শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক আছে: খালেদা জিয়া
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক আছে। তিনি বলেন, ‘আজকে বলা হয় এত লক্ষ লোক শহীদ হয়েছে। এটা নিয়েও অনেক বিতর্ক আছে।’
গতকাল সোমবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে খালেদা জিয়া এসব কথা বলেন। বিএনপির অঙ্গ সংগঠন মুক্তিযোদ্ধা দল এই সমাবেশের আয়োজন করে। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে মুক্তিযোদ্ধারা তাতে যোগ দেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম উল্লেখ না করে খালেদা জিয়া দাবি করেন, তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা চাননি। তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন। জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা না দিলে মুক্তিযুদ্ধ হতো না।
খালেদা জিয়া একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে সবাইকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়ার দাবি জানান। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধকালে সত্যিকারে যারা সাধারণ মানুষকে অত্যাচার করেছিল, বিএনপি তাদের বিচার চায়। কিন্তু সেটি হতে হবে আন্তর্জাতিক মানসম্মত, স্বচ্ছ।
আওয়ামী লীগ মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিক সম্মান দেয়নি-এমন মন্তব্য করে খালেদা জিয়া অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ নিজের ঘরে যুদ্ধাপরাধী পালছে, মন্ত্রী বানাচ্ছে। তাঁদের আত্মীয়স্বজনের অনেকে রাজাকার। তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
নির্বাচনে সেনা মোতায়েন চান: পৌর নির্বাচন নিরপেক্ষ করতে সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি জানান খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হলে বিএনপি ৮০ ভাগ ভোট পাবে। নির্বাচন কমিশনকে অথর্ব ও মেরুদণ্ডহীন আখ্যা দিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন বলেন, আওয়ামী লীগের নেতারা প্রতিনিয়ত নির্বাচনের আচরণবিধি ভাঙছেন, শেখ হাসিনা নিজেও ভেঙেছেন। কিন্তু নির্বাচন কমিশন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। নির্বাচন নিরপেক্ষ করতে হলে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে। কিন্তু শেখ হাসিনা সেনাবাহিনী দেবেন না।
খালেদা জিয়া বলেন, প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের পেছনে ষড়যন্ত্র আছে। ভোট ছিনতাই করে আওয়ামী লীগ দেখাবে ধানের শীষের পক্ষে জনগণ নেই। সব মানুষ নৌকার পক্ষে। কিন্তু নৌকা যে ডুবে গেছে, তা তারা ভুলে গেছে। তিনি সবাইকে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান।
খালেদা জিয়া বলেন, বিভিন্ন সিটি করপোরেশন ও পৌরসভায় বিএনপি-সমর্থিত নির্বাচিত মেয়রদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাঁদের অনেককে কারাগারে নেওয়া হয়েছে। আবার অনেককে বরখাস্ত করা হয়েছে। নেতা-কর্মীদের জেলে পুরে বিএনপিকে ধ্বংস করতে চায় সরকার।
খালেদা জিয়া দাবি করেন, ২০০৯ সালে বিডিআর বিদ্রোহের বিষয়টি শেখ হাসিনা ও তখনকার সেনাপ্রধান মইন উ আহমেদ জানতেন। তারপরও তাঁরা কোনো ব্যবস্থা নেননি।
মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দীন আহম্মেদ, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম প্রমুখ বক্তব্য দেন।