Thank you for trying Sticky AMP!!

ছিমছাম-পরিপাটি অন্দরসাজ

একটু মাথা খাটালে কম খরচেই সাজানো যায় ঘরের অন্দর। নান্দনিক সাজে রাখতে পারেন সবুজের ছোঁয়াও l ছবি: প্রথম আলো

নিজের ফ্ল্যাট তো হলো, এবার অন্দরসাজ। কেমন হবে সেই সাজসজ্জা? এ নিয়ে ভাবনায় পড়েন কমবেশি সবাই। চিন্তা থাকে ফ্ল্যাটের আকার নিয়ে। তবে ডিজাইনারদের মতে, ফ্ল্যাটের আকার যা-ই হোক না কেন, পরিকল্পনা করে এগোলে মনের মতো করে সাজানো সম্ভব।

এ জন্য ফ্ল্যাটের পুরোটা অথবা একটি অংশ সাজানোর জন্য ছেড়ে দিতে পারেন পেশাদার ইন্টেরিয়র ডিজাইনারের হাতে। গ্রাহকের পছন্দ, চাহিদা আর বাজেটের ওপর নির্ভর করে তাঁরাই বাতলে দেবেন পথ। তা ছাড়া হাতের কাছে অন্তর্জালের (ইন্টারনেট) দুনিয়া তো রয়েছেই। নিজেও পছন্দমতো অন্দরসাজ করাতে পারেন।

পেশাদার ইন্টেরিয়র ডিজাইনাররা মনে করেন, বাড়ির ভেতরের সাজটি হওয়া উচিত কমনীয় ও স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ। প্রতিদিনকার কাজের ক্লান্তি, যানজট, গাড়ির শব্দ, ধুলাবালু পেরিয়ে যখন কেউ ঘরে ঢুকবেন, তখন যেন তাঁর মনটা প্রশান্তিতে ভরে ওঠে। স্থপতি ও ইন্টেরিয়র ডিজাইনার আদর ইউসুফ বলেন, প্রকৃতির আবহ মনে প্রশান্তি আনে। ইট-পাথরের শহরে চাইলেই সহজে সবুজের দেখা মেলে না। কিন্তু ঘরের ভেতরের সাজে প্রকৃতির আবহ আনা সম্ভব। গ্রাহকের রুচির ওপর নির্ভর করবে তাঁর বাড়ির সাজ দেশজ না ইউরোসেন্ট্রিক হবে।

বাড়ির দেয়ালের রং, মেঝে, লাইটিং, আসবাবপত্র, রান্নাঘর ও বাথরুমের সরঞ্জাম‍—সবই অন্দরসাজের অংশ। আসবাবের ক্ষেত্রে নকশা বিশেষজ্ঞদের সবার পরামর্শ হালকা (স্লিম) আসবাবপত্র কেনার। ইন্টেরিয়র ডিজাইনার সিজ্জিল মমতাজ মনে করেন, গৃহসজ্জাটা এমন হওয়া উচিত, সেটি যেন অতি সজ্জিত মনে না হয়। তিনি বলেন, একটি ফ্ল্যাটের মধ্যে প্রতিটি ঘরই বিশেষ বৈশিষ্ট্যপূর্ণ। যেমন বসার ঘর হওয়া চাই একটু খোলামেলা, আলো–ঝলমলে। এই ঘরে আসবাবের বাহুল্য না রেখে হালকা আসবাব দিয়ে ছিমছাম করে সাজানোই ভালো। বসার ঘরে একটি কর্নার বিভিন্ন ধরনের লাইটিং, ওয়াল পেপার, কৃত্রিম ফুল, ডেকোরেশন পিস দিয়ে সাজানো যায়। সোফার আর কুশনের কভার কেনার ক্ষেত্রে যত্নবান হতে হবে।

ডাইনিং রুম বা খাবার ঘরের টেবিল কেনার সময় কক্ষের আকারের দৈর্ঘ্য-প্রস্থের সঙ্গে মিল রেখে কেনার পরামর্শ দেন সিজ্জিল। রুমের আকৃতি গোল হলে টেবিলের আকারও গোল হওয়া উচিত। খাবার ঘরটিতে যেন পর্যাপ্ত আলো–বাতাস থাকে। খাবার ঘরে বাতির ক্ষেত্রে লেড লাইট ব্যবহার করা যায়। আসবাবের ক্ষেত্রে ডিনার ওয়াগন রাখা যায়।

কিচেন বা রান্নাঘরের সজ্জাও কিন্তু কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। রান্নাঘরের আকৃতি বড় হোক- এটি প্রায় সব গৃহকর্ত্রীর আকাঙ্ক্ষা। তবে পরিকল্পিত হলে ছোট রান্নাঘরেও স্বাচ্ছন্দ্যে সব কাজ করা সম্ভব। রান্নাঘর সম্পর্কে সিজ্জিলের পরামর্শ, চুলা ও সিঙ্ক বসাতে হবে সঠিক উচ্চতায়। যাতে রান্নাঘরে কাজ করার সময় ঝুঁকে কাজ করতে না হয়। পুরো রান্নাঘরে প্রয়োজন অনুযায়ী ওয়াল কেবিনেট করে নিতে হবে। সম্ভব হলে দক্ষিণমুখী ঘরটাকেই শোয়ার ঘর হিসেবে বেছে নিতে হবে। খাট নির্বাচনের ক্ষেত্রে অ্যানটিক বা আধুনিক স্লিম ফিট দুটোই চলে। তবে অবশ্যই ঘরের আকারের সঙ্গে মিল রেখে খাট নির্বাচন করতে হবে। বিছানার সামনের কিংবা পেছনের দেয়ালে ওয়ালপেপার, ইল্যুশন ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি শোয়ার ঘরে বৈচিত্র্য আনবে। পর্দার রঙের ক্ষেত্রে সতর্কতা চাই। কাপড় রাখার জন্য ওয়াল কেবিনেট ও ক্লোসেট তৈরি করে নেওয়া যায়। আর বাথরুমের ক্ষেত্রে টাইলস বেছে নিতে হবে গাঢ় রঙের। সব সময় শুকনো ও পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে বাথরুমকে।

অন্দরসাজে কেমন বাজেট চাই, এ নিয়ে অনেকের মনেই প্রশ্ন থাকে। তবে স্থপতি ও ইন্টেরিয়র ডিজাইনার আদর ইউসুফ বলেন, এক কথায় বলা মুশকিল অন্দরসাজের বাজেট কত হবে। বরং একজন গ্রাহক কত বাজেটের মধ্যে ঘর সাজাতে পারবেন, সেটি তাঁকেই ঠিক করতে হবে। বাজেট ঠিক হলে সে অনুযায়ী আধুনিক ও পরিকল্পিত গৃহসজ্জা করতে হবে।