Thank you for trying Sticky AMP!!

৯ বছর পর ঢাবি ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের মিছিল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আজ বৃহস্পতিবার মিছিল করে ছাত্রদল। ছবি: সাজিদ হোসেন

প্রায় নয় বছর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে মিছিল করল বিএনপির সহযোগী সংগঠন ছাত্রদল। আজ বৃহস্পতিবার সকালে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের (ভিসি) কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন। ভিসি বরাবর স্মারকলিপি দিয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে মিছিল বের করেন তাঁরা। মিছিলে কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা অংশ নেন।

২০১০ সালে জানুয়ারি মাসে ছাত্রদল সর্বশেষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মিছিল ও সমাবেশ করে। ওই বছরের ১৮ জানুয়ারি ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল বের করলে ছাত্রলীগের হামলার মুখে পড়ে। এতে সে সময়ের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুসহ ছাত্রদলের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী আহত হন। এরপর আর ছাত্রদলকে ক্যাম্পাসে মিছিল করতে দেখা যায়নি। তবে এর পরের বছর ওই হামলার এক বছর পূর্তিতে হামলাকারীদের বিচারের দাবিতে ছাত্রদল শাহবাগ থেকে থেকে মিছিল বের করে ক্যাম্পাসে ঢোকার চেষ্টা করে। তবে পুলিশি বাধার কারণে ছাত্রদলের সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়।

আজ বেলা ১১টার দিকে ভিসির কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। সেখান থেকে ভিসি বরাবর একটি স্মারকলিপি দেন। এতে ডাকসু নির্বাচন তিন মাস পেছানোর দাবিসহ ক্যাম্পাসে সহাবস্থানের পরিবেশ তৈরির দাবি জানানো হয়। কার্যালয় থেকে বেরিয়ে ছাত্রদল মিছিল নিয়ে ভিসির বাসভবনের সামনে দিয়ে টিএসসি হয়ে শাহবাগের দিকে চলে যায়।

আগামী ১১ মার্চ ডাকসু নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আল মেহেদী তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে এ মুহূর্তে নির্বাচনের পরিবেশ নেই৷ পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য সময় দরকার। বর্তমান পরিবেশে নাটক মঞ্চস্থ হতে পারে, নির্বাচন নয়। তাই আমরা নির্বাচন পেছানোর দাবি জানিয়েছি। তবে উপাচার্যের বক্তব্যে আমরা আশাহত হয়েছি। অন্য যেসব দাবি আমরা জানিয়েছি, সেগুলোর ক্ষেত্রেও উপাচার্য আমাদের আশ্বস্ত করেননি।’

প্রায় নয় বছর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মিছিল করলে ছাত্রদল। ছবি: সাজিদ হোসেন

বেলা ১১টার দিকে উপাচার্যকে স্মারকলিপি দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে উপাচার্য কার্যালয়ে যান ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিব আহসান, সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আল মেহেদী তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক আবুল বাসার সিদ্দিকীসহ সংগঠনের কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা। বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনা করেন ছাত্রদলের শীর্ষ নেতারা। উপাচার্যের কাছে ক্যাম্পাসে সব ছাত্রসংগঠনের সহাবস্থান, ডাকসু নির্বাচনের ভোটকেন্দ্র হলের বাইরে করা, নির্বাচনে প্রার্থিতার ক্ষেত্রে সিন্ডিকেট নির্ধারিত বয়সসীমা (৩০ বছর) বাতিলসহ সাত দফা দাবি জানান তাঁরা৷

স্মারকলিপিতে ছাত্রদলের সাত দফা দাবির মধ্যে আরও আছে—ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গঠিত নির্বাচন পরিচালনা ও উপদেষ্টা কমিটিগুলো পুনর্গঠন করে এগুলোতে নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি, ডাকসুর সভাপতি হিসেবে উপাচার্যের ক্ষমতায় ভারসাম্য এনে যেকোনো সিদ্ধান্ত সভাপতি ও ছাত্র সংসদের যৌথ সিদ্ধান্তে নেওয়া এবং সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রসংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীদের নিরাপত্তা, আগের হামলা ও নির্যাতনগুলোর বিচার ইত্যাদি।

‘উপাচার্যের পরামর্শে মধুর ক্যানটিনে যায়নি ছাত্রদল’
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের কয়েকজন নেতা বলেন, আজ স্মারকলিপি দেওয়া শেষে তাঁদের মধুর ক্যানটিনে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। তবে মধুর ক্যানটিনে তাঁরা যাননি। জানতে চাইলে ছাত্রদলের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক আবুল বাসার সিদ্দিকী প্রথম আলোকে বলেন, ‘মধুর ক্যানটিনে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে উপাচার্য স্যারের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। যেহেতু আমরা অনেক দিন ধরে ক্যাম্পাসে নেই, তাই স্যার আমাদের এসব প্রক্রিয়া একটু স্লো (ধীরে) করার পরামর্শ দিয়েছেন।’