Thank you for trying Sticky AMP!!

তথ্য প্রাপ্তি নিশ্চিতে তথ্য কমিশন আছে: তথ্যমন্ত্রী

সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘ছবির ভাষায় মহানায়ক বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ’ অ্যালবাম প্রকাশনা উৎসবে তথ্যমন্ত্রী

তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘তথ্য সংগ্রহ আর তথ্য চুরি এক জিনিস নয়। তথ্য সংগ্রহ করার নিয়ম আছে, সংগ্রহ আর চুরির মধ্যে প্রভেদ ভুলে এটিকে গুলিয়ে ফেলা ঠিক নয়।’

আজ বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আলহামরা নাসরিন হোসেন লুইজা সম্পাদিত ‘ছবির ভাষায় মহানায়ক বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ’ অ্যালবামের প্রকাশনা উৎসবে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন তথ্যমন্ত্রী। আজ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

দেশে তথ্য প্রকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে—টিআইবির এমন মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রী বলেন, ‘রোজিনার ঘটনাটি অনভিপ্রেত। সেটি আমি আগেও বলছি, আজও একই কথা বলব। কিন্তু দুর্নীতি বা যেকোনো বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের জন্য মন্ত্রণালয় বা যেকোনো অফিসে সাংবাদিকেরা যেমন আবেদন করতে পারে, নাগরিকেরাও করতে পারে। সে পদ্ধতিতে না পেলে তথ্য কমিশন আছে। সেখানে আবেদন করলে কমিশন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তথ্য দেওয়ার জন্য বলে এবং গাফিলতি হলে জরিমানাসহ নানা ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে। তথ্য কমিশন গঠনের পর এ পর্যন্ত ১ লাখ ২০ হাজারের মতো আবেদন নিষ্পত্তি হয়েছে। সুতরাং দুর্নীতি বা যেকোনো তথ্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করতেই জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকারই তথ্য কমিশন গঠন করেছে এবং সেভাবে মানুষ তথ্য পাচ্ছেও।’

‘প্রত্যেক মন্ত্রীকে দুটি শপথ নিতে হয়, একটি হচ্ছে মন্ত্রী হিসেবে আরেকটি রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা রক্ষা করার’ উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সে জন্য রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা রক্ষা করা যেকোনো মন্ত্রীর দায়িত্ব। টিআইবি এ ক্ষেত্রে তথ্য সংগ্রহ এবং তথ্য চুরি—দুটি বিষয়কে গুলিয়ে ফেলেছে বিধায় আমি টিআইবির এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত নই।’
উল্লেখ্য, ‘করোনাভাইরাস সংকট মোকাবিলা: কোভিড-১৯ টিকা ব্যবস্থাপনায় সুশাসনের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সরকার দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণের চেয়ে শতগুণ বেশি তৎপর তথ্য প্রকাশ নিয়ন্ত্রণে। করোনাকালে স্বাস্থ্য বিভাগের দুর্নীতি গণমাধ্যমে বেশি করে প্রকাশ পাওয়া শুরু হয়। এ সময় গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণে সরকারকে সচেষ্ট হতে দেখা গেছে। অনেক গণমাধ্যমকর্মীও নিগ্রহের শিকার হয়েছেন।

Also Read: দুর্নীতির চেয়ে তথ্য প্রকাশ নিয়ন্ত্রণে সরকার বেশি তৎপর: ইফতেখারুজ্জামান

তবে টিআইবির মতো সামাজিক সংগঠনের দরকার আছে, তারা স্বচ্ছতা, জবাবদিহি নিশ্চিত করার জন্য কাজ করে, এটিই স্বাভাবিক বলে উল্লেখ করেন হাছান মাহমুদ। একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘তবে অতীতে দেখা গেছে টিআইবি বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণার কথা বললেও অনেক ক্ষেত্রে গবেষণা না করে শুধু রিপোর্ট তৈরি করে সেটিকে গবেষণা বলে চালিয়ে দেয়, যেটি সমীচীন নয়। ২০১০ সালের শুরুতে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকাকালে বন বিভাগ নিয়ে টিআইবি যে চলতি দুর্নীতি রিপোর্ট প্রকাশ করেছিল, সেখানকার তথ্য ছিল পুরোনো, ২০০৫ থেকে ২০০৭ সালের। এ ছাড়া, টিআইবি যেসব দেশ থেকে ফান্ড পায় তাদের নিয়ে কোনো রিপোর্ট করতে দেখি না।’
টিকা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘টিকার জন্য একটি সূত্রের ওপর নির্ভরতা নিয়ে টিআইবি প্রশ্ন রেখেছে। মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশ হচ্ছে টিকা দেওয়া শুরু করা দেশগুলোর প্রথম সারির অন্যতম। এবং বাংলাদেশ শুরু থেকেই একটি সূত্রের ওপর নির্ভর করেনি, যত স্থান থেকে টিকা পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল, সবার সঙ্গেই যোগাযোগ করেছে। কিন্তু যখন টিকা বাজারে এল তখন সব দেশই নিজেদের প্রয়োজনটার কথা মাথায় রেখেছে, অন্য দেশকে টিকা দেওয়ার জন্য এগিয়ে আসেনি। তখন সিরাম ইনস্টিটিউট প্রথমে এগিয়ে এসেছে, বাংলাদেশ তাদের সঙ্গে চুক্তি করেছে এবং সেই মোতাবেক টিকাও এসেছে।

কিন্তু পরে ভারতের করোনা পরিস্থিতির অবনতি হয়। কিন্তু বাংলাদেশ অন্যান্য দেশের সঙ্গেও প্রথম থেকেই যোগাযোগ রাখার কারণেই এখন চীন ও অন্যান্য দেশ থেকেও টিকা আসছে। হঠাৎ করে যোগাযোগ করলে এত তাড়াতাড়ি টিকা আসত না।’
তথ্যমন্ত্রী ‘ছবির ভাষায় মহানায়ক বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ’ অ্যালবামের মোড়ক উন্মোচনকালে গ্রন্থটিতে বঙ্গবন্ধুর দুর্লভ কিছু ছবির এবং বাংলার পাশাপাশি ইংরেজিতে ছবির বর্ণনার প্রশংসা করেন। নিষ্ঠার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে এ বিষয়ে কাজের জন্য আলহামরা নাসরিন হোসেন লুইজা, গ্রন্থটির প্রকাশক বর্ণ প্রকাশ লিমিটেড এবং সম্পাদকের সহযোগীদের ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানান। মন্ত্রী বলেন, প্রকৃতপক্ষে বঙ্গবন্ধুকে নতুন প্রজন্মের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য এ ধরনের অ্যালবাম খুবই সহায়ক।