Thank you for trying Sticky AMP!!

এসএম হলে নিজের কক্ষ থেকে বিতাড়িত ছাত্রলীগ নেতা

সলিমুল্লাহ মুসলিম হল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: প্রথম আলো ফাইল ছবি

হল প্রশাসনের কাছ থেকে কক্ষ বরাদ্দ পেয়েও সেই কক্ষে থাকার ‘অধিকার’ পাচ্ছেন না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের (এসএম হল) ছাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসম্পাদক এস এম বাপ্পী। ছাত্রলীগের প্যানেল থেকে নির্বাচিত হল সংসদের সহসভাপতিসহ (ভিপি) কয়েকজন সদস্য তাঁকে কক্ষ থেকে বিতাড়িত করেছেন, তাঁর ব্যবহৃত জিনিসপত্র ফেলে দিয়েছেন। এ বিষয়ে হল প্রশাসন বলেছে, ‘বলতে কোনো দ্বিধা নেই, আমরা এখন অসহায়।’

গতকাল শনিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে বাপ্পীর জিনিসপত্র হল থেকে বের করে দেন এসএম হল সংসদের ভিপি কামাল হোসেন, পাঠকক্ষ সম্পাদক সোহরাব সাগর ও সমাজসেবা সম্পাদক মিলনসহ ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা। জিনিসপত্র বের করার পর বাপ্পীকে তাঁরা গণরুম হিসেবে ব্যবহৃত ১৭৯ নম্বর কক্ষে যেতে বলেন। পরে বাপ্পী হলের বারান্দায় রাত কাটান।

এ বিষয়ে জানতে এসএম হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মাহবুবুল আলম জোয়ার্দারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। তবে কথা হয় হলটির আবাসিক শিক্ষক অধ্যাপক সাব্বীর আহমেদের সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোর কাছে হল প্রশাসনের অসহায়ত্বের কথা ব্যক্ত করেন। বলেন, ‘বলতে কোনো দ্বিধা নেই, আমরা এখন অসহায়। আমরা ছাত্রকে কক্ষ অ্যাটাচ (বরাদ্দ) দিয়েছি, অথচ তাঁরা (হল সংসদের ভিপিসহ ছাত্রলীগ নেতারা) সেখানে ছাত্রটিকে থাকতে দিচ্ছে না।’

তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এসএম হল সংসদের ভিপি কামাল হোসেন৷ তিনি প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, ‘এ ধরনের কোনো কিছুর সঙ্গেই আমি জড়িত নই।’ তিনি বলেন, ‘আমি এখন ঢাকার বাইরে আছি। ঢাকায় এসে এ বিষয়ে কথা বলব।’

ভুক্তভোগী বাপ্পী প্রথম আলোর বলেন, শনিবার বেলা দুইটার দিকে তিনি নিজের কক্ষে (১০২ নম্বর) ঘুমাচ্ছিলেন। তখন হল শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি আরিফুল ইসলাম তাঁকে ফোন করে কক্ষ ছেড়ে দিতে বলেন। কক্ষের বাইরে গিয়ে হল সংসদের ভিপি কামাল হোসেন, পাঠকক্ষ সম্পাদক সোহরাব সাগর, সমাজসেবা মিলন খান ও হল শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মো. নাজমুলকে দেখতে পান তিনি। তাঁরা তাঁকে (বাপ্পী) বলেন, ‘তোমাকে এই রুম থেকে বের হয়ে যেতে হবে। এখানে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক পান্থ থাকবে।’ তবে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম পান্থ ১০২ নম্বর কক্ষে আসন বরাদ্দ পাননি, পেয়েছেন ৬৮ নম্বর কক্ষে। ওই কক্ষ নিয়ে একটি সমস্যা হওয়ায় পান্থ সেখানে থাকতে পারছেন না।

এসএম বাপ্পী অভিযোগ করে বলেন, ‘হল সংসদের নেতাদের দাবির জবাবে আমি বললাম, আমি এই কক্ষ ছেড়ে যাব না৷ তাঁরা আমাকে বললেন, তুমি এর বিরোধিতা করতে পারবে না। রুমের অ্যাটাচমেন্ট চেঞ্জ (বরাদ্দ পরিবর্তণ) করা আমাদের দুই মিনিটের ব্যাপার। হল সংসদের ভিপিও একই কথা বলছিলেন। আমি তাঁদের বলি, অযৌক্তিক কথা বললে তা আমি মেনে নেব না। পরে তাঁরা চলে গেলেও রাত দেড়টার দিকে মিলন খান ও সোহরাব সাগর আবারও আমার রুমে আসেন। তাঁরা রুম থেকে আমার জিনিসপত্র বের করে দেন। তাঁরা আমাকে আমার রুম ছেড়ে ১৭৯ নম্বর রুম, যেটি গণরুম হিসেবে ব্যবহৃত হয়, সেখানে যেতে বলে। আমার রুমে একজন অছাত্র থাকেন। ওই অছাত্রকে হলে রাখতে তাঁরা স্ট্যান্টবাজি করেন।’

বাপ্পী জানান, কক্ষ থেকে বিতাড়িত হওয়ার পর শনিবার সারারাত তিনি হলের বারান্দায় ছিলেন। হলের প্রাধ্যক্ষ আবাসিক শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে তিনি বিষয়টি জানিয়েছেন। হলের আবাসিক শিক্ষক সাব্বীর আহমেদ তাঁকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি তাঁকে ১০২ নম্বর কক্ষে থাকতে বলেছেন। তবে এখনও তিনি ওই কক্ষে উঠতে পারেননি।

জানতে চাইলে এসএম হলের আবাসিক শিক্ষক অধ্যাপক সাব্বীর আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘হল প্রশাসনকে তাঁরা (হল সংসদের ভিপিসহ ছাত্রলীগ নেতারা) মানছে না, পাত্তাও দিচ্ছে না। এর একটা বিহিত করতেই হবে।’