Thank you for trying Sticky AMP!!

চট্টগ্রামে সিআরবির বিষয়টি যথাযথ জায়গায় উপস্থাপন করবেন তথ্যমন্ত্রী

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, চট্টগ্রামে সিআরবিতে পরিবেশ নষ্ট হোক, গাছপালা কাটা হোক, ব্যক্তিগতভাবে তিনি চান না। এ বিষয়টি তিনি যথাযথ জায়গায় উপস্থাপন করবেন।

মন্ত্রী আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রামে মহানগরের সিআরবিতে বেসরকারি উদ্যোগে হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটা হলে নগরের সবুজ কমে যাবে এবং পরিবেশের ক্ষতি হবে বলে বিরোধিতা করছেন অনেকে।

এ বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সিআরবি চট্টগ্রামের একটি নান্দনিক ও ঐতিহাসিক জায়গা, সেটি নিয়ে চট্টগ্রামের মানুষের মাঝে ব্যাপক অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে বলিষ্ঠ পদক্ষেপ রাখার কারণে তিনি ‘চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থ’ পদকে ভূষিত হয়েছেন।

সুতরাং বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রীর হাত দিয়ে পরিবেশ নষ্ট হয় এমন কোনো কাজ হবে না। সিআরবিতে পরিবেশ নষ্ট হোক, গাছপালা কাটা হোক, সেটি তিনিও (মন্ত্রী) ব্যক্তিগতভাবে চান না​ উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সরকার জনগণের বিপক্ষে কোনো কাজ করবে না। আমিও বিষয়টি যথাযথ জায়গায় উপস্থাপন করব।’

হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘সমাজের অব্যক্তদের পক্ষে আমাদের কথা বলা দরকার, সমাজ যেদিকে তাকায় না, সেদিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করতে পারেন একজন সাংবাদিক। সাংবাদিকেরা ক্ষমতাহীনদের ক্ষমতাবান এবং অব্যক্তদের পক্ষে কথা ব্যক্ত করতে পারেন। লেখনীর মাধ্যমে সমাজকে উজ্জীবিত করতে পারেন। একজন সাংবাদিক যার মুখে ভাষা নেই তাকে ভাষা দিতে পারেন। যে কথা বলতে ভুলে গেছে কিংবা ভয় পায়, তার মুখে ভাষা দিতে পারেন। যে স্বপ্নও দেখতে ভুলে গেছে, স্বপ্ন দেখতে ভয় পায়, তাকে স্বপ্ন দেখাতে পারেন।’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘দেশটা যে এগিয়ে যাচ্ছে, সে গল্পটাও মানুষকে আমাদের জানাতে হবে। তাহলে মানুষ আরও স্বপ্ন দেখবে। দেশও স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছে যাবে। মানবিক প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা, যাঁকে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম মাদার অব হিউম্যানিটি আখ্যা দিয়েছেন, তিনি ২০১৪ সালে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করেছেন। অথচ এটার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক কোনো জোরালো দাবি ছিল না।’

অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সমাজে এমন অনেক বিষয় আছে, সমাজ সেদিকে তাকায় না। রাস্তাঘাটে ঘুরে বেড়ানো পাগলের পেছনেও কিছু একটা গল্প আছে, ফ্যাল ফ্যাল করে তাকানো মানুষটার কিছু বেদনা আছে, সেই বেদনা শোনার সময় সমাজের নাই, সমাজ তাকে জিজ্ঞেস করে না, একজন অনুসন্ধানী সাংবাদিক সেটি অনুসন্ধান করে সমাজের সামনে তুলে ধরতে পারেন।

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা একটি বহুমাত্রিক সমাজে বসবাস করি। এখানে বিতর্ক থাকবে, সমালোচনা থাকবে। কিন্তু এটির পাশাপাশি ভালো কাজের প্রশংসাও হতে হয়। ভালো কাজের যদি প্রশংসা না হয়, তাহলে যারা ভালো কাজ করে, তারা কখনো উৎসাহ পাবে না। সরকারে থাকলে সবই যে খারাপ, সেটি বিশেষ করে বিএনপিসহ কেউ কেউ মনে করে। তারা সরকারে থাকলে সব ভালো, আমরা সরকারে থাকলে সব খারাপ।’ দেশটা কি এমনি এমনিতে এগিয়ে গেল—প্রশ্ন রাখেন তথ্যমন্ত্রী।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট সাংবাদিকদের জন্য ভরসার জায়গা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোনো সাংবাদিক মারা গেলে তাঁর পরিবার তিন লাখ টাকা পাচ্ছে, কেউ অসুস্থ হলেও টাকা পাচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে কল্যাণ ট্রাস্টে সিদ্ধান্ত হয়েছে, সাংবাদিক পরিবারের সদস্যদের পড়ালেখার ক্ষেত্রেও অনুদান দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে নীতিমালাও চূড়ান্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশেই শুধু সাংবাদিকদের করোনার সময় এককালীন সহায়তা দেওয়া হয়েছে, সেটা আশপাশের ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটানসহ কোনো দেশে করেনি। প্রধানমন্ত্রী ১০ কোটি টাকা দিয়েছেন করোনাকালীন সহায়তার জন্য। ঈদুল আজহার আগেই সেগুলোর বিতরণ শুরু হয়েছে।

চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) আয়োজনে সভাপতি মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সম্পাদক সবুরের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, সিইউজের সহসভাপতি অনিন্দ্য টিটু এবং সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ শামসুল ইসলাম।