Thank you for trying Sticky AMP!!

অবিলম্বে ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন চায় ঢাবি ছাত্রদল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)

দীর্ঘ ২৮ বছর বন্ধ থাকার পর ২০১৯ সালের মার্চে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদের নির্বাচন হয়েছিল। ২০২০ সালে ডাকসু ও হল সংসদের সেই কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও এরপর আর নির্বাচনের কোনো উদ্যোগ নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর কারণে আবারও স্থবিরতা নেমে এসেছে ডাকসুতে। ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে যে আংশিক সহাবস্থানের পরিবেশ তৈরি হয়েছিল, তাও ইতিমধ্যে মুখ থুবড়ে পড়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে গতকাল শনিবার ডাকসু ও হল সংসদের সর্বশেষ নির্বাচনের চার বছর পূর্তির দিনে অবিলম্বে নতুন নির্বাচন দাবি করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল। তাদের দাবি, সেই নির্বাচন হতে হবে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর প্রায় ৯ বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত ছিল ছাত্রদল। ২৮ বছর পর ২০১৯ সালে ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তাদের ক্যাম্পাসে ঢোকার ‘সুযোগ’ দেয় ছাত্রলীগ। এর পর থেকে আবাসিক হলে থাকার সুযোগ না পেলেও ছাত্রদল ক্যাম্পাসে নির্বিঘ্নে আসা-যাওয়া ও দলীয় কর্মসূচি পালন করতে পারছিল। এর মধ্যে কয়েকবার হামলা করলেও ছাত্রলীগ তাদের বিতাড়িত করেনি।

Also Read: কারা ডাকসু নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন?

গত বছরের ২২ মে দুই দফায় ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের পিটিয়ে রক্তাক্ত করে ছাত্রলীগ। এর পর থেকে ছাত্রদল ক্যাম্পাস থেকে কার্যত বিতাড়িত। ক্যাম্পাসে ঢুকতে গিয়ে সেপ্টেম্বরে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা ছাত্রলীগের হামলার শিকার হন।

ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের চার বছর পূর্তিতে গতকাল রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল গণমাধ্যমে একটি বিবৃতি পাঠিয়েছে। সংগঠনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার দপ্তর সম্পাদক মাহমুদুল হাসান বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন। এতে বলা হয়, প্রাপ্তির তুলনায় অপ্রাপ্তির ভাগ বেশি থাকলেও ডাকসু সাধারণ শিক্ষার্থীদের আশাবাদী করে তুলেছিল।

তিন বছর ধরে ডাকসুকে আবার মৃত করে দেওয়ায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলও হতাশ ও ক্ষুব্ধ। রাষ্ট্রকাঠামোকে যেভাবে একটি পেশিশক্তি দখল করে আছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তারই এক্সটেনশন (বর্ধিত রূপ) মাত্র। ছাত্রদল সব সময় ডাকসু নির্বাচনের পক্ষে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভোটের মাধ্যমে ডাকসুতে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা তাঁদের জন্য কাজ করতে পারেন। তাঁরা শিক্ষার্থীদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নীতিনির্ধারকদের সামনে তুলে ধরতে পারেন।

এতে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসের অভয়ারণ্যে পরিণত হওয়া ক্যাম্পাসগুলোয় সাধারণ শিক্ষার্থীরা সুষ্ঠু পরিবেশে নির্বিঘ্নে পড়াশোনার সুযোগ পেতে পারেন। ডাকসু ও হল সংসদ দেশের গণতন্ত্রসহ সামগ্রিক উন্নয়নের একটি বড় প্ল্যাটফর্ম। ছাত্রদল অবিলম্বে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ডাকসু নির্বাচনের জোর দাবি জানাচ্ছে।

Also Read: ডাকসু নির্বাচনের চার বছর আজ, পরবর্তী নির্বাচন কবে

ছাত্রদলের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলসহ অপরাপর প্রগতিশীল ছাত্রসংগঠনগুলোর কারও কোনো ধরনের রাজনৈতিক সহাবস্থান নেই। ছাত্রদল সাধারণ শিক্ষার্থীদের বড় একটি অংশের প্রতিনিধিত্ব করে। আমরা মনে করি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দায়িত্ব নিয়ে ছাত্রসংগঠনগুলোর রাজনৈতিক সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ পরিষদের সভা আহ্বান করতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আন্তরিকভাবে চাইলেই সব ছাত্রসংগঠনের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ডাকসু নির্বাচন করা সম্ভব। তবে এ ব্যাপারে প্রশাসনের যথেষ্ট সদিচ্ছা ও আন্তরিকতার অভাব রয়েছে।’

২০১৮ সালের ‘নিশিরাতের ভোটচুরির’ জাতীয় নির্বাচন থেকে সাধারণ মানুষ ও রাজনৈতিক দলগুলোর দৃষ্টি অন্যদিকে ঘোরানোর জন্য ২০১৯ সালে ডাকসু নির্বাচন দেওয়া হয়েছিল বলে মনে করে ছাত্রদল। ২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনকে ‘ভোট ডাকাতি ও ভোট কারচুপির নির্বাচন’ উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ‘গ্রিন সিগন্যাল’ (সবুজ সংকেত) না পাওয়া পর্যন্ত ডাকসু নির্বাচনের কোনো উদ্যোগ নেবে না বলে মনে করে ছাত্রদল।

বিবৃতিতে ছাত্রদলের নেতারা বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন ডাকসুকে পুনরুজ্জীবিত করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি না। কারণ, এ প্রশাসন সরাসরি সরকারের লেজুড়বৃত্তিক প্রশাসন। একজন সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রনেতা হিসেবে এটি আমাদের ক্ষুব্ধ করে। আমরা সব সময়ই সাধারণ শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবিগুলো নিয়ে কাজ করি।

আমরা অবশ্যই অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ডাকসু চাই। দুঃখজনক হলেও এটাই সত্য যে বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকারের শাসনামলে গণভবন থেকে যে সিদ্ধান্ত আসবে, তার বাইরে গিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অক্ষম।’