Thank you for trying Sticky AMP!!

চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগে নতুন মেরুকরণ

আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেতা এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর ফাতেহায় যোগ দেন সাংসদ এম এ লতিফ। এ সময় মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরীর সঙ্গে খোশগল্পে মেতে ওঠেন তিনি। গতকাল দুপুরে নগরের চশমা হিলে। সংগৃহীত

মহিউদ্দিন চৌধুরী বেঁচে থাকতে তাঁর সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল না সাংসদ এম এ লতিফের। লালদীঘি মাঠের জনসভায় হাজারো মানুষের সামনে লতিফের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়েছিলেন তিনি। বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃত করার অভিযোগ এনে লতিফের বিরুদ্ধে আন্দোলনের পাশাপাশি আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি তুলেছিলেন চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের প্রয়াত সভাপতি মহিউদ্দিন। তাঁর মৃত্যুর পর ধীরে ধীরে পরিস্থিতি পাল্টে যায়।

গতকাল রোববার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের চশমা হিলে প্রয়াত নেতার বাসভবনে মেজবান অনুষ্ঠানে মহিউদ্দীনের প্রশংসা করার পাশাপাশি তাঁর পরিবারের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার ইঙ্গিত দিয়েছেন আওয়ামী লীগের আলোচিত এই সাংসদ। মহিউদ্দিন চৌধুরীর বড় ছেলে মহিবুল হাসান চৌধুরী আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক।

গতকাল চশমা হিলের বাসভবনে মহিউদ্দিন চৌধুরীর দুই ছেলের সঙ্গে খোশগল্প করেছেন সাংসদ লতিফ। রাজনীতি নিয়ে কথা বলেছেন তিনি। এ সময় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের অনেক নেতা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। সাংবাদিকদের সাংসদ লতিফ বলেন, ‘মহিউদ্দিন ভাই মারা যাওয়ার পর তাঁর বাসায় এসেছি, জানাজায়ও গিয়েছি। তাঁর দুই ছেলে উচ্চশিক্ষিত। কারও সঙ্গে তাঁরা খারাপ আচরণ করেন না। যাদের জ্ঞানের গভীরতা কম, তারাই মানুষকে খাটো করে।

চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মেয়র আ জ ম নাছিরের সঙ্গে এই সাংসদের ঘনিষ্ঠতা ছিল। দুজনের সম্পর্ক এখন আর আগের মতো নেই বলে নেতা-কর্মীদের মধ্যে গুঞ্জন রয়েছে। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে লতিফ বলেন, ‘তাঁর (মেয়র) সঙ্গে দূরত্ব তৈরির কারণ আমার কাছে পরিষ্কার নয়। হয়তো তিনি ভালো বলতে পারবেন। ব্যক্তিগত কারণে কেউ যদি দূরত্ব তৈরি করে তার দায় আমার নয়।’

২১ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রাম সফর করবেন। কিন্তু তাঁর জনসভা হবে নগরের পাশের পটিয়া উপজেলায়। প্রধানমন্ত্রীর জনসভা পটিয়ায় চলে যাওয়ায় চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের নেতাদের ওপর সাংসদ লতিফ ক্ষুব্ধ। অবশ্য তিনি নিজেও নগরের সাংসদ।

সাংসদের করা মন্তব্যের বিষয়ে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের বক্তব্য জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। তবে মেয়রের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘মহিউদ্দিন ভাইয়ের সঙ্গে তাঁর (লতিফ) দূরত্ব ছিল। কিন্তু রাজনীতিতে শেষ কথা বলতে কিছু নেই। মেয়রের সঙ্গে দূরত্ব কেন সৃষ্টি হয়েছে তা তিনিই (সাংসদ) ভালো জানেন।’

গতকাল চশমা হিলের বাসায় সাংসদ লতিফের পাশে বসেছিলেন চট্টগ্রাম নগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদ মাহমুদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আফছারুল আমীনের (নগরের সাংসদ) জন্য এমপি লতিফের সঙ্গে মহিউদ্দিন চৌধুরীর দূরত্ব সৃষ্টি হয়। ২০০৯ সালে ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেল নিয়ে মূলত ঝামেলা হয়েছিল। কিন্তু এতে মহিউদ্দিন চৌধুরীর কোনো স্বার্থ ছিল না।

ফরিদ বলেন, মহিউদ্দিন চৌধুরীর জীবদ্দশায় সাংসদ লতিফ ভুল স্বীকার করে নিলে নতুন সম্পর্ক আরও সুন্দর হতো।
সাংসদ লতিফকে নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগে মেরুকরণ হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, কোনো মেরুকরণে তিনি নেই। সামনে নির্বাচন। নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে জিতিয়ে আনতে হবে। নৌকা যিনি পাবেন, তাঁর পক্ষে সবাই থাকবে। কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়।

এদিকে পটিয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মহাসমাবেশের আয়োজনের বিষয়ে সাংসদ লতিফ বলেন, ‘এই মহাসমাবেশ চট্টগ্রাম শহরে হতে পারত। আমরা যারা নগর আওয়ামী লীগের রাজনীতি করি, এটা আমাদের ব্যর্থতা। মহিউদ্দিন ভাই বেঁচে থাকলে চট্টগ্রাম শহরেই মহাসমাবেশ হতো। তাঁর অনুপস্থিতি এখন চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগ ভোগ করছে।’