Thank you for trying Sticky AMP!!

চাঁপাইনবাবগঞ্জ আ. লীগ কমিটির তালিকা নিয়ে অসন্তোষ

আওয়ামী লীগ

আংশিক কমিটি গঠনের ছয় মাস পর চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকা কেন্দ্রে জমা দেওয়া হয়েছে। কমিটির সভাপতি মঈনুদ্দীন মণ্ডল ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওদুদের বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতি ও দলীয় রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন—এমন ব্যক্তিদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার অভিযোগ উঠেছে।
তালিকা নিয়ে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি তাঁরা স্থানীয় সাংসদ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১) সামিল উদ্দিনকে জানিয়েছেন। সামিল উদ্দিন বলেন, ‘সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে পরামর্শ দিয়েছিলাম, অন্ততপক্ষে আংশিক কমিটির চারজন, এলাকার সাংসদ হিসেবে আমাকে ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাংসদকে নিয়ে আলোচনার ভিত্তিতে সমঝোতার মাধ্যমে কমিটি করা হোক। কিন্তু তাঁরা এ প্রক্রিয়াকে কোনো গুরুত্ব দেননি। জমা দেওয়া এ কমিটি নিয়ে নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে।’

গত ৬ মার্চ জেলা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্র থেকে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও দুজন সহসভাপতি মনোনীত করা হয়। সভাপতি পদে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মঈনুদ্দীন মণ্ডল ও সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন সাবেক সাংসদ আবদুল ওদুদ। পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকা জমা দেওয়ার নির্ধারিত সময় ছিল ১৫ সেপ্টেম্বর। পরে আরও ১৫ দিন সময় বাড়ানো হয়। গত শনিবার দুপুরে ঢাকায় দলের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামালের কাছে কমিটির তালিকা জমা দেন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।

যাঁকে যেখানে স্থান দেওয়া দরকার, তাঁকে সেখানেই স্থান দেওয়া হয়েছে। আবোলতাবোল সমালোচনা করলে চলবে না।
মঈনুদ্দীন মণ্ডল, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান

জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এমরান ফারুক জানান, সভাপতির ভাতিজা আরিফুর রেজা (ইমন) জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি। জমা দেওয়া তালিকায় তাঁকে জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদকের পদ দেওয়া হয়েছে। সভাপতির নাতি সামিউল ইসলাম (লিটন) জেলা যুব লীগের সভাপতি। তাঁকে সদস্য হিসেবে ঢোকানো হয়েছে, যা দলের নিয়মনীতির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। এ ছাড়া সভাপতির আরেক ভাতিজা বাবু মণ্ডলকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে তালিকা জমা দেওয়া হয়েছে। তিনি আগের কমিটিতেও একই পদে ছিলেন। এর আগে কোনো দিন তিনি দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। আগের কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক থাকার সময় তাঁকে কখনো দলের কোনো কর্মসূচিতে দেখা যায়নি।

এমরান ফারুক বলেন, ‘আমি আগে জেলা কমিটিতে দপ্তর সম্পাদক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলাম। অথচ বর্তমান কমিটিতে আমাকে তথ্য ও গবেষণা পদে রাখা হয়েছে, যা আমার জন্য অপমানজনক। যাঁদের কেউ চেনে না, যাঁরা দলে সক্রিয় নন, তাঁদের সম্মানজনক পদ দেওয়া হচ্ছে।’
মঈনুদ্দীন মণ্ডল প্রথম আলোকে বলেন, ‘যাঁকে যেখানে স্থান দেওয়া দরকার, তাঁকে সেখানেই স্থান দেওয়া হয়েছে। আবোলতাবোল সমালোচনা করলে চলবে না।’
তালিকায় স্থান পাননি জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শহীদুল হুদা। তিনি বলেন, কামাল উদ্দীন ও মোখলেসুর রহমান নামের দুজনকে জেলা কমিটির তালিকায় ঢুকিয়েছেন সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওদুদ। কামাল উদ্দীন অন্য দল করতেন। মোখলেসুর রহমান রহমান চালকলের মালিক ও পরিবহন ব্যবসায়ী। আগে কখনো দলের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। পৌরসভার মেয়র পদে নির্বাচন করার জন্য তিনি পৌর এলাকায় ত্রাণ তৎপরতা চালিয়ে আলোচনায় এসেছেন। দলে ভূমিকা বিবেচনা করে নয়, টাকাওয়ালা বিবেচনা করে জেলা কমিটিতে স্থান দেওয়া হচ্ছে।
এ ব্যাপারে আবদুল ওদুদ বলেন, ‘কামাল উদ্দীন ২০০৫ সালে আমার হাতে ফুলের তোড়া দিয়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। দলীয় কর্মসূচিতে দেখা না গেলেও তিনি আমাকে নানাভাবে সহযোগিতা করে আসছেন। মোখলেসুর রহমানও ২০০৫ সালে দলে যোগ দেন। সক্রিয় না হলেও করোনাকালে মানুষের মধ্যে ব্যাপক ত্রাণ তৎপরতায় সক্রিয় ছিলেন।’