Thank you for trying Sticky AMP!!

নির্বাচন কমিশনের বক্তব্যে অনেক প্রশ্ন, সন্দেহ 

ভোট নিয়ে ইসি থেকে যে বার্তা পাওয়া যাচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে তারা অস্বস্তিতে রয়েছে। তারা কি দায়িত্ব এড়াতে চাইছে—এমন প্রশ্নও উঠছে।

এম সাখাওয়াত হোসেন

নির্বাচন সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য না হলে বিশ্ব থেকে বাংলাদেশ বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে—নির্বাচন কমিশনের (ইসি) এ ধরনের বক্তব্যের উদ্দেশ্য নিয়ে অনেক প্রশ্ন ও সন্দেহ দেখা দিয়েছে।

কারণ, নির্বাচন গ্রহণযোগ্য করার দায়িত্ব যাঁদের (ইসি) ওপর, তাঁরাই এসব কথা বলছেন। সে কারণে প্রশ্ন উঠছে, তাঁরা কি দায়িত্ব এড়ানোর জন্য আগেভাগেই এমন বক্তব্য দিয়ে রাখছেন, নাকি তাঁরা তাঁদের দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না?

কয়েক দিন ধরেই নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান বলছেন যে নির্বাচন সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য না হলে বিশ্ব থেকে বাংলাদেশ বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে এবং রাষ্ট্র নিজেই ব্যর্থ হয়ে যাবে। যদিও একজন নির্বাচন কমিশনার এ বক্তব্য দিচ্ছেন। কিন্তু এটিকে নির্বাচনের বক্তব্য হিসেবেই ধরে নিতে হবে। 

কিছুদিন আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল নিজেই বলেছেন, তাঁদের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ রয়েছে। নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বে থেকে তাঁরা এসব বক্তব্য কেন বলছেন? এসব কথা বলা তাঁদের কাজ নয়। ইসির দায়িত্ব অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করা, সেটা তাঁরা করবেন। 

কিন্তু দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে মানুষ যা বোঝার, তা বুঝে গেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও বুঝে গেছে যে কোন ধরনের নির্বাচন হচ্ছে। বিরোধী দলগুলো নির্বাচনে নেই। এখন তো দেখা যাচ্ছে, নৌকা আর আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে ভোট হচ্ছে। জাতীয় পার্টিরও অনেক প্রার্থী ভোট থেকে সরে যাচ্ছেন। এর বাইরে যেসব দল ভোটে আছে, মানুষ সেগুলোর নামই জানেন না।

এখন যে নির্বাচন হচ্ছে, তাতে তো অশান্তি হওয়ার কিছু দেখি না। এই নির্বাচন তো এক পার্টির নির্বাচন।

এরপরও নির্বাচন কমিশন থেকে নানা রকম বক্তব্য দেওয়া হচ্ছে। তারা কি এমন কোনো চাপে রয়েছে যে তারা দায়িত্ব পালন করতে পারছে না। নির্বাচন কমিশনারের বক্তব্যে আসলে দায়িত্ব এড়ানোর ইঙ্গিত রয়েছে।

আমার মনে হচ্ছে, নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করার দায়দায়িত্ব নিতে চাইছে না। এখানে প্রশ্ন জাগছে যে তারা কি জনগণের ওপর দায়িত্ব চাপাতে চাইছে, নাকি তারা সরকারের ওপর দায়িত্ব দিতে চাইছে? 

শুধু আনিছুর রহমান নন, আরেকজন নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানাও নানা রকম বক্তব্য দিচ্ছেন। এমনকি প্রধান নির্বাচন কমিশনারও একেক সময় একেক বক্তব্য দিচ্ছেন।

এ নির্বাচন নিয়ে ইসি থেকে যে বার্তা পাওয়া যাচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে তারা নিজেরাও অস্বস্তিতে রয়েছে। মনে হচ্ছে, নির্বাচন কমিশন জানে না যে নির্বাচনের পর রাজনৈতিক পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে এবং আন্তর্জাতিক মহল কীভাবে নেবে। 

নির্বাচন কমিশন একটি ইনস্টিটিউশন। আন্তর্জাতিক মহলে এ নির্বাচন যদি গ্রহণযোগ্যতা না পায়, তখন নির্বাচন কমিশনের ওপর কোনো খড়্গহস্ত নেমে আসে কি না—এ ধরনের চিন্তাও কাজ করতে পারে তাদের মধ্যে।

যদিও নির্বাচন কমিশনের সংবিধানের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সংবিধান অনুযায়ী তাদের নির্বাচন করতে হবে। কিন্তু বর্তমান কমিশনের বয়স দুই বছরের বেশি হবে। এই সময়েও তারা আস্থা তৈরি করতে পারেনি। সব মিলিয়ে এখন নির্বাচন কমিশনে একধরনের টানাপোড়েন ও অস্বস্তি আছে বলে মনে হয়।