Thank you for trying Sticky AMP!!

খালেদার মন্তব্যের প্রতিবাদে গুলশানে অবস্থান কর্মসূচি

মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মন্তব্যের প্রতিবাদে গতকাল রাজধানীতে গুলশান-২ গোলচত্বরে বিক্ষোভে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি নাসির উদ্দীন ইউসুফসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ও সংগঠনের নেতা–কর্মীরা অংশ নেন l প্রথম আলো

মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার করা মন্তব্যের প্রতিবাদে গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বিভিন্ন সংগঠন। একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সন্তান ও স্বজনেরাসহ প্রগতিশীল বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা এতে অংশ নেন।
খালেদা জিয়ার বাসভবন ঘেরাও করতে যাওয়ার আগে গুলশান ২ নম্বর গোলচত্বরে বিক্ষোভ প্রদর্শন ও মানববন্ধন করেন এসব সংগঠনসহ বিপুলসংখ্যক মানুষ। গোলচত্বরের অদূরে ৭৯ নম্বর সড়কে খালেদা জিয়ার বাসভবন এবং ৮৬ নম্বর সড়কে তাঁর রাজনৈতিক কার্যালয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, মানববন্ধনের পর বিক্ষোভকারীরা খালেদা জিয়ার বাসভবনের দিকে এগোনোর চেষ্টা করে পুলিশের প্রতিবন্ধকতায় পড়েন। কূটনৈতিক এলাকা হওয়ায় সেখানে সভা, সমাবেশ, মিছিল করার অনুমতি নেই বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হলে তাঁরা গোলচত্বরে ফিরে আসেন। বেলা ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত তাঁরা সেখানে অবস্থান নিয়ে খালেদা জিয়ার শাস্তির দাবিতে বক্তব্য ও বিভিন্ন স্লোগান দেন।
কর্মসূচিতে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির শহীদের সংখ্যা নিয়ে মন্তব্যের জন্য খালেদা জিয়াকে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে বলেন। তিনি এ বিষয়ে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করার এবং জাতীয় সংসদের আগামী অধিবেশনেই ‘মুক্তিযুদ্ধ অস্বীকার অপরাধ আইন’ প্রণয়নের দাবি জানান।
কর্মসূচিতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, বিচারপতি শামসুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি নাসির উদ্দীন ইউসুফ, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল, শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, ভাস্কর ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি তুরিন আফরোজ প্রমুখ অংশ নেন।
তারানা হালিম বলেন, খুব শিগগির জাতীয় সংসদে ‘মুক্তিযুদ্ধ অস্বীকার অপরাধ আইন’ প্রণয়নের প্রস্তাব করা হবে।
কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে পুলিশ ওই গোলচত্বরের উত্তর পাশের সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়।

২১ ডিসেম্বর রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের আলোচনা সভায় খালেদা জিয়া মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে বলেন, ‘আজকে বলা হয়, এত লাখ লোক শহীদ হয়েছেন। এটা নিয়েও অনেক বিতর্ক আছে যে আসলে কত লক্ষ লোক মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন। নানা বই-কিতাবে নানা রকম তথ্য আছে।’
এরপর ২৫ ডিসেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়ার ওই বক্তব্যে সমর্থন জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা জরিপ করে দেখতে বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। একাত্তরে শহীদ বুদ্ধিজীবীরা ‘নির্বোধের মতো মরেছে’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এ বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল বিবিসি বাংলাকে বলেন, খালেদা জিয়ার বক্তব্য নিয়ে বিতর্ক তৈরি করার মতো কোনো বিষয় নেই বলেই তাঁরা মনে করছেন। তা ছাড়া তিনি মুক্তিযুদ্ধে কতজন শহীদ হয়েছেন, সে সংখ্যাও উল্লেখ করেননি।

মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়া মন্তব্যটা কোন উদ্দেশ্যে করেছেন, সেটা তো জানতে হবে সবাইকে। কোনো সরকারই এটার সঠিক সংখ্যা নিরূপণ করেনি—যেটা হওয়া উচিত ছিল। সেটাই নেত্রী বোঝাতে চেয়েছেন, বলতে চেয়েছেন। হলোকাস্ট ডিনায়াল আইনের মতো আইন তৈরির দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটাকে বিএনপি নেগলেক্ট করছে। কারণ, এ ধরনের জিনিস ফ্যাসিজম থেকে আসে। আমরা একটা গণতান্ত্রিক দেশে এ ধরনের অ্যাক্ট করার কথা কেউ চিন্তা করতে পারি!’