Thank you for trying Sticky AMP!!

বিএনপি সোহরাওয়ার্দীতে সমাবেশ করতে না চাওয়ার কারণ বুকের জ্বালা: শাজাহান খান

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢাকা জেলা ও মহানগর ইউনিট কমান্ডের উদ্যোগে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ’ শীর্ষক এক কর্মসূচিতে ভাষণ দেন শাজাহান খান

১০ ডিসেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠেয় বিএনপির মহাসমাবেশকে ‘নাটক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান। তিনি বলেন, ‘বিএনপিকে বলা হয়েছে, ১০ ডিসেম্বর আপনারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করুন। কিন্তু তাঁরা করবেন নয়াপল্টনে। এখানে আসতে তাঁদের বুকে জ্বালা আছে।’

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢাকা জেলা ও মহানগর ইউনিট কমান্ডের উদ্যোগে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ’ শীর্ষক এক কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে শাজাহান খান এসব কথা বলেন। এই সমাবেশ থেকে ১ ডিসেম্বরকে মুক্তিযোদ্ধা দিবস ঘোষণা এবং দ্রুত বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নির্বাচন দাবি করা হয়।

বিএনপি অসংখ্য মানুষকে পুড়িয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করেছে অভিযোগ করে শাজাহান খান বলেন, ‘সেই হত্যাকাণ্ড করেই তাঁরা ক্ষান্ত হননি, এখন আবার শুরু করেছেন আরেক নাটক। এখন তাঁরা সমাবেশ করছেন। তাঁদের বলা হয়েছে, ১০ ডিসেম্বর আপনারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করুন। কিন্তু তাঁরা করবেন নয়পাল্টনে।

এখানে আসতে তাঁদের বুকে জ্বালা আছে। কারণ, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পাকিস্তানিরা আত্মসমর্পণ করেছিল, এখানেই বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছিলেন। সুতরাং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এলে তাঁদের বুকে জ্বালা শুরু হয়। সে জন্য তাঁরা এখানে সভা করতে চান না। আমরা বলতে চাই, সভা করবেন ভালো, বিরোধী দল হিসেবে কথা বলবেন ভালো, তবে আপনাদের বুকের জ্বালাটা আমরা বুঝি।’

বিএনপি ১০ ডিসেম্বর কেন সমাবেশের জন্য বেছে নিল, সেই প্রশ্নও তোলেন শাজাহান খান৷ বলেন, ১০-১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছিল পাকিস্তানি হানাদার ও আলবদর বাহিনী। এ সময়টাতে যখন বাংলাদেশের মানুষ বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডকে স্মরণ করেন, সেই স্মরণীয় দিনকে তারা বেছে নিয়েছে আনন্দ পাওয়ার জন্য। মির্জা ফখরুল বলেছেন, আরেকটি মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে সরকারের পতন ঘটাবেন। রাজাকারদের সঙ্গে নিয়ে যারা মুক্তিযুদ্ধ করতে চায়, তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শাজাহান খান বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যার মূল নায়ক—এ কথা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার যখন দেশ উন্নয়নের মাধ্যমে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, তখন তা নস্যাৎ করার জন্য স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। অচিরে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নির্বাচন হবে বলে আশা করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘১ ডিসেম্বরকে মুক্তিযোদ্ধা দিবস করার পক্ষে আমি বারবার বলেছি। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে এটি করতে আমরা বিনয়ের সঙ্গে অনুরোধ করব।’

অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। তিনি বলেন, ‘এই বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধাদের দেশ। বাংলাদেশ একটা অসাম্প্রদায়িক দেশ। আমরা হয়তো একে একে চলে যাব। ইতিমধ্যে অনেককে হারিয়েছি, আগামী ১০ বছরের মধ্যে আরও অনেকে হয়তো চলে যাব। কিন্তু আমরা একত্র থাকার চেষ্টা করব। আমরা যে ইতিহাস গড়ে দিয়েছিলাম, সেটি যেন আর কেউ বিকৃত করতে না পারে। এই সমাবেশ থেকে আমরা শপথ নেব, আমরা সবাই যেন মিলেমিশে একসঙ্গে থাকতে পারি। যত দিন বেঁচে থাকব, তত দিন আমরা মুক্তিযোদ্ধারা একসঙ্গে থাকব।’

মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ঢাকা জেলা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসেন মোল্লার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা বেনজীর আহমেদ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) হেলাল মোর্শেদ খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব উদ্দিন আহমেদ (এসপি মাহবুব), সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী প্রমুখ বক্তব্য দেন।