Thank you for trying Sticky AMP!!

১৫ কেন্দ্রে জাল ভোট, বিএনপির দাবি ৪১

কাজী জালাউদ্দিন বহুমুখী উচ্চবালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে পোলিং এজেন্টদের বের করে দিয়ে ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কুমারপাড়া, সিলেট। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

সিলেট সিটি নির্বাচনে আজ সোমবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত অন্তত ১৫টি ভোটকেন্দ্রের এক বা একাধিক বুথ দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুথ দখল করে জাল ভোট দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

তবে বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীর প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী অভিযোগ করেছেন, ৪১টি কেন্দ্র থেকে তাঁদের এজেন্টদের বের করে দিয়ে জাল ভোট দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে অভিযোগ তাঁরা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে পাঠিয়েছেন।

আজ বেলা ১১টার দিকে নগরের রায়নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এর পরপরই সেখানে একদল যুবক ঢুকে একটি বুথ দখলের চেষ্টা করে। দখলের খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যান বিএনপির মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী। তিনি সেখানে গিয়ে বুথ দখলের বিষয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ করে বলেন, রামদা ও লাঠিসোঁটা নিয়ে কয়েকজন যুবক কেন্দ্র ঘিরে আছে। এরপর তিনি নিজেই সেখানে জড়ো হওয়া যুবকদের দিকে এগিয়ে যান। পরে এসব যুবক কেন্দ্র ছেড়ে চলে যায়।

নগরীর খাস দবির সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের একটি বুথে বেলা সোয়া ১১টায় একদল যুবক ঢুকে তিনটি ব্যালট পেপারে সিল মেরে বাক্স ভর্তি করে। কিছুক্ষণ পর এ কেন্দ্রের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। তিন যুবক কেন্দ্র থেকে চলে যায়।

নগরীর শাহজালাল জামিয়া আলিয়া মাদ্রাসায় পূর্ব, পশ্চিম ও দক্ষিণ—এই তিনটি কেন্দ্র। এগুলোর মধ্যে পূর্ব কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ২, পশ্চিমে ২ হাজার ৮০৩ এবং দক্ষিণে ১ হাজার ৯৮৬। বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে দুই কাউন্সিলর প্রার্থী মো. ইলিয়াস ও জগদীশ চন্দ্র একে অপরের বিরুদ্ধে জাল ভোটের অভিযোগ এনে কেন্দ্র হট্টগোল সৃষ্টি করেন। তাঁরা দুজনই আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা। তাঁদের সৃষ্ট এই হট্টগোলের সুযোগে একদল যুবক কেন্দ্রে ঢুকে ব্যালট পেপারে নৌকা মার্কায় সিল মারা শুরু করে। কিছুক্ষণ পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী লাঠিপেটা করে কেন্দ্র ফাঁকা করে দেয়। এরপর ওই যুবকেরা পর্যায়ক্রমে তিন কেন্দ্রের বিভিন্ন বুথে গিয়ে সিল মারতে থাকে। বেলা দেড়টা পর্যন্ত ওই যুবকেরা কেন্দ্রের ভেতরেই ছিল। বাইরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের বাধা দেয়নি।

প্রথম আলোর প্রতিবেদক জামিয়া আলিয়া মাদ্রাসার এই জাল ভোট দেওয়ার দৃশ্য দেখছিলেন। তাঁকে একপর্যায়ে সেখান থেকে চলে যেতে বলা হয়। তিনি চলে আসেন।

নগরের টিলাগড় এলাকায় ২০ নম্বর ওয়ার্ডে নবীনচন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে বেলা ১১টা থেকে ভোট নেওয়া বন্ধ হয়ে যায়। সেখানে ব্যালট পেপার শেষ হয়ে গেছে বলে জানানো হয়। ফয়সাল আহমেদ নামে এক ভোটার বেলা পৌনে একটার দিকে প্রথম আলোর কাছে অভিযোগ করেন, তিনি বেলা ১১টা থেকে ভোট দেওয়ার জন্য বুথের সামনে অপেক্ষা করছেন। কিন্তু ভোট দিতে পারছেন না। ওই কেন্দ্রের আটটি বুথে (পুরুষ) গিয়ে দেখা যায়, সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও পোলিং কর্মকর্তারা অলস বসে আছেন। তাঁদের কাছে কোনো ব্যালট পেপার নেই। এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ফিরোজ আল মামুন কোনো কথা না বলে নির্বাক তাকিয়ে থাকেন। এদিকে ২০ নম্বর ওয়ার্ডের এমসি কলেজ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে দুপুর ১২টার মধ্যেই ভোট নেওয়া শেষ।

নগরের আরও যেসব কেন্দ্রের বিভিন্ন বুথ দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে, এর মধ্যে আছে মডেল হাইস্কুল, শাহজালাল প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ সুরমার কদমতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আইডিয়াল হাইস্কুল, টুলটিপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, বর্ণমালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গ্রিনফেয়ার স্কুল, স্কলার হোমস স্কুল, নবীনচন্দ্র হাইস্কুল, হাতেম আলী হাইস্কুল, চান্দু শাহ স্কুল ও কাজী জালালউদ্দিন স্কুল কেন্দ্র।