Thank you for trying Sticky AMP!!

অবিসংবাদিত নেতা

মার্চ ১৯৭১ সালে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার চেষ্টা করছিলাম এবং কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত ছিলাম না। তবে প্রবাদে আছে যে সচেতন ব্যক্তিমাত্র আ পলিটিক্যাল বিয়িং। সে সময় মাওলানা ভাসানীর আন্দোলনে সাম্যবাদের বার্তা আমাকে প্রভাবিত করলেও স্বাধিকার আন্দোলনের যে সূত্রপাত হয়েছিল, তা আমি সমর্থন করতাম।

৭ মার্চের মিটিংয়ের বিশেষ বর্ণনা দেব না। লক্ষাধিক লোকের সমাগম হয়েছিল, মাথায় লাল ফিতা বাঁধা ও হাতে লাঙল নিয়ে কৃষকেরাও সমবেত হয়েছিলেন। বন্ধুবান্ধবের সঙ্গেই উপস্থিত ছিলাম। সবাই-ই আশা করছিলাম যে সেদিন স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়া হবে। আসলে আমাদের এ ধারণা ছিল আবেগপূর্ণ এবং বিতর্কিত।

নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর আওয়ামী লীগ সংসদের অধিবেশন এবং মন্ত্রিসভা গঠনের লক্ষ্যে কাজ করছিল। এটিই সঠিক গণতান্ত্রিক পদ্ধতি। শেখ মুজিব তাঁর বক্তব্যে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে বলেছিলেন যে ‘এরপর যদি একটা গুলি চলে, এরপর যদি আমার লোককে হত্যা করা হয়...।’

তিনি ‘আমার’ কথাটি ব্যবহার করেছিলেন কেন? ‘আমার’ বলতে তো পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতাকামী সব লোককে বোঝায়। বোঝায় ভাসানী-সমর্থকদের, বামপন্থীদের, আমলা, ব্যবসায়ীদের এবং সবাইকে। তাঁর আমার শব্দের ব্যবহারে কেউ প্রতিবাদ করেনি। এই শব্দ ব্যবহারের অধিকার তাঁর ওপরে কেউ ন্যস্ত করেনি। স্বাধিকার আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে গিয়ে তিনি সবার অজ্ঞাতে এই অধিকার অর্জন করেছিলেন এবং অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিলেন।

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ: ­­­­­­­একজন সেক্টর কমান্ডারের স্মৃতিকথা থেকে, অবসর প্রকাশনা সংস্থা, ২০০৯

কাজী নূর-উজ্জামান: মুক্তিযুদ্ধে ৭ নম্বর সেক্টরের েসক্টর কমান্ডার