Thank you for trying Sticky AMP!!

সরকার পরিবর্তন চাই এখনই: ড. কামাল

ড. কামাল হোসেন। ছবি: ফোকাস বাংলা

উন্নয়নের নামে ঋণের বোঝা বাড়তে বাড়তে দেশ ভয়ংকর পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন। তিনি বলেন, ‘এভাবে চলতে দেওয়া যায় না। আন্দোলন ধীর-স্থির করলে হবে না। সরকার পরিবর্তন চাই এখনই। এ সরকারের ওপর দেশের মানুষের বিন্দুমাত্র আস্থা নেই।’

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগ আয়োজিত স্বাধীনতা দিবসের আলোচনাসভায় এসব কথা বলেন কামাল হোসেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘যদি সৎ সাহস থাকে, বুকের পাটা থাকে, তাহলে নির্বাচন দিন। ৩০ ডিসেম্বর কোনো নির্বাচন ছিল না। এটাকে ভুয়া বা প্রহসনও বলা যায় না, কাল্পনিক নির্বাচন হয়েছে।’

উন্নয়নের সমালোচনা করে ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা বলেন, ‘আইয়ুব-ইয়াহিয়া উন্নয়নের এসব বক্তৃতা দিত। উন্নয়ন শব্দটা বঙ্গবন্ধুর কাছে ঘৃণিত ছিল। তিনি উন্নয়ন চাননি, জনগণের অধিকার চেয়েছেন। জনগণের দৃষ্টি ঘোরানোর জন্য স্বৈরাচারী সরকার উন্নয়ন শব্দটি ব্যবহার করলে সেটি ঘৃণিত হয়ে যায়। আর এখনকার সরকার তো আইয়ুব-ইয়াহিয়াকে পার করেছে।

বনানীর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় শোক প্রকাশ করেন বক্তারা। আটকে পড়া মানুষের উদ্ধারে দোয়া প্রার্থনা করেন তাঁরা। উদ্ধারে ব্যর্থতার অভিযোগ করে সরকারের সমালোচনা করেন বক্তারা। তাঁরা বলেন, এ সরকারের হাতে মানুষের জীবনের নিরাপত্তা বিপন্ন। রাস্তায় মারা যাচ্ছে, আগুনে পুড়ে মারা যাচ্ছে, গুম-খুন হয়ে যাচ্ছে। জীবনের কোনো গ্যারান্টি নেই দেশে।

দেশে একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠার চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর মুখে বাকশালের প্রশংসা শুনে উদ্বেগে আছি। এ ব্যবস্থা তো দেশের জনগণ পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করেছিল। ভবিষ্যতে আর কোনো নির্বাচনে জেতার সম্ভাবনা না দেখে এখন আইনগতভাবে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছেন তাঁরা। এটা জনগণের জন্য ভয়ংকর সংবাদ এবং দেশের জন্য অশনিসংকেত।

জনগণকে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, দেশে ভোটাধিকার নেই, গণতন্ত্র নেই। এটা বিএনপি বা ঐক্যফ্রন্টের সংকট নয়, সমগ্র জাতির সংকট। মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। তবে সবার আগে খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনে নামার আহ্বান জানান তিনি।

জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির পরিবর্তে আওয়ামী কোম্পানির লুটপাট চলছে দেশে। দেশ এখন সংবিধানের অধীনে নয়, শেখ হাসিনার অধীনে। আন্দোলন পুঞ্জীভূত হয়ে যেদিন বিস্ফোরিত হবে, সেদিন আওয়ামী লীগ পালানোর জায়গা পাবে না। তবে সারা জাতি ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ না করলে ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে স্বৈরাচারের পতন ঘটানো সম্ভব নয়।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ভোটাররা আর কোনো দিন কেন্দ্রে যাবে না বলে মন্তব্য করেন কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী। তিনি বলেন, ৯১ সালে স্বাধীনতা দিবসে স্মৃতিসৌধে কমপক্ষে ১০ লাখের জমায়েত হয়েছিল আর এবারের উপস্থিতি পাঁচ হাজারের বেশি হবে না। এর চেয়ে দুর্ভাগ্যজনক আর কিছু হতে পারে না। গত ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন মানুষকে দেশ সম্পর্কে নিরুৎসাহী করে তুলেছে।

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, মানুষ যে ভোট দিতে যাচ্ছে না, তা এটাই প্রমাণ করে, মানুষ এ সরকারকে চায় না। ডাকসুর নির্বাচনে কুয়েত-মৈত্রী হলে যে অভ্যুত্থান হয়েছে, সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে এটা হবে। তাতেই এ সরকারের পতন ঘটবে।

আলোচনাসভায় আরও বক্তব্য দেন গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টু ও নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী, কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল সিদ্দিকী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তালুকদার।