Thank you for trying Sticky AMP!!

দুই বছর পর এক হতে যাচ্ছে ছাত্র ইউনিয়নের দুই পক্ষ, ঐক্যবদ্ধ সম্মেলন ১৬-১৮ মার্চ

জাতীয় সম্মেলনের প্রক্রিয়া নিয়ে মতপার্থক্য ও নেতৃত্ব নিয়ে বিরোধের জেরে দুই বছর ধরে বিভক্ত বাম ধারার ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন। নিজেদের মধ্যে কয়েক দফা আলোচনার পর সংগঠনটির দুই পক্ষ এখন এক হতে যাচ্ছে। সে লক্ষ্যে আগামী ১৬-১৮ মার্চ সংগঠনটির 'ঐক্যবদ্ধ ৪১তম জাতীয় সম্মেলন’ আহ্বান করা হয়েছে। এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে সংগঠনটির দুই অংশের বিরোধের অবসান ঘটবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গত দুই বছরে ছাত্র ইউনিয়নের দুই অংশ একই নামে আলাদাভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে। একটি কমিটির বিপরীতে পরে আরেকটি কেন্দ্রীয় কমিটিও গঠিত হয়। প্রথম কমিটির নেতৃত্বে আছেন ফয়েজ উল্লাহ ও দীপক শীল। অন্য কমিটির নেতৃত্বে নজির আমিন চৌধুরী ও রাগীব নাঈম। সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখায়ও দুই কেন্দ্রীয় কমিটির অনুসারীরা দুটি পৃথক কমিটি গঠন করেন। এক পক্ষ কোনো কর্মসূচিতে অংশ নিলে অন্য পক্ষ তা সচেতনভাবে এড়িয়ে যেত। ঘটেছে পাল্টাপাল্টি বহিষ্কার ও  অব্যাহতির ঘটনাও৷

বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর মধ্যে ছাত্র ইউনিয়নের নেতা–কর্মীর সংখ্যা তুলনামূলক বেশি। সংগঠনটিতে বিভক্তির ফলে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলোর জোটেও দ্বিধাবিভক্তি তৈরি হয়। মূলত ছাত্র ইউনিয়নের বিভক্তির কারণেই গত বছরের ১ ডিসেম্বর পুরোনো মোর্চা ‘প্রগতিশীল ছাত্র জোট’ ভেঙে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট নামে নতুন একটি জোট গঠিত হয়। এই জোটে আছে ছাত্র ইউনিয়নের বিদ্রোহীরা। তাঁরাসহ বামপন্থী আটটি ছাত্রসংগঠন এই জোটের অংশীদার৷ পূর্ববর্তী প্রগতিশীল ছাত্রজোটের প্রায় সব সংগঠন এতে যোগ দেয়। তবে ছাত্র ইউনিয়নের ফয়েজ-দীপক অংশ এতে যোগ দেয়নি।

নতুন জোট গঠিত হওয়ার পর প্রগতিশীল ছাত্র জোট কার্যত নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে। এখন গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের ব্যানারেই বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলো যৌথভাবে কর্মসূচি পালন করে। এই জোটের অংশীদার না হওয়ায় ছাত্র ইউনিয়নের একাংশ জোট রাজনীতিতে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে৷ একাধিক বামপন্থী ছাত্রসংগঠনের শীর্ষ নেতারা প্রথম আলোকে বলেন, ছাত্র ইউনিয়নের বিভক্তির কারণে গত দুই বছরে বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর আন্দোলন অনেকটা শ্লথ হয়ে পড়ে। তাই বিভক্তির পর থেকেই সবাই সংগঠনটির বিবদমান দুই পক্ষের ঐক্য চেয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে গত বছরের শেষ দিকে নিজেদের বিভেদ ঘোচানোর কার্যকর উদ্যোগ নেয় ছাত্র ইউনিয়নের দুই অংশ। কয়েক দফায় আলোচনা ও বৈঠক করে তারা। এরই ফলাফল হিসেবে বিভেদ ও মতপার্থক্য ঘুচিয়ে দুই বছর পর তারা এক হতে যাচ্ছে৷

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও শিক্ষাবিদ সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম ১৬ মার্চ বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ঐক্যবদ্ধ ছাত্র ইউনিয়নের সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন। সংগঠনটির একাংশের সভাপতি ফয়েজ উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঐক্যবদ্ধ সম্মেলনের ব্যাপারে আমরা সবাই খুব আন্তরিক। এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে সব বিভেদের অবসান হবে। সম্মেলনের কাউন্সিল অধিবেশনে কাউন্সিলরদের আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে আমরা আগামী দিনের আন্দোলন-সংগ্রামের দিকনির্দেশনা ঠিক করব।’ উদ্বোধনের পর ১৭ ও ১৮ মার্চ ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ছাত্র ইউনিয়নের কাউন্সিল অধিবেশন হবে বলে জানান তিনি।

সংগঠনটির আরেক অংশের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নজির আমিন চৌধুরী বলেন, ‘আমরা আশা করছি, ঐক্যবদ্ধ সম্মেলনের মাধ্যমে ছাত্র ইউনিয়নের নেতা-কর্মীরা সব বিভেদ ও সংশয় পাশ কাটিয়ে ইতিহাস-অর্পিত দায়িত্ব হিসেবে শিক্ষার অধিকার, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও সমাজ প্রগতির লড়াইকে বরাবরেরই মতোই এগিয়ে নেবে।’