রবীণ নেতাকে সব সময়ই কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান দেন দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা। বিশেষ করে যেসব জেলা নেতার দলে ভূমিকা আছে, কিন্তু মন্ত্রী–সাংসদ করা সম্ভব হয়নি।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্যাহ প্রথম আলোকে বলেন, নবীন–প্রবীণের সমন্বয়েই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি পূর্ণ করা হবে। এখন পর্যন্ত সভাপতিমণ্ডলীর সব পদ পূরণ করা হয়েছে। সেখানে সাধারণত তরুণেরা থাকেন না। তবে যে ৩৯টি পদ শূন্য আছে, সেগুলোতে তরুণ মুখ থাকবে।