Thank you for trying Sticky AMP!!

খন্দকার মোশাররফ বললেন, জনগণ উপযুক্ত সময়ে সিদ্ধান্ত নেবে

বিএনপির এক কর্মিসভায় বক্তব্য দেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন। কাজীর দেউড়ি, চট্টগ্রাম, ২৩ এপ্রিল। ছবি: জুয়েল শীল

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, জনগণ তৈরি হয়ে রয়েছে কোন দিন তাঁরা ভোট দিতে পারবেন। উপযুক্ত সময়ে তাঁরা নিজেদের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন। 

খন্দকার মোশাররফ বলেন, বিএনপি জনগণের সঙ্গে আছে এবং থাকবে। ভালোয় ভালোয় সরকার জনগণের দাবি মেনে নিক। নইলে গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটানো হবে।
আজ সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের কাজীর দেউড়ি এলাকার একটি কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত বিএনপির এক কর্মিসভায় কথাগুলো বলেন খন্দকার মোশাররফ। চট্টগ্রাম নগর বিএনপি এই কর্মিসভার আয়োজন করে।
আজ চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সভাপতি শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে কর্মিসভায় প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছিরউদ্দিন ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান। নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেমের সঞ্চালনায় কেন্দ্রীয় ও নগর বিএনপি ছাড়াও তৃণমূলের নেতারা আন্দোলন-সংগ্রাম নিয়ে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন।
কর্মিসভায় মোশাররফ হোসেন বলেন, খালেদা জিয়া, দেশের গণতন্ত্র এবং আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এক সুতোয় গাঁথা। খালেদা জিয়াকে নির্বাচনের বাইরে রাখতে সরকার মিথ্যা মামলায় কারাগারে ঢুকিয়েছে। দেশে যদি আইনের শাসন থাকত, তাহলে আপিলের মাধ্যমে উচ্চ আদালত থেকে খালেদা জিয়া মুক্তি পেতেন।
মোশাররফ হোসেন বলেন, তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে কারাগারের একটি নির্জন কক্ষে রাখা হয়েছে, যেখানে থাকা-খাওয়ার তেমন ভালো পরিবেশ নেই। খালেদা জিয়া আগে থেকেই অসুস্থ ছিলেন। সুচিকিৎসার করতে দেওয়া হচ্ছে না। ইউনাইটেড হাসপাতালসহ দেশের যেকোনো উন্নত হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসার সুযোগ দিতে হবে। খালেদা জিয়া এবং বিএনপিকে বাইরে রেখে দেশে কোনো নিরপেক্ষ, প্রতিনিধিত্বমূলক ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে না। জনগণ তা হতে দেবে না।
মোশাররফ হোসেন নেতা-কর্মীদের বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, কিছু অনলাইন নিউজ পোর্টাল বিএনপি এবং আন্দোলন নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। কিন্তু বিভ্রান্তিকর সংবাদ কেউ যেন বিশ্বাস না করে।
লন্ডনে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে মোশাররফ হোসেন বলেন, তারেক রহমানকে ফিরিয়ে আনতে নাকি আলোচনা চলছে। কিন্তু শেখ হাসিনা যেভাবে চান, সেভাবে নয়। তারেক জিয়া বীরের বেশে বাংলাদেশে ফিরবেন।

কর্মিসভায় আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, গণতন্ত্র এবং ‘গণতন্ত্রের মাতা’ যেখানে বন্দী, সেখানে নির্বাচনের প্রশ্ন কোত্থেকে আসে? খালেদা জিয়াকে মুক্তি এবং ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ (সমান মাঠ) তৈরি ছাড়া নির্বাচন হবে না।
আমীর খসরু আরও বলেন, ‘সাংবাদিকেরা আমাকে জিজ্ঞেস করেন বিএনপি নির্বাচনে যাবে কি না। কিন্তু বিএনপি জনগণের দল। নির্বাচন করতে বিএনপির প্রস্তুতি লাগে না। আমাদের নির্ভরশীলতা জনগণ। আওয়ামী লীগের অন্য জায়গায়। আওয়ামী লীগের বোঝা উচিত, বেগম জিয়াকে কারাগারে রেখে নির্বাচনের আয়োজন জনগণ বানচাল করে দেবে।’
মীর মোহাম্মদ নাছিরউদ্দিন বলেছেন, পুলিশ অত্যন্ত বিচক্ষণ। তারা পাঁচজনের মিছিল দেখলে লাঠিপেটা করে। লাখো জনতা দেখলে তাদের আচরণ বদলে যায়। তাই সরকারের পতন ঘটাতে হলে রাজপথে নেমে আসতে হবে।
মীর নাছির বলেন, বামপন্থীদের মতো লিফলেট বিতরণ করে লাভ নেই। গণ-অভ্যুত্থান ছাড়া কোনো সরকারের পতন হয় না। এই সরকারকে হঠাতে হলে গণ-অভ্যুত্থান ঘটাতে হবে।
তৃণমূল নেতাদের বক্তব্য: চট্টগ্রামের পাঁচলাইন থানা বিএনপির সভাপতি মামুনুল ইসলাম বলেছেন, ‘ঠান্ডা রাজনীতি আমরা চাই না। কাফনের কাপড় পরে আমাদের রাস্তায় নামতে হবে। রাস্তায় নামলে সরকারের পতন ঘটবে।’
চট্টগ্রাম নগর যুবদলের সভাপতি কাজী বেলালউদ্দিন বলেছেন, ‘“আমার নেত্রী আমার মা, জেলে রাখতে দেব না”। কিন্তু এই স্লোগান যাঁরা দিয়েছেন, তাঁরা কোথায়? আমরা কি আমাদের দায়িত্ব পালন করতে পেরেছি? অথচ আমাদের নেত্রী আড়াই মাস ধরে কারাগারে বন্দী।’
চট্টগ্রাম নগর মহিলা দলের সভানেত্রী মনোয়ারা বেগম বলেছেন, ‘একজন সিনিয়র নেতা বলেছিলেন নেতা-কর্মীদের সামনে দুটি পথ খোলা আছে। একটি রাজপথ এবং অন্যটি জেল। কিন্তু আমি মনে করি তিনটি পথ খোলা আছে। তৃতীয়টি হলো মৃত্যু। মৃত্যুর বিনিময়ে নেত্রীকে কারাগার থেকে বের করে আনতে হবে।’