Thank you for trying Sticky AMP!!

যুবলীগের নেতৃত্ব কারা পাচ্ছেন

চলমান শুদ্ধি অভিযানে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় এসেছে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগ। দুর্বৃত্তদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ের জায়গা হয়ে ওঠা  সংগঠনটির জাতীয় সম্মেলন আগামী শনিবার। কারা আসছেন নতুন নেতৃত্বে, তা পরিষ্কার নয় কারও কাছে। তবে সংগঠনের ভেতরে অনেকেরই নাম আলোচনায় আছে।

আওয়ামী লীগের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা জানান, সাংগঠনিক নেত্রী হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই নতুন নেতৃত্ব চূড়ান্ত করবেন। তবে যুবলীগের বর্তমান কমিটি ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের মধ্যে সমন্বয় করে দুজনকে দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে, এমন সম্ভাবনাও রয়েছে।

চলতি মাসেই কৃষক লীগ, শ্রমিক লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন হয়েছে। তিন সংগঠনেই সদ্য সাবেক কেন্দ্রীয় কমিটির ভেতর থেকেই নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করা হয়েছে। কিন্তু যুবলীগের ক্ষেত্রে তেমনটা হবে কি না, তা এখনো পরিষ্কার নয়। যুবলীগে ৫৫ বছরের বয়সসীমা বেঁধে দেওয়ায় কেন্দ্রীয় কমিটির অধিকাংশ নেতা আর সুযোগ পাওয়ার কথা নয়। যদিও বর্তমান কমিটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যদের দুজন ও যুগ্ম সম্পাদকদের মধ্যে তিনজন আলোচনায় আছেন সংগঠনের নেতা-কর্মীদের মধ্যে। তাঁদের অন্তত একজন শীর্ষ দুই পদের একটি পেতে পারেন বলে নেতাদের অনেকে মনে করছেন।

যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির আটজন নেতার সঙ্গে এই প্রতিবেদকের কথা হয়। বর্তমান কমিটির ভেতর থেকে, নাকি এর বাইরে থেকে কাউকে নেতৃত্ব দেওয়া হবে, সেটা তাঁরা বুঝতে পারছেন না। তাঁরা মনে করছেন, বর্তমান কমিটির অধিকাংশ নেতা বিতর্কিত হয়ে পড়ায় বাইরে থেকে কাউকে নেতৃত্বে আনার সম্ভাবনা বেশি।

>ক্যাসিনো অভিযানে সবচেয়ে বেশি বিতর্কিত যুবলীগের নেতারা। ২৩ নভেম্বর ঠিক হবে এ সংগঠনের নতুন নেতৃত্ব।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে অভিযানের শুরুতে গ্রেপ্তার হন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া। এরপর একই কমিটির সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী (সম্রাট) ও সহসভাপতি এনামুল হক (আরমান) গ্রেপ্তার হন। এরপর যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীকে সংগঠন থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। একাধিক নেতা সংগঠন থেকে বহিষ্কৃত হন। যুবলীগের বেশ কয়েকজন নেতার দুর্নীতির অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

যুবলীগের চেয়ারম্যানকে বাদ দিয়েই সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি করা হয়েছে। আগামী শনিবার সম্মেলনে কাউন্সিলর, ডেলিগেট, অতিথিসহ প্রায় ৩০ হাজার নেতা-কর্মী উপস্থিত থাকতে পারেন বলে জানা গেছে। যুবলীগের সর্বশেষ সম্মেলন হয় ২০১২ সালের ১৪ জুলাই। তিন বছর মেয়াদি এই কমিটির মেয়াদ ​শেষ হয়েছে চার বছর আগে।

সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক চয়ন ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। নেতৃত্ব নির্বাচনের বিষয়ে সাংগঠনিক নেত্রীর কাছ থেকে নির্দিষ্ট করে কোনো নির্দেশনা আসেনি। সম্মেলনের মাধ্যমে এটি চূড়ান্ত করা হবে।

যুবলীগের নেতারা জানান, প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত যুবলীগের ৬টি কেন্দ্রীয় কমিটি হয়েছে। এর মধ্যে চারটিতে চেয়ারম্যান ছিলেন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মনি ও তাঁর নিকটাত্মীয়রা। তাই যুবলীগের প্রতিটা সম্মেলনেই ওই পরিবারের কেউ না কেউ আলোচনায় আসেন। এবার আলোচনায় আছেন শেখ ফজলুল হক মনির ছেলে শেখ ফজলে শামস (পরশ)। তিনি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা করেন। তাঁকে এর আগে রাজনীতিতে দেখা যায়নি। যুবলীগের নেতৃত্বের বিষয়ে তিনি আগ্রহী কি না​, সেটাও জানা যায়নি।

এ ছাড়া যুবলীগের বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির দুই সদস্য হলেন শেখ ফজলে ফাহিম ও শেখ ফজলে নাইম। তাঁরা দুজন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল করিম সেলিমের ছেলে।

যুবলীগের বর্তমান কমিটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আতাউর রহমান (আতা) ও বেলাল হোসাইনও সংগঠনের চেয়ারম্যান হতে চান। যুগ্ম সম্পাদকদের মধ্যে আলোচনায় আছেন মহিউদ্দিন আহমেদ (মহি), মামুন অর রশীদ ও সুব্রত পাল। মহিউদ্দিন আহমেদ প্রথম আালোকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাচাই-বাছাই করেই বর্তমান কমিটির ভেতর থেকে কাউকে দায়িত্ব দিতে পারেন। একই কথা বলেছেন আতাউর রহমান ও মামুন অর রশীদও।

বয়স ৫৫ বছরের বেশি হলেও বর্তমান কমিটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক চয়ন ইসলাম নেতৃত্ব পেতে পারেন, এমন আলোচনাও আছে। চয়ন ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, নেত্রী নতুন করে দায়িত্ব দিলে সংগঠন ঢেলে সাজানোর চেষ্টা করবেন।

এ ছাড়া সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের মধ্যে ইসহাক আলী খান (পান্না), বাহাদুর ব্যাপারী, অজয় কর খোকনের নাম আলোচিত হচ্ছে যুবলীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে।

যুবলীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ও প্রস্তুতি কমিটির সদস্যসচিব হারুনুর রশীদ প্রথম আলোকে বলেন, যুবলীগের ইতিহাসে কোনো জাতীয়
সম্মেলনেই ভোটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচিত হননি। সাংগঠনিক নেত্রী সবকিছু বিবেচনা করেই নতুন নেতৃত্ব চূড়ান্ত করবেন।