Thank you for trying Sticky AMP!!

রোহিঙ্গা শিবিরে করোনা নিয়ন্ত্রণের গল্প বিশ্বের জানা উচিত: পররাষ্ট্রসচিব

পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ মোমেন বলেছেন, 'প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও আমরা কক্সবাজারে ভালো পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করতে পেরেছি। এর ফলে অত্যন্ত জনবহুল রোহিঙ্গা শিবিরে করোনা নিয়ন্ত্রণ করা গেছে। এটি এক সফলতার গল্প, এটি বিশ্বের জানা উচিত।'

'রোহিঙ্গা রেসপন্স অ্যান্ড কোভিড১৯' শীর্ষক 'লেটস টক' অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রসচিব। আজ রোববার আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) এর আয়োজন করে।

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, রোহিঙ্গা শিবিরে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ না হওয়া আন্তর্জাতিক শরিকদের সঙ্গে সরকারের প্রাথমিক পরিকল্পনা এবং যৌথ প্রয়াসের ফল।

আজকের আলোচনায় রোহিঙ্গা শিবিরে বাহির থেকে লোক প্রবেশ এবং শিবির থেকে বাহিরে যাওয়ার বিষয়টি সীমাবদ্ধ রাখার মাধ্যমে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকার ও সহযোগিদের ভূয়সী প্রশংসা করেন জাতিসংঘ শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) বাংলাদেশের প্রতিনিধি স্টিভেন করলিস। তিনি অবশ্য বলেন, এই অবস্থা নিয়ে সন্তুষ্ট হলে চলবে না। আলোচনায় স্টিভেন জানান, ধীরে ধীরে স্থানীয়দের (রোহিঙ্গা শিবিরের কাছে থাকা) জন্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. মাহবুব আলম তালুকদার বলেন, রোহিঙ্গা শিবিরের কোভিড-১৯ পরিস্থিতি মোকাবিলায় জাতিসংঘের সংস্থাগুলি এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের সাথে সমন্বয় রেখে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আগের তুলনায় রোহিঙ্গা শিবির এলাকায় কর্মকর্তা ও কর্মীদের প্রবেশ ও বের হওয়ার হার ২০ শতাংশে কমিয়ে আনা হয়েছে। অন্যদিকে ক্যাম্প থেকে বাহিরে যাওয়ার হার কমিয়ে ১০ ভাগ করতে সক্ষম হয়েছি।

মাহবুব তালুকদার বলেন, মোট ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গার মধ্যে করোনা ভাইরাসের কারণে এ পর্যন্ত পাঁচজন মারা গেছেন। সুতরাং আমরা বিশ্বাস করি পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক পর্যায়ে নেই। আমরাও আতঙ্কিত নই। বেশ ভালো প্রস্তুতি রয়েছে আমাদের। আমরা সবার সহযোগিতায় কোভিড-১৯ ভালভাবেই মোকাবিলা করতে পারব।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন
আজকের আলোচনায় উঠে আসে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রসঙ্গ। এ বিষয় পররাষ্ট্র সচিব বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে প্রত্যাবাসন নেয়া উদ্যোগগুলো কিছুটা কমেছে। কিন্তু তা (প্রত্যাবসন) দ্রুত করার চেষ্টা করছি।

রাখাইন রাজ্যে আরও একবার নির্মূল কার্যক্রম ও সহিংসতা রোহিঙ্গাদের মধ্যে অনাস্থা সৃষ্টি করেছে বলে জানান পররাষ্ট্র সচিব। তিনি বলেন, 'বর্তমান পরিস্থিতি সহায়ক নয়।' এ সময় জবাবদিহিতার বিষয়গুলি স্মরণ করিয়ে দেন পররাষ্ট্র সচিব।

এ সময় লাইভে এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বলেন, সরকারের মূল লক্ষ্য রোহিঙ্গাদের রাখাইনে নিজ জন্মস্থান নিরাপদে প্রত্যাবাসন করা।

ভূমিধস, পাচার ও উগ্রবাদসহ রোহিঙ্গাদের একাধিক ঝুঁকি কমাতে সরকার ভাসান চরে রোহিঙ্গাদের নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে বলেও জানান তিনি। পররাষ্ট্র সচিব বলেন, 'আমি ভাসান চর পরিদর্শন করেছি। সেখানে সমস্ত সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড় আম্ফান ভাসান চরে কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি।'

পররাষ্ট্র সচিব জানান, বর্তমানে নারী ও শিশুসহ ৩০৬ জন রোহিঙ্গা সেখানে বসবাস করছেন।

বাংলাদেশের এই কার্যক্রমের যেন কোন ভুল ব্যাখ্যা তৈরি না হয় সে জন্য পররাষ্ট্র সচিব বলেন, 'তাই বলে এটা মনে করার কোনো সুযোগ নেই যে, রোহিঙ্গারা সীমাহীন সময়ের জন্য বাংলাদেশে বাস করবে। আমাদের মূল লক্ষ্য রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন করা।

সৌভিক দাসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক সুমাইয়া তাসনিম এবং রিলিফ ইন্টারন্যাশনালের স্বেচ্ছাসেবক প্রোগ্রাম থেকে জানি আলম।